বিবৃতি গুরুঙ্গের

এভারেস্ট হোটেলের ভবন না ভাঙার দাবি

শৈলশহর দার্জিলিঙের প্রাচীন ঐতিহ্যমন্ডিত মাউট এভারেস্ট হোটেলটিকে ভেঙে গুড়িয়ে না দেওয়ার পক্ষে সওয়াল শুরু হয়েছে পাহাড় জুড়ে। বিভিন্ন সোশাল নেটওয়ার্কিং সাইটে এরক সমর্থনে জোর প্রচারও শুরু হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দার্জিলিং শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০১৫ ০২:৩৬
Share:

দার্জিলিঙের মাউন্ট এভারেস্ট হোটেল। —ফাইল চিত্র।

শৈলশহর দার্জিলিঙের প্রাচীন ঐতিহ্যমন্ডিত মাউট এভারেস্ট হোটেলটিকে ভেঙে গুড়িয়ে না দেওয়ার পক্ষে সওয়াল শুরু হয়েছে পাহাড় জুড়ে। বিভিন্ন সোশাল নেটওয়ার্কিং সাইটে এরক সমর্থনে জোর প্রচারও শুরু হয়েছে। ৫০-এর দশকের হোটেলটি সম্প্রতি বিক্রি করে দিয়েছে ওবেরয় গ্রুপ।

Advertisement

নতুন মালিকপক্ষ তা ভেঙে আবাসন, নতুন হোটেল গড়ার পরিকল্পনার কথাও জানিয়েছেন। কিন্তু পুরানো ভবটি না ভাঙার পক্ষে সওয়াল শুরু করেছেন পাহাড়বাসী। সোমবার জিটিএ-র চিফ এক্সিকিউটিভ তথা মোর্চা সভাপতি বিমল গুরুঙ্গও তাতে সওয়াল করেছেন। নিজের ফেসবুক সাইটে সেই মন্তব্য করেছেন গুরুঙ্গ। এমনকি, পুরানো ভবনটিকে বাঁচিয়ে রেখেই নতুন করে কাজ করা দরকার বলে ঘনিষ্ট মহলে জানিয়ে দিয়েছেন গুরুঙ্গ। আর তাতেই কিছুটা হলেও ‘চাপে’ পড়ে গিয়েছেন নতুন মালিক পক্ষ।

এদিন তাঁরা জানিয়েছেন, মাউন্ট এভারেস্টে হোটেলটির এলাকায় আবাসন হবে। তবে হোটেলটির পুরানো ভবন রেখে ভিতরে, বাইরে কীভাবে সংস্কার করে তা নতুনভাবে সামনে আনা যায় তা দেখা হচ্ছে। এদিন বিমল গুরুঙ্গ প্রেস বিবৃতি দিয়ে জানিয়ে দিয়েছে, ভবনটির কোনও অংশ ভাঙার বিপক্ষে জিটিএ। এটি দার্জিলিঙে একটি পুরানো ঐতিহ্যমন্ডিত নিদর্শন। এটি একটি হেরিটেজও বটে। নতুন কাজ করা হলেও পুরানো ভবনটি যাতে তার সঙ্গে সংস্কার করে মানসই করা দরকার। জিটিএ-র বিষয়টিতে লক্ষ্য রাখবে।

Advertisement

মাউন্ট এভারেস্ট হোটেলটি ওবেরয় গ্রুপের কাছ থেকে কিনেছেন পাহাড়ের ব্যবসায়ী ব্রিজমোহন গর্গ। এদিন তিনি বলেন, ‘‘সোশাল মিডিয়ায় যে দাবি উঠেছে তা আমি দেখেছি। আমিও পাহাড়ের বাসিন্দা। আমারও দার্জিলিঙের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক রয়েছে। তবে পুরানো ভবনটির খুব খারাপ অবস্থা। আমরা ইঞ্জিনিয়রদের সঙ্গে কথা বলছি, পুরানো ভবনটি বাঁচিয়ে কীভাবে কাজ করা যায়, তা দেখা হচ্ছে।’’

চলতি মাসের প্রথমে ৫ একর জায়গার উপর থাকা মাউট এভারেস্ট হোটেলটি ব্রিজমোহন গর্গ এবং তাঁর আরও তিন অংশীদার প্রায় ১১ কোটি টাকা দিয়ে ওবেরয় গ্রুপের কাছ থেকে কিনে নিয়েছেন। কলকাতায় ওই গ্রুপের তরফে তা সরকারিভাবে ঘোষণা করে দেওয়া হয়েছে। দার্জিলিঙের গাঁধীরোডে ১৯১৪ সালে হোটেলটি তৈরি করে আরটন স্টিফেন। সেই তিনি হোটেলটির লামকরণ করেন ‘দ্য দার্জিলিং ফ্যামিলি হোটেল’। ১৯৫০ সালে ওবেরয় গ্রুপ হোটেলটি কিনে নেয়। তার তার পরে ১৯৭৮ সালে এক অগ্নিকান্ডের ঘটনাও ঘটে হোটেলটিতে। পরবর্তীতে একটি অংশ খোলা থাকলেও পরে ৮৪ সাল নাগাদ হোটেলটি পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, একসময় এই অঞ্চলের সবচেয়ে ব্যয়বহুল হোটেল ছিল মাউন্ট এভারেস্ট। সাধারণ পযর্টকেরা ছাড়াও পাহাড়ে ছবির শ্যুটিং-এসে তাতে থেকেছেন, দেব আনন্দ, দিলীপ কুমার, আশা পারেখ, রাজেশ খান্না, অমিতাভ বচ্চন, রাজকুমার, কিশোর কুমারের মত সুপারস্টারেরা।

এ দিন সম্পত্তির নতুন মালিকদের অন্যতম ব্রিজমোহনবাবু জানান, আমরা নতুন হোটেলের একই নাম রাখব বলে ঠিক করেছি। ভিতরে রুমগুলিকে বড় করা হবে। গোটা ভবনটিকে সংস্কার করতে হবে। পাশের ফাঁকা এলাকায় অন্য প্রকল্প হাতে নেওয়া হবে। আবাসন প্রকল্পটির দেখতে পুরানো হোটেলটির মত করা যায় কি না তা দেখা হচ্ছে। আগামী চারমাসের মধ্যে সব চূড়ান্ত হয়ে যাবে।

গুরুঙ্গের প্রেস বিবৃতিতে এদিন আরও জানানো হয়েছে, হোটেলটি যেভাবে বেসরকারি একটি সংস্থার লোকেরা নিয়ে চালানোর কথা বলছে, তা খুবই ভাল উদ্যোগ। কিন্তু তা করতে গিয়ে পুরানো কিছু যাতে বদল না হয়, সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন