পরিকাঠামো নেই সামসি হাটে।ছবি: বাপি মজুমদার
পরিকাঠামোর অভাব ও যানজট। এই জোড়া ফলার জেরে নাজেহাল মালদহের সামসির বাসিন্দারা।
সামসিতে সপ্তাহে দু’দিন হাট বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতি। কিন্তু অভিযোগ, ওই হাটে পরিকাঠামো না থাকায় ক্রেতা-বিক্রেতাদের সমস্যা হওয়ার পাশাপাশি পাজ্য সড়ক অবরূদ্ধ হয়ে দিনভর নাজেহাল হতে হয় স্থানীয় বাসিন্দাদের। পরিকাঠামো ও যানজট সমস্যা দূর করার উদ্যোগ না নিয়ে সপ্তাহে দু’দিন হাট বসানোর সিদ্ধান্তকে ঘিরে ক্ষুব্ধ সামসি গ্রাম পঞ্চায়েত-সহ ব্যবসায়ীদের অধিকাংশ। অভিযোগ, বাড়তি আয়ের জন্য কারও সঙ্গে আলোচনা না করেই তড়িঘড়ি হাট চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতি। সামসি ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক অজয় শর্মা বলেন, ‘‘হাটের পরিকাঠামো, যানজট সমস্যা দূর না করে বাড়তি রাজস্বের কথা ভেবেই দু’দিন হাট বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আমাদের এ বিষয়ে কিছুই জানানো হয়নি।’’
জেলা নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতির চেয়ারম্যান তথা জেলাশাসক শরদকুমার দ্বিবেদী অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘‘যানজটের জন্য আমরাই দু’দিন হাটের বিপক্ষে ছিলাম।’’ কিন্তু ব্যবসায়ীদের দাবি মেনে তা করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
চাঁচল-রতুয়া রাজ্য সড়কের পাশে রেললাইনের অপর পারে নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতি চত্ত্বরে বৃহস্পতিবার ওই সাপ্তাহিক হাট বসে। একই সঙ্গে সেখানে চাঁচল রাজার চালু করা একটি হাটও বসে। দু’টি হাট মিলিয়ে তা জেলার অন্যতম বড় হাট। কিন্তু এই হাটের জেরে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চাঁচল-রতুয়া রাজ্য সড়ক অবরুদ্ধ হয়ে থাকে। সামসি কলেজ, স্কুল, গার্লস স্কুল সহ একাধিক বেসরকারি স্কুলের সবকটিই এপারে। ভয়াবহ যানজটের জেরে সেদিন পড়ুয়াদের অনেকেই স্কুলমুখী হয় না বলে দাবি অভিভাবকদের। যানজটের পাশাপাশি রয়েছে সমস্যা রয়েছে হাটের পরিকাঠামো নিয়েও। হাটে কয়েকটি শৌচাগার থাকলেও তা সাফাই না করায় ব্যবহারের অযোগ্য। হাটে নলকূপ থাকলেও সংস্কার না করায় তা অকেজো হয়ে রয়েছে। ফলে নেই পানীয় জলের কোনও বন্দোবস্ত। নিকাশি ব্যবস্থা পর্যাপ্ত না হওয়ায় সামান্য বৃষ্টিতেই গোটা চত্ত্বর জলে থইথই করতে থাকে। হাটে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা না থাকায় সন্ধে নামতেই ব্যবসায়ীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে শুরু করেন।
সামসি গ্রাম পঞ্চায়েত ও ব্যবসায়ী সমিতির অভিযোগ, ‘‘প্রশাসন স্বচ্ছতার উপরে জোর দিচ্ছে। কিন্তু হাটের সবক’টি শৌচাগার ব্যবহারের অযোগ্য।’’
সমস্যা নিয়ে একাধিকবার প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে, কিন্তু প্রশাসন সমস্যা মেটানোর আশ্বাস দিলেও ফল হয়নি বলে অভিযোগ তাঁদের। জেলার প্রথম সরকারি হাট চালু হয় সামসিতে। হাওড়ার হাটের পর সামসি হাট থেকে সবথেকে বেশি রাজস্ব আদায় হয় বলে দাবি ব্যবসায়ীদের।পরিকাঠামোর কিছু সমস্যার কথা স্বীকার করেছেন জেলা নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতির সম্পাদক আব্দুস সাত্তার। সমস্যা মেটানো হচ্ছে বলে দাবি করেছেন তিনি।