দুর্ভোগ: ট্রেন দেরি করায় এনজেপি, নিউ কোচবিহার সহ বিভিন্ন স্টেশনে বহুক্ষণ অপেক্ষা করতে হয় যাত্রীদের। ছবি: নারায়ণ দে
বুধবার রাতে পদাতিক এক্সপ্রেসে কলকাতা যাওয়ার কথা ছিল মালদহের মকদমপুরের বাসিন্দা উজ্জ্বল সরকারের। তিনি হৃদরোগে ভুগছেন। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় কলকাতার একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার কথা তাঁর। সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী কাকলি সরকারও। রাত ১২টা ৪০-এ মালদহ টাউন স্টেশন থেকে শিয়ালদহের উদ্দেশ্যে ছাড়ার কথা চ্রেনটির। রাতের খাওয়া সেরে স্ত্রীকে নিয়ে রাত সাড়ে ১১টার মধ্যেই স্টেশনে পৌঁছে যান উজ্জ্বলবাবু। সারারাত অপেক্ষা করেও পদাতিক এক্সপ্রেস মালদহ স্টেশনে ঢোকেনি। সারারাত প্ল্যাটফর্মের বসেই কাটিয়ে দেন সেই দম্পতি।
বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা ২০-তে সেই ট্রেন ঢোকে। এ দিন কলকাতায় বিকেলে পৌঁছন তাঁরা। সেখান থেকেই ফোনে জানালেন, এ দিন আর ডাক্তার দেখাতে পারেননি তিনি। ফের অ্যাপয়েন্টমেন্ট পেতে বিকেলেই সেই নার্সিংহোমে গিয়ে তদ্বির করছেন তিনি। বুধবার সন্ধেয় মালদহ জেলারই সামসি ও মালাহার স্টেশনের মাঝে একটি ট্রেন বিকল হয়ে পড়ায় এমনই দুর্ভোগে পড়তে হল ওই দম্পতিকে।
বুধবার সন্ধে ৭টা নাগাদ শিলিগুড়ি থেকে আসা মালদহ কোর্ট স্টেশনমুখী একটি ডেমু প্যাসেঞ্জার ট্রেন সামসি ও মালাহার স্টেশনের মাঝে কাণ্ডারণ এলাকায় বিকল হয়। রেল সূত্রের খবর, ট্রেনের চাকায় সমস্যার জেরেই ওই বিপত্তি। এর জেরে ওই ডাউন লাইনে ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। রাতে আপ ও ডাউনে প্রচুর ট্রেন ছিল। কিন্তু ডাউন লাইনে ট্রেন বিকল হয়ে পড়ায় শুধু আপ লাইন দিয়েই সমস্ত ট্রেনকে পাস করানো হয়। এর জেরে মালদহ জেলার বিভিন্ন স্টেশন তো বটেই, বিহারেরও একাধিক স্টেশনে বিভিন্ন ট্রেনকে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। এর ফলে সমস্ত ট্রেনই নির্ধারিত সময়ের চেয়ে অনেক দেরিতে চলেছে।
এদিকে, খবর পেয়ে মালদহ থেকে রেলের ইঞ্জিনিয়াররা ঘটনাস্থলে গেলেও রাতে সেই ইঞ্জিন মেরামত করা সম্ভব হয়নি। এ দিন সকাল ৭টা ১০ নাগাদ কোনও রকমে ট্রেনটিকে সামসি স্টেশনে এনে দাঁড় করানো হয়। তারপর সকাল ৯টা নাগাদ ওই ডাউন লাইনে ট্রেন চলাচল স্বভাবিক হয়।
রেলের মালদহ স্টেশনের ম্যানেজার দিলীপ চৌহান বলেন, ‘‘কিছু ট্রেন দেরিতে চলেছে।’’ উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের কাটিহার ডিভিশনের ডিআরএম চন্দ্রপ্রকাশ গুপ্ত বলেন, ‘‘ট্রেন দেরিতে চলায় যাত্রীদের সমস্যা হয়েছে।’’