কাঁটাতার ভুলে আপনজনের কাছে আসার মিলন মেলা

তবে এই মিলন মেলায় আর পাঁচটা মেলার মতো জিনিস কেনাবেচা হয় না। হয় কেবল দু’দেশের মানুষের মধ্যে শুভেচ্ছা বিনিময়। 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

কুচলিবাড়ি শেষ আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০১৮ ০৭:৩০
Share:

সাক্ষাৎ: মেখলিগঞ্জের কুচলিবাড়িতে বুধবার মিলন মেলায় দুই দেশে ছড়িয়ে থাকা আত্মীয়স্বজনরা এলেন পরস্পরকে দেখতে। ছবি: সজল দে

বছরে একটি দিন বসে মেলা। আর তার জন্য বছরভর অপেক্ষা। তবে এই মিলন মেলায় আর পাঁচটা মেলার মতো জিনিস কেনাবেচা হয় না। হয় কেবল দু’দেশের মানুষের মধ্যে শুভেচ্ছা বিনিময়।

Advertisement

প্রতি বছরই কালীপুজোর পরের দিন বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী মেখলিগঞ্জ ব্লকের কুচলিবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার ডাকুয়াটারিতে এই মিলন মেলা হয়। বুধবার এই মেলায় অনেক মানুষ শামিল হন। স্থানীয় বাসিন্দা জ্যোতিবিকাশ রায় বলেন, ‘‘দেশভাগের সময়ে বহু পরিবার বাংলাদেশ থেকে ভারতে চলে আসেন। কিন্তু তাঁদের অনেকেরই আত্মীয় পরিজন আজও বাংলাদেশেই রয়ে গেছেন। সে কারণে এই বিশেষ দিনে দুই দেশের বসবাসকারী আত্মীয়রা একে অপরের সঙ্গে দেখা করতে এই মিলন মেলায় আসেন।’’

বুধবার ব্রহ্মোত্তর কুচলিবাড়ির বাসিন্দা সুচিত্রা বর্মণ মেলায় গিয়েছিলেন বাংলাদেশ থেকে মেলায় আসা কাকিমা সারদা বর্মণের সঙ্গে দেখা করতে। তেমনই সুজাতা বর্মণ গিয়েছিলেন স্বপ্না বর্মণের সঙ্গে দেখা করতে। ২৫ পয়েস্তীর মহম্মদ মফিজ যেমন গিয়েছিল বাংলাদেশের লালমণির হাটের বাসিন্দা, তাঁর মামা মহম্মদ লতিফের সঙ্গে দেখা করতে।

Advertisement

নিয়মের বেড়াজালের কারণে দীর্ঘ সময় একসঙ্গে থাকা হয় না ওদের। এই মেলায় দুই দেশের মানুষরা তাই শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। পাশাপাশি নিজেদের মনের কথা একে অপরকে জানান। বিদায় বেলায় ভেজা চোখেই চলে পরস্পরকে বিদায় জানানোর পালা। মিলন মেলায় আসার জন্য বাইরে থেকেও অনেকে ছুটে এসেছেন। সোশ্যাল মিডিয়াতে আগাম জানিয়েও এ দিন অনেকে এসেছেন মেলায়।

এ বিষয়ে কুচলিবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান জয়শ্রী রায় বলেন, ‘‘কুচলিবাড়িতে এই মিলন মেলা দীর্ঘদিন ধরেই হয়ে আসছে। দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর উপস্থিতিতেই কাঁটাতারের বেড়ার দু’ধারে দাঁড়িয়ে, দুই দেশে বসবাসকারী আত্মীয়স্বজনরা পরস্পরের সঙ্গে দেখা করেন। একে অপরের জন্য খাবার ও উপহার নিয়েও আসেন অনেকে। বেশ কিছুটা সময় একসঙ্গে থাকার পর আবার এক বছর পর দেখা করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বাড়ি ফিরে যান।’’ এলাকায় এই মেলার গুরুত্ব দিন দিন বাড়ছে বলেও জয়শ্রী দেবী জানান। এ দিন মিলন মেলায় শামিল মানুষজনকে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর পক্ষ থেকে কালীপুজোর প্রসাদ খাওয়ানো হয় বলেও জানা গিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন