খুচরো সমস্যা নিয়ে বালুরঘাটের রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন গ্রাহকেরা। শহরের ছিন্নমস্তা কলোনির বাসিন্দা অভিজিৎ রায় জেরক্সের দোকান চালান। চলতি মাসে ৫ হাজার টাকার খুচরো নিয়ে ব্যাঙ্কে জমা দিতে গেলে শাখা ম্যানেজার তীব্র আপত্তি জানিয়ে তাঁকে ফিরিয়ে দেন বলে অভিযোগ। বালুরঘাট থানায় গিয়ে অভিজিৎ ওই ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে খুচরো না নেওয়ার লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। একই অভিযোগে বাসস্ট্যান্ড এলাকার একটি ব্যাঙ্কের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেছেন ছোট ব্যবসায়ী সমীর সাহা।
সমস্যা চলছে গোটা জেলাজুড়েই। শহরের তহবাজারের পান সুপারি ও তামাকের ব্যবসা দুলাল কুণ্ডুর। তাঁর দোকানে গিয়ে শহরতলির ছোট দোকানি জয় সরকার পান, মিষ্টি মশলা, জর্দা, সিগারেট কিনলে দাম হয় ৫০০ টাকা। এর মধ্যে ২০ টাকা তিনি মেটাতে যান দু’পাঁচ টাকার খুচরো পয়সায়। তাতেই দুই ব্যবসায়ীর মধ্যে তুমুল ঝগড়া বেধে যায়। দুলালবাবুর বক্তব্য, ‘‘কয়েক হাজার টাকার খুচরো পয়সা জমে গিয়েছে। মহাজনও সেই টাকা নিচ্ছে না, ব্যাঙ্কও নিচ্ছে না। এক টাকাও খুচরো নিতে পারব না।’’ জয়ের বক্তব্য, ‘‘পান, বিড়ি, লজেন্স কিনতে খরিদ্দারেরা খুচরো পয়সাই দেন। না নিলে বিক্রিবাট্টাই তো বন্ধ হয়ে যাবে।’’ শেষে ২০ টাকা বাকি রেখেই মাল নিতে হল জয়কে। খুচরোর পাহাড়ে বিপাকে পড়েছেন বালুরঘাটের সংবাদপত্র বিক্রেতা শ্যামল সরকার, শঙ্কর সাহাও।
খুচরো পয়সা নিয়ে এ রকম বড় ও ছোট ব্যবসায়ী থেকে ক্রেতাদের মধ্যে নিত্য ঝামেলা এখন দক্ষিণ দিনাজপুরের হাটবাজারে রোজকার ঘটনা। নোটবন্দির পরে ব্যাঙ্ক থেকে গ্রাহকদের থলে ভর্তি এক, দুই, পাঁচ, দশ টাকার কয়েনে হাজার হাজার টাকা সরবরাহ করে এখন আর তাঁরা খুচরো নিতে চাইছেন না বলে ব্যবসায়ীদের অভিযোগ। উদ্বিগ্ন বণিকসভা প্রশাসনের দ্বারস্থ হলেও সমস্যা মেটেনি বলে সমিতির সহসভাপতি গোপাল পোদ্দারের দাবি।
এক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ম্যানেজারের দাবি, ‘‘কাজের চাপ। তার উপর খুচরো কয়েন গুনে জমা নেওয়ার মত কর্মীর অভাবে ওই সমস্যা হচ্ছে।’’ জেলার লিড ব্যাঙ্ক অফিসারকে দ্রুত সমস্যা মেটাতে বলেছেন জেলাশাসক। ব্যাঙ্ক নিচ্ছে না, তাই আড়তদার ও মহাজনেরাও খুচরো নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। এতেই মাথায় হাত পড়েছে তহবাজারের মুদির দোকানি দিলীপ ঘোষ, চাল বিক্রেতা মিঠু ঘোষ, সব্জির দোকানি রতন দাসদের।