বন্ধ: রোগী সহায়তা কেন্দ্রের অবস্থা। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক
প্রত্যন্ত এলাকা থেকে আসা রোগী ও তাদের পরিবারকে সাহায্য করার জন্য ঘটা করে রোগী সহায়তা কেন্দ্র চালু করা হয়েছিল। একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার মাধ্যমে নিয়োগ করা হয়েছিল কর্মী। অথচ ওই কর্মীদের দিয়ে হাসপাতাল অন্য কাজ করানোয় রোগী সহায়তার কাজ শিকেয় উঠেছে।
হাসপাতালের করিডরের ধারে যে রোগী সহায়তা কেন্দ্র চালু করা হয়েছিল তার দরজা প্রায় বছর খানেক ধরে বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে। চেয়ার টেবিলে জমেছে ময়লার পুরু আস্তরণ। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের এ হেন রোগী পরিষেবা কেন্দ্রের হাল থেকে ক্ষুব্ধ রোগী এবং তাদের লোকজনও। কিন্তু তাদের ক্ষোভ আমল দিচ্ছেন কে?
হাসপাতাল সূত্রেই জানানো হয়েছে, রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা প্রকল্পের কাজ দেখভাল করতে রোগী সহায়তা কেন্দ্রের আট জন সহায়ক, সহায়িকাদের কাজে লাগানো হয়েছে। বাকি আরও পাঁচ জন রয়েছেন যাদের রোগী সহায়ক হিসেবে কাজে নেওয়া হয়েছিল। তাদের একজনকে ২৪ ঘণ্টা ল্যাবরেটরি খুলে রাখার জন্য সেখানে সাহায্যের কাজে দিতে হয়েছে। বাকি চারজন জননী সুরক্ষা যোজনার কাজ দেখভাল করছেন।
সমস্যার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের দায়িত্বে থাকা সুপার মৃদুময় দাস। তিনি বলেন, ‘‘রোগী সহায়তা কেন্দ্রগুলোর কর্মীদের অন্য কাজে নেওয়ায় ওই কাজ তারা করতে পারছেন না এটা ঠিকই। কিন্তু ওই সমস্ত প্রকল্পগুলো চালানোর জন্যও লোক নেই। তাই রোগী সহায়কদেরই ওই দায়িত্ব দিতে হয়েছে।’’
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের এতবড় ক্যাম্পাসে কোথায় কী রয়েছে প্রত্যন্ত এলাকার বাসিন্দাদের অনেকেরই পক্ষে তা জানা কঠিন। তা ছাড়া বহির্বিভাগে চিকিৎসা করাতে আসা রোগীদের নানা সাহায্যের দরকার হয়। ভবঘুরে কয়েজন ব্যক্তি করিডরে কাটান। তাদের একজন মনসা ওরাও গত দুই দিন ধরে গুরুতর অসুস্থ হয়ে রয়েছেন। তাদের বিষয়ে খোঁজ নেওয়ার কেউ নেই।
বহির্বিভাগে চিকিৎসা করাতে এসে ছিলেন এক মহিলা প্রমিলা রাজভর। চিকিৎসক এক্সরে করতে বললে তা করাতে বেলা ৩টে গড়িয়ে যায়। এর পর বহির্বিভাগে গেলে দেখেন তা বন্ধ। এর পর কোথায় দেখাবেন, কবে আসবেন, কবে চিকিৎসককে পাবেন তা জিজ্ঞাসা করতে হন্যে হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন তিনি। ধুলোয় ঢাকা কেন্দ্রের কাছে এসে হতাশ হয়ে ফিরে যান।