ক্ষোভ ছড়াল নার্সিংহোমে

শনিবার রাত ১২টা নাগাদ শ্বাসকষ্ট নিয়ে দীপেশবাবুকে ভর্তি করানো হয়েছিল। রোগীর পরিবারের অভিযোগ, চিকিৎসক সময় মতো ছিলেন না। রোগীর পরিস্থিতি খারাপ জানিয়ে বারবার ভেন্টিলেটরে রাখার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছিল। অথচ চিকিৎসা ঠিক মতো হচ্ছিল না। বিভিন্ন পরীক্ষা রিপোর্টও করা হয়নি। অথচ তার জন্য টাকা নেওয়া হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০১৭ ০২:২৭
Share:

ভাঙচুর: চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগে নার্সিংহোমে তাণ্ডব। ছবি: স্বরূপ সরকার

রোগীর মৃত্যুতে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে নার্সিংহোমে ভাঙচুর চালাল রোগীর পরিচিতেরা। রবিবার শিলিগুড়ির কাওয়াখালি এলাকায় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের কাছে একটি নার্সিংহোমে ঘটনাটি ঘটে। নার্সিংহোম সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতের নাম দীপেশ চক্রবর্তী (৪০)। বাড়ি থিকনিকাটা এলাকায়। মৃতের পরিবারের তরফে পুলিশে অভিযোগ করার কথাও জানানো হয়। সেই মতো মৃতদেহ এদিন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। উত্তেজিত জনতা লোহার চেয়ার ছুড়ে, আছড়ে কাউন্টারের কাচ, কাচের দরজা, কম্পিউটার ভাঙচুর করে বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়।

Advertisement

শনিবার রাত ১২টা নাগাদ শ্বাসকষ্ট নিয়ে দীপেশবাবুকে ভর্তি করানো হয়েছিল। রোগীর পরিবারের অভিযোগ, চিকিৎসক সময় মতো ছিলেন না। রোগীর পরিস্থিতি খারাপ জানিয়ে বারবার ভেন্টিলেটরে রাখার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছিল। অথচ চিকিৎসা ঠিক মতো হচ্ছিল না। বিভিন্ন পরীক্ষা রিপোর্টও করা হয়নি। অথচ তার জন্য টাকা নেওয়া হয়েছে। তা থেকেই স্পষ্ট চিকিৎসা কী হয়েছে। এদিন রোগীকে তাই অন্য নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এ দিন বেলা ১১টা নাগাদ রোগীকে অন্যত্র নিয়ে যেতে চাইলেও চিকিৎসা সংক্রান্ত নথিপত্র দিতে আরও ৮ ঘণ্টা লাগবে বলে জানানো হয়। তা নিয়েও বচসা হয়। এরপর বেলা সাড়ে তিনটে নাগাদ রোগীকে অন্যত্র নেওয়ার জন্য তোড়জোড় শুরু হয়।

Advertisement

রোগীকে নার্সিংহোম থেকে বার করে আনা হলে শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। ফের ওই নার্সিংহোমের জরুরি বিভাগে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন। এরপরেই রোগীর পরিবারের লোকেরা নার্সিংহোমের বিভিন্ন পরীক্ষা রিপোর্ট কোথায়, চিকিৎসা ঠিক মতো হয়নি তা নিয়ে হইচই, ভাঙচুর শুরু করে। দুপুর থেকে দফায় দফায় রোগীর পরিবারের লোকদের সঙ্গে কথা বলে তাদের বোঝানোর চেষ্টা করেন নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ। মৃতের মামা টিঙ্কু ভট্টাচার্য, পড়শি দেবাশিস রায়রা বলেন, ‘‘চিকিৎসার গাফিলতি তো রয়েছেই। রিপোর্ট কিছুই করা হয়নি। তা হলে কী চিকিৎসা হয়েছে। অথচ এক রাতের জন্য ৪৯ হাজার টাকা বিল করা হয়েছে।’’

নার্সিংহোমের ডিরেক্টর জয়ন্ত শর্মা বলেন, ‘‘রোগীর পরিস্থিতি ভাল ছিল না তা গোড়াতেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। রোগীকে আইসিইউতে পাঠানোর পরে চিকিৎসক এসে ভেন্টিলেটরে রাখতে হবে বলেও জানিয়েছিলেন। কিন্তু রোগীর পরিবার রাজি হয়নি। রোগীকে তারা এখান থেকে অন্যত্র নিয়ে যেতে চান। এই পরিস্থিতিতে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যার কথাও জানানো হয়েছিল।’’ রিপোর্ট না দেওয়া নিয়ে কর্তৃপক্ষের দাবি, রিপোর্ট আসতে কিছু ক্ষেত্রে সময় লাগে। তবে ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা হওয়া মাত্রই চিকিৎসকদের রিপোর্ট জানিয়ে দেওয়া হয় যাতে রোগীর চিকিৎসা চালাতে সুবিধা হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন