পালিয়ে: বনে আগুন লাগায় বেরিয়ে পড়েছে শেয়াল। সোমবার। নিজস্ব চিত্র
হঠাৎ সাইকেলের সামনে চলে এল বেশ কিছু শেয়াল। সাধারণত বন দফতরের কার্যালয়ের ডান দিকের ঘন বনে শেয়াল থাকলেও কার্যালয়ের বাঁ দিকের এই অংশে সাধারণত তা চোখে পড়ে না। তাই স্থানীয় ওই বাসিন্দা প্রথমে চমকে গেলেও কারণ জানা গেল একটু পরেই। ডান দিকের অংশে আগুন লাগার কারণেই কার্যালয়, তার পাশে আদিবাসীদের বসতি পেরিয়ে বাঁ দিকের অপেক্ষাকৃত অগভীর বনে চলে যায় শেয়ালগুলি। এর পর থেকেই শেয়ালের আতঙ্কে রয়েছেন ওই বসতির বাসিন্দারা। সোমবার দুপুরে বালুরঘাটের বন দফতরের কার্যালয় লাগোয়া ডাঙা ফরেস্টের ঘটনা।
ফের আগুন লাগল বনদফতরের ফরেস্টে। দাউদাউ করে জ্বলতে থাকা ওই আগুন থেকে প্রাণ রক্ষায় জঙ্গল থেকে বেরিয়ে এল শেয়ালের দল। কিছুদিন আগেও ওই এলাকায় আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। বালুরঘাটের তুঁত খামার, দোগাছি ফরেস্ট এবং রেলস্টেশনের বাগানে অগ্নিকাণ্ডের পর ফের এই ঘটনায় ছড়িয়েছে চাঞ্চল্য। বন দফতর সূত্রে খবর, পুড়ে গিয়েছে লক্ষাধিক টাকার মূল্যবান চারা ও পুরনো গাছ। স্থানীয় বাসিন্দা ও দমকলের চেষ্টায় ৩ ঘণ্টা পর আগুন আয়ত্তে আসে। দুষ্কৃতীরাই বনে আগুন লাগিয়েছে বলে সন্দেহ বনদফতরের। কারা বারবার বনদফতরের ফরেস্টে আগুন ধরিয়ে দিচ্ছে তার তদন্তে প্রশ্ন উঠেছে পুলিশি তৎপরতা নিয়ে। পাশাপাশি বনে থাকা শেয়াল, কাঠবিড়ালি, সাপ, বেজির মতো বন্যপ্রাণীদের বিপন্নতা নিয়ে সরব হয়েছে পরিবেশকর্মীরা। তাঁরা দুষ্কৃতীদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন।
গত মাসে বালুরঘাটের সাহেবকাছারি এলাকার তুঁতখামারের জঙ্গলে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা দিয়ে শুরু। এরপর ১২ ফেব্রুয়ারি বালুরঘাট থানার দোগাছি ফরেস্টে আগুন লাগে। আগুনে পুড়ে যায় মূল্যবান গাছগাছালি। ১৫ ফেব্রুয়ারি বালুরঘাট রেলস্টেশন বাগানে আগুন লাগার ঘটনা সামনে আসে, পুড়ে যায় বহু গাছ। এরপর এ দিন বালুরঘাট বনদফতরের পাশে থাকা ডাঙ্গা ফরেস্টে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। প্রথমে বনদফতরের কর্মী ও স্থানীয়রা আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। পরে ঘটনাস্থলে আসে দমকলের একটি ইঞ্জিন। দীর্ঘক্ষণ চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। ততক্ষণে পুড়ে গিয়েছে বনের ভিতরের বহু মূল্যবান শাল, সেগুন, শিমূলের মতো বৃক্ষ ও চারা গাছ।
বালুরঘাট বনদফতরের বিট অফিসার নিখিল ছেত্রী বলেন, ‘‘পরপর বনদফতরের ফরেস্টে আগুন লাগানোর ঘটনা ঘটছে। এবার আগুন লাগানো হল ডাঙ্গা ফরেস্টে। চারাগাছ, পুরনো দু’টি বাঁশ ঝাড় সহ পুরনো বেশ কিছু গাছ পুড়ে গিয়েছে।’’ মাত্র দু’জন কর্মী দিয়ে বনে নজরদারি চালাতে সমস্যা হচ্ছে বলে জানিয়ে তিনি পুলিশের সহায়তা চেয়েছেন বলে খবর। থানাতেও অভিযোগ জানানো হয়েছে। ডিএসপি(সদর) ধীমান মিত্র জানান, দুষ্কৃতীদের সন্ধানে তদন্ত শুরু হয়েছে।