কলকাতায় ধর্না, জের ৩ জেলায়

জেলা জুড়েই বিজেপির বিরুদ্ধে সরব হয়ে পথসভা, ধিক্কার মিছিল করল তৃণমূল। রাস্তায় ক্ষোভ প্রকাশে সামিল হন সদ্য তৃণমূলে যোগ দেওয়া উত্তর মালদহের সাংসদ মৌসম নুরও। চাঁচলেও ধিক্কার মিছিলের সঙ্গে অবস্থান বিক্ষোভ চলে। মুখ্যমন্ত্রী যত দিন ধর্না কর্মসূচি চালাবেন তত দিন সকাল ১০টা থেকে রাত্রি ৯টা পর্যন্ত চাঁচলে ট্রাফিক মোড়ের ওই অবস্থান বিক্ষোভ চলবে বলে জানান তৃণমূল নেতা মদুবর রহমান।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৪:৪৬
Share:

বক্তা: সোমবার ইংরেজবাজারের ফোয়ারা মোড়ে তৃণমূলের ধর্না মঞ্চে বক্তব্য রাখছেন মৌসম নুর। নিজস্ব চিত্র

কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারের বাড়িতে সিবিআই হানার প্রতিবাদে রবিবার রাতেই ধর্মতলায় মেট্রো চ্যানেলে ধর্নায় বসেছেন দলনেত্রী। কেন্দ্রের মোদী সরকারের হাত থেকে দেশের সংবিধান বাঁচাতে এই ধর্নাকে সত্যাগ্রহ আখ্যা দিয়েছেন। জেলাতেও দলকে তিনি অহিংসার মাধ্যমে আন্দোলনে সামিল হতে নির্দেশ দেন। রাজ্যের অন্য অংশের মতো সোমবার দুই দিনাজপুর এবং মালদহেও কোথাও মিছিল, কোথাও পথসভা, অবস্থান বিক্ষোভ চলল।

Advertisement

মালদহ

Advertisement

জেলা জুড়েই বিজেপির বিরুদ্ধে সরব হয়ে পথসভা, ধিক্কার মিছিল করল তৃণমূল। রাস্তায় ক্ষোভ প্রকাশে সামিল হন সদ্য তৃণমূলে যোগ দেওয়া উত্তর মালদহের সাংসদ মৌসম নুরও। চাঁচলেও ধিক্কার মিছিলের সঙ্গে অবস্থান বিক্ষোভ চলে। মুখ্যমন্ত্রী যত দিন ধর্না কর্মসূচি চালাবেন তত দিন সকাল ১০টা থেকে রাত্রি ৯টা পর্যন্ত চাঁচলে ট্রাফিক মোড়ের ওই অবস্থান বিক্ষোভ চলবে বলে জানান তৃণমূল নেতা মদুবর রহমান। এ দিন সকাল থেকেই ইংরেজবাজারে রবীন্দ্র এভিনিউতে ধর্না শুরু করেন যুব তৃণমূল নেতা-কর্মীরা। ক্ষোভ দেখানোর পরে মিছিল করে মৌসম হাজির হন শহরের ফোয়ারা মোড়ের পথসভায়। মৌসম ছাড়াও ছিলেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন, কার্যকরী সভাপতি দুলাল সরকার, জেলা পরিষদের সভাধিপতি গৌরচন্দ্র মণ্ডল-সহ দলীয় কাউন্সিলর, ছাত্র, যুব সংগঠনের জেলা নেতারা। হবিবপুর, পুরাতন মালদহ, গাজল-সহ সমস্ত ব্লকেই ধিক্কার মিছিল বার হয়। মৌসম বলেন, ‘‘বিজেপি সাম্প্রদায়িক দল। আমাদের নেত্রী তাঁদের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। তাই সিবিআইকে ব্যবহার করে দমানোর চেষ্টা করছেন। বাংলার মানুষ জবাব দেবেন।” হরিশ্চন্দ্রপুরেও প্রাক্তন বিধায়ক তজমুল হোসেনের নেতৃত্বে প্রতিবাদ হয়। রতুয়া ২ ব্লক তৃণমূলের উদ্যোগে ধিক্কার মিছিল বার হয়।

উত্তর দিনাজপুর

বিকেলে রায়গঞ্জের বিবেকানন্দমোড় থেকে শিলিগুড়িমোড় পর্যন্ত ধিক্কার মিছিল করে তৃণমূল। পুরপ্রধান সন্দীপ বিশ্বাস, উপ পুরপ্রধান অরিন্দম সরকার, দলের উত্তর দিনাজপুর জেলা-সহ সভাপতি পূর্ণেন্দু দেরা ছিলেন। সকলেই বুকে কালো ব্যাজ পড়েন। মিছিল শেষে শিলিগুড়িমোড়ে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক ও রায়গঞ্জ-বালুরঘাট রাজ্যসড়কের সংযোগস্থলের ট্র্যাফিক পোস্টের উপরে তৃণমূলের নেতারা পথসভা করে বিজেপির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান। ওই পথসভার জেরে প্রায় ১৫ মিনিট জাতীয় ও রাজ্যসড়ক অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। অন্য দিকে, হেমতাবাদ ব্লক তৃণমূল সভাপতি প্রফুল্ল বর্মণের নেতৃত্বে এ দিন হেমতাবাদ সদরের বিভিন্ন এলাকায় তৃণমূলের নেতা ও কর্মীরা ধিক্কার মিছিল করেন। ইটাহার ও কালিয়াগঞ্জেও মিছিল হয়। ইসলামপুর বাসস্ট্যান্ডে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয় থেকেই বিক্ষোভ মিছিল হয়। কালো পতাকা নিয়ে তাঁদের এই কর্মসূচি চলে। ধিক্কার মিছিলকে কেন্দ্র করে ৩১ এবং ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে যানজটে আটকে পড়ে যাত্রীবাহী বাস-সহ অন্য যানবাহন। ডালখোলায় ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে ধিক্কার মিছিল বার হয়। করণদিঘির ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে মিছিল পরিক্রমা করে। তার জেরে সাময়িক যানজটের সৃষ্টি হয়। চাকুলিয়ার কানকি এবং গোয়ালপোখরের পাঞ্জিপাড়ায় ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কে মিছিল বার হয়।

বালুরঘাট

বালুরঘাট শহর-সহ জেলার আটটি ব্লকেই মুখে কালো কাপড় বেঁধে, কালো পতাকা দেখিয়ে প্রতিবাদ মিছিল হয়। বালুরঘাট হাই স্কুল মাঠ থেকে বিক্ষোভ মিছিল শহর পরিক্রমা করে। বাসস্ট্যান্ডে গিয়েও ক্ষোভ দেখানো হয়। নেতৃত্ব দেন তৃণমূল টাউন সভাপতি সুভাষ চাকি। গঙ্গারামপুরে ধিক্কার মিছিলে ছিলেন জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্র। মিছিল হয় কুশমণ্ডিতেও। বিকেলে হিলি, বালুরঘাট, গঙ্গারামপুর, কুশমন্ডি-সহ সব ব্লকে ধিক্কার মিছিল হয়। বালুরঘাটে তৃণমূলের কয়েক হাজার মহিলা ও পুরুষ কর্মী সমর্থক আন্দোলনে নামেন। তৃণমূলের টাউন সভাপতি সুভাষ চাকির অভিযোগ, সিবিআইয়ের মতো নিরপেক্ষ সংস্থার উপরে বিজেপি প্রভাব খাটাচ্ছে। নেতা মন্ত্রী থেকে আধিকারিক কেউ মোদী বা অমিত শাহর বিরুদ্ধে কিছু বললেই প্রতিহিংসার রাজনীতি করা হচ্ছে। বাংলায় এমন ঘটনা কিছু দিন ধরে দেখা যাচ্ছে। তাই প্রতিবাদে নেমেছেন সকলে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন