বহু প্রশ্ন নিয়ে মোদীর দিকে তাকিয়ে পাহাড়

একাধিক প্রশ্ন নিয়ে পাহাড়ের মানুষ তাকিয়ে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সভার দিকে। ময়নাগুড়িতে শুক্রবার সেই সব প্রশ্নের জবাব মোদী দেবেন কি না, তার উপরেই লোকসভা ভোটে দার্জিলিং আসনটির ভাগ্য নির্ভর করছে বলে অনেকেই মনে করছেন।

Advertisement

কৌশিক চৌধুরী

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৮:১৫
Share:

দার্জিলিংয়ের ম্যাল-এ পর্যটকদের ভিড়। —ফাইল চিত্র

একাধিক প্রশ্ন নিয়ে পাহাড়ের মানুষ তাকিয়ে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সভার দিকে। ময়নাগুড়িতে শুক্রবার সেই সব প্রশ্নের জবাব মোদী দেবেন কি না, তার উপরেই লোকসভা ভোটে দার্জিলিং আসনটির ভাগ্য নির্ভর করছে বলে অনেকেই মনে করছেন।

Advertisement

গত লোকসভা ভোটে বিমল গুরুং বিজেপির পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। সে সময় শিলিগুড়ির জনসভায় মোদী বলেছিলেন, গোর্খাদের স্বপ্ন, তাঁর স্বপ্ন। ভোটের ইস্তাহারে আলাদা রাজ্যের দাবিকে সহানূভুতির সঙ্গে বিবেচনার আশ্বাসও দেয় বিজেপি। পাঁচ বছর পরে আর একটি লোকসভা ভোটের দোরগোড়ায় পাহাড়বাসীদের একটি বড় অংশের প্রশ্ন, সেই স্বপ্ন সত্যি হল না কেন?

আলাদা রাজ্যের সেই দাবি থেকে অনেকটা সরে এসেছে এখন পাহাড়ে প্রভাবশালী মোর্চার তামাং শিবির। তারা বিজেপির বদলে তৃতীয় মোর্চার দিকেই ঝুঁকেছে। সেক্ষেত্রে পাহাড়ে প্রভাব বাড়াতে বিজেপি উন্নয়নের প্রসঙ্গ তুলতে গেলেও বিপাকে পড়বে বলে দাবি করেছেন পাহাড়েরই বিভিন্ন দল। সাংসদ সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়াকে পাহাড়ে দেখা যায় না বলেও অভিযোগ তুলেছেন তাঁরা। জিএনএলএফের মুখপাত্র নীরজ জিম্বা বলেন, ‘‘মোদী মুখে স্বপ্ন দেখিয়ে গিয়েছেন। আর এখানকার সাংসদ মন্ত্রী হয়েও কোনও কাজ করা তো দূরের কথা, পাহাড়েই আসেন না।’’ তাঁর বক্তব্য, পাহাড়ের কোনও আশাই যে পূরণ হয়নি, তা বিজেপিও জানে। নীরজ বলেন, ‘‘যে কারণে বিজেপি বুঝে গিয়েছে, পাহাড়ের ভোটে কী হবে। তাই প্রধানমন্ত্রীকে এ দিকে আনা হল না।’’ পাহাড়ের রাজনৈতিক দলগুলি জানাচ্ছে, প্রস্তাবিত কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় হয়নি। ১১টি জনজাতিকে আদিবাসী তকমা বা তফসিলিভুক্ত করার প্রক্রিয়াও শেষ হয়নি। মেটেনি পাহাড়ের জল সমস্যা থেকে শুরু করে চা বাগানের সমস্যাও। তৃণমূলের দাবি, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বরং একাধিকবার পাহাড়ে গিয়ে উন্নয়নের চেষ্টা করেছেন।

Advertisement

পাহাড়ের এই দাবিগুলি নিয়ে অস্বস্তিতে থাকলেও মুখে রাজ্যকেই দূষছেন বিজেপি নেতারা। দলের উত্তরবঙ্গের অন্যতম পর্যবেক্ষক রথীন বসু বলেন, ‘‘রাজ্যকে বাদ দিয়ে তো কোনও কাজ করা যায় না, সেটা পাহাড়ের আলাদা রাজ্য হোক বা উন্নয়ন। প্রতি ক্ষেত্রে তৃণমূল সরকার অসহযোগিতা করায় তো কাজ করা যায় না।’’ রাজ্যের মন্ত্রী গৌতম দেবের পাল্টা বক্তব্য, ‘‘বিজেপির সব ভাঁওতাবাজি। পাহাড় সমস্যার সমাধান একমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে রাজ্যই করছে।’’

গোর্খা লিগের সাধারণ সম্পাদক প্রতাপ খাতিও বলেন, ‘‘অন্য সমস্যার সমাধানে সময় লাগবে, তা না হয় মানলাম। কিন্তু ১১টি জনজাতি তো পাহাড়, তরাই ও ডুয়ার্স মিলিয়ে আছে। মন্ত্রক, রাজ্য ছাড়পত্র দিয়েছে। ক্যাবিনেটে তা ঝুলে রয়েছে। মোদীজি তো ইচ্ছা করলেই এই স্বীকৃতি দিয়ে দিতে পারতেন।’’ এই পরিস্থিতিতে পাহাড়বাসীকে কী বলেন প্রধানমন্ত্রী, তার দিকেই তাকিয়ে পাহাড়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন