ইঞ্জেকশনের পরেই মৃত্যু, ক্ষুব্ধ পরিজন

বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ ধূপগুড়ি হাসপাতালে ভর্তি হয় রেশমি। চিকিৎসকদের পরামর্শে পরিবারের লোকেরা বাইরে থেকে কয়েকটি রক্তের পরীক্ষা করান। রিপোর্ট দেখে চিকিৎসকরা আশ্বাস দেন, জ্বর সেরে যাবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ধূপগুড়ি শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০২:১২
Share:

ক্ষোভ: ধূপগুড়ি হাসপাতালে উত্তেজিত জনতা। নিজস্ব চিত্র

জ্বরে আক্রান্ত এক কিশোরীকে ইঞ্জেকশন দেওয়ার দশ মিনিটের মধ্যে সে মারা যায়। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে এগারটা নাগাদ সেই ঘটনার পরে ধূপগুড়ি হাসপাতালে রেশমি পারভিন ওরফে গুড়িয়া (১১) নামে ওই কিশোরীর পরিবারের লোকেরা হাসপাতালে বিক্ষোভ দেখান।

Advertisement

শুক্রবার হাসপাতালের তিন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ধূপগুড়ি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন মৃতার কাকা। ধূপগুড়ি হাসপাতালের বিএমওএইচ সব্যসাচী মণ্ডল বলেন, “ময়নাতদন্ত হলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।”

বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ ধূপগুড়ি হাসপাতালে ভর্তি হয় রেশমি। চিকিৎসকদের পরামর্শে পরিবারের লোকেরা বাইরে থেকে কয়েকটি রক্তের পরীক্ষা করান। রিপোর্ট দেখে চিকিৎসকরা আশ্বাস দেন, জ্বর সেরে যাবে। কিন্তু রাতেও জ্বর না কমলে পরিবারের সদস্যরা রোগীকে জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালে নিয়ে যেতে চাইলে চিকিৎসকরা দুর্ব্যবহার করে বলে অভিযোগ। রাত সাড়ে এগারোটা নাগাদ চিকিৎসক রোগীকে একটি ইঞ্জেকশন দেন। তার দশ মিনিট পরেই খিঁচুনি উঠে রেশমি মারা যায় বলে পরিবারের দাবি।

Advertisement

অভিযুক্ত এক চিকিৎসক অজিত গুপ্তা বলেন, “চিকিৎসায় কোনও ভুল বা গাফিলতি ছিল না। কী কারণে রোগী হঠাৎ করে মারা গেল, বুঝতে পারছি না।”

অন্য দিকে রোগীকে ময়না তদন্তে জলাপাইগুড়ি হাসপাতালে নিয়ে গেলেও চিকিৎসকরা প্রথমে ময়না তদন্ত না করে প্রায় বিকেল পর্যন্ত মৃতাকে ফেলে রাখে বলে অভিযোগ। পরে এই খবর জানাজানি হয়ে যেতেই জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য অধিকর্তা জগন্নাথ সরকার তিন চিকিৎসকের কমিটি গড়ে ভিডিও রেকর্ডিংয়ের মাধ্যমে ময়না তদন্তের নির্দেশ দেন। রেশমির পরিবারের লোকজনের দাবি, দুপুর বারোটারও আগে ওই শিশুর দেহ জলপাইগুড়ি মর্গে ময়না তদন্তের জন্য নিয়ে আসা হয়৷ কিন্তু তারপর প্রায় চার ঘণ্টা দেহটি ফেলে রাখা হয়। মৃতার আত্মীয় মহম্মদ মোক্তার হোসেন অভিযোগ করেন, ‘‘মর্গ থেকে অযথা আমাদের হয়রান করা হয়েছে। এটা কোনও ভাবেই মানা যায় না৷’’

শেষে মেডিক্যাল বোর্ড গড়ে এই মর্গেই শিশুর দেহের ময়নাতদন্ত হয়৷ সিএমওএইচ জগন্নাথ সরকার বলেন, মেডিক্যাল বোর্ড গড়তে একটু সময় লেগে যায়৷ তা নিয়েই একটা সমস্যা হয়েছিল৷ তবে সমস্যা মিটে গিয়েছে৷ মৃতার দাদু মুক্তার আলি ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, “আমার নাতিকে খুন করল চিকিৎসকরা। এর সঠিক তদন্ত ও দোষী চিকিৎসকের শাস্তি চাই।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন