পুলিশি হেনস্থার অভিযোগে সরব বালুরঘাট

ঘটনার সূত্রপাত পুজোর সময়। দুর্গাপুজোর দিনগুলিতে বিকেল ৪টা থেকে পরদিন ভোর ৪টে পর্যন্ত বালুরঘাট শহরে বাইক ও ছোটগাড়ি চলাচলের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল জেলা পুলিশ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বালুরঘাট শেষ আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০১৭ ০৭:৫০
Share:

প্রতিবাদ: বালুরঘাটে পথে বাসিন্দারা। ছবি: অমিত মোহান্ত

পুলিশি নির্দেশের সমালোচনা করে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ায় এক ব্যবসায়ী ও ব্যাঙ্ককর্মীকে গ্রেফতারের অভিযোগে সরব হলেন বালুরঘাটের বাসিন্দারা। ঘটনার প্রতিবাদে শহরের একাংশ বুদ্ধিজীবীর প্রতিবাদ মিছিল আটকে দেওয়ার ঘটনায় উত্তেজনাও ছড়ায়। শুক্রবার বালুরঘাটে ওই মিছিল সংগঠিত হতেই শহরের বাসস্ট্যান্ড এলাকায় তা পুলিশ আটকে দেয়। ডেপুটি পুলিশ সুপার (সদর) সৌম্যজিৎ বড়ুয়ার দাবি, ‘‘ওই মিছিলের কোনও অনুমতি ছিলনা। স্বাভাবিকভাবে তা আটকে দেওয়া হয়েছে।’’

Advertisement

ঘটনার সূত্রপাত পুজোর সময়। দুর্গাপুজোর দিনগুলিতে বিকেল ৪টা থেকে পরদিন ভোর ৪টে পর্যন্ত বালুরঘাট শহরে বাইক ও ছোটগাড়ি চলাচলের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল জেলা পুলিশ। তার বদলে টোটো চড়ে প্রতিমা দেখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। পুলিশের ওই সিদ্ধান্তে বিরুদ্ধে ফেসবুকে সমালোচনার ঝড় ওঠে। বাইক ও ছোটগাড়ি বন্ধের জেরে হয়রানির সঙ্গে একাংশ টোটো চালকের বিরুদ্ধে নেশা করে ইচ্ছামতো ভাড়া দাবির অভিযোগ তুলে ফেসবুকে তীব্র সমালোচনা করেন শিক্ষক কৌশিকরঞ্জন খাঁ। তার পোস্টটি শেয়ার করেন চকভৃগুর চিত্রশিল্পী ব্রতীন সরকার-সহ একাধিক ব্যক্তি। ওই ফেসবুক পোস্টে তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করে সম্মানহানির অভিযোগ তুলে কয়েকজন টোটো চালক কৌশিক ও ব্রতীনবাবুর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।

বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুলিশই টোটো চালকদের ‘চাপ’ দিয়ে অভিযোগ দায়ের করায় এবং এর পরেই যাঁরা ওই পোস্ট শেয়ার করেছেন তাঁদের অনেককে থানায় ডেকে জেরার নামে হেনস্থা করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের নামে পুলিশি হেনস্থা ও হুমকির অভিযোগ তুলে বুধবার (১৮ অক্টোবর) দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলাশাসকের কাছে সপরিবারে স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদন করেছিলেন শহরের অভিযাত্রী এলাকার বাসিন্দা দেবজিৎ রায়।

Advertisement

বৃহস্পতিবার দেবজিৎ ও চিকিৎসক অনুপম তরফদারকে পুলিশ থানায় ডেকে দীর্ঘক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদ করে। তথ্য গোপন ও পুলিশের সঙ্গে অসহযোগিতার অভিযোগে বেশি রাতে তাঁদের জামিন অযোগ্য ধারায় গ্রেফতার করা হয়। এ দিন তাদের সাত দিনের হেফাজত চেয়ে পুলিশ তাদের বালুরঘাটের আদালতে হাজির করালে বিচারক দু’দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন। ঘটনার প্রতিবাদে পুলিশের বিরুদ্ধে বাকস্বাধীনতা হরণের অভিযোগ তুলে শহরের একাংশ কবি, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী বালুরঘাট শহরে প্রতিবাদ মিছিল বের করতে উদ্যোগী হন।

পুলিশের ওই ভূমিকার বিরুদ্ধে কৌশিক, ব্রতীনবাবুদের মত দেবজিৎও হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়ে সুবিচার চেয়ে মামলা করেছেন। এক পুলিশ অফিসারের কথায়, জেলাশাসকের কাছে সপরিবারে আত্মহত্যার অনুমতি চেয়ে হুমকি চিঠি দিয়ে আইনত অপরাধ করেছেন দেবজিৎ। তাঁকে সমর্থন করে ফেসবুকে প্রচার করে ওই চিকিৎসকও ওই অপরাধে যুক্ত হয়ে পড়ার অভিযোগে পুলিশ দুজনের বিরুদ্ধে আইপিসি ৫০৫ এবং আইটি ৬৬ ও ৬৭ ধারায় মামলা দায়ের করে তাঁদের গ্রেফতার করেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন