বড়দিনের আমেজ শুরু হয়ে গিয়েছে। সান্তা-টুপি মাথায় দিয়ে নিজস্বী-বিলাস বালুরঘাটে। শনিবার। ছবি: অমিত মোহান্ত
টাইগার নাকি শঙ্কর, বড়দিনে এই দ্বন্দ্বে রাজি নন উৎসবে মেতে ওঠা দুই শহরের বাসিন্দারা।
এক দিন শঙ্করের জন্য হলে পরদিন টাইগার। কেউ আবার একই দিনে টাইগার জিন্দা হ্যায় এবং আমাজন অভিযান দুই ছবিই দেখে নেওয়ার পরিকল্পনা করেছেন।
বিবাদ নেই কেক এবং নলেন গুড়ের সন্দেশেও। তাই বড়দিনে সেজে উঠছে মিষ্টির দোকানও। শনিবার থেকেই উৎসবে মেতে উঠেছে শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ি দুই শহরের বাসিন্দারা। উৎসবকে তুঙ্গে নিয়ে যেতে প্রস্তুত দুই শহরের বিভিন্ন রেস্তোরা থেকে মাল্টিপ্লেক্স, কফিশপ থেকে পাড়ার মিষ্টির দোকান।
শিলিগুড়ির বিধান রোডের বেকারিগুলি ঝলমল করছে আলোয়। বড়দিনের জন্য ফি বছর থিম কেক তৈরির শুরু এই বিধানমার্কেটেই। বছর ঘুরলেই ফুটবল বিশ্বকাপ। ফুটবল থিমে এ বছর তৈরি হচ্ছে। ব্যাডমিন্টন তারকা পিভি সিন্ধু এবং সাইনা নেহওয়ালের র্যাকেটও হচ্ছে কেকে।
বেকারিতে থিম, আলোর সাজ বড়দিনে নতুন নয় কিন্তু শহরের একটি মিষ্টির দোকানকে সাজানো হয়েছে ঝলমলে তারা, কাগজে। সান্তা টুপিও ঝোলানো হয়েছে দোকানের দরজার ওপরে। মিষ্টির দোকানে কেক নেই। হাকিমপাড়ার ওই মিষ্টির দোকানের এক কর্মীর কথায়, ‘‘কেক নেই তো কি হয়েছে। বড়দিনে তো সকলে মিষ্টিমুখও করে। তাই আমরাও উৎসবের থেকে বাদ নেই।’’
জলপাইগুড়ির কদমতলার একটি হোটেলের রেস্তোরাতে বড়দিন উপলক্ষে কেকের আয়োজন রাখা হয়েছে। রেস্তোরার মেনুতে কেক নেই তবে, বড়দিনে কাবাব-বিরিয়ানির অর্ডার দেওয়ার পরে কেক মুখে দিতে চাইলে মোটেই নিরাশ করবে না হোটেল কর্তৃপক্ষ। এমনিতেই কন্টিনেন্টাল মেনুর সম্ভার রয়েছে মেনুতে। হোটেলের কর্ণধার সায়ন্তন সরকারের কথায়, ‘‘উৎসব মানে খাওয়াদাওয়া। বাসিন্দারা যাতে রেস্তারার মেনুতেও বড়দিনের আনন্দ খুঁজে পান সে কারণেই কেকের বন্দোবস্ত।’’
কেক থেকে রেস্তোরাঁর প্রস্তুতিতে সাড়া দিতেও মুখিয়ে রয়েছেন সকলে। জলপাইগুড়ির কর্পোরেশন রোডের বাসিন্দা দেবজ্যোতি বাগচী ‘টাইগারে’র ফ্যান। নিজেও শরীরচর্চা করেন। তবে বড়দিনের ছুটিতে শঙ্করের ডাকও ফেরাতে পারছেন না। দেবজ্যোতির কথায়, ‘‘অনেক জায়গায় শুনছি টাইগার বনাম আমাজন এমন বির্তক হচ্ছে। আমি দুয়েতেই আছি। ছুটির দিন বলে কথা টাইগার থেকে শঙ্কর, বিরিয়ানি থেকে কেক সবই থাকবে।’’ এমন মনোভাব অনেকেরই সে কারণেই দুই সিনেমার শো’তেই উপচে পড়ছে ভিড়। শিলিগুড়ির গাদাপুরের একটি হলে দিনে ৫ বার আমাজন অভিযান চলছে। সিনেমা হলের ম্যানেজার শুভদীপ বসুর কথায়, ‘‘হিন্দি ছবির দর্শকসংখ্যা বেশি থাকে। তবে বড়দিনের আগে কিন্তু বাঙালির শঙ্কর জোর পাল্লা দিচ্ছে সলমন খানের সঙ্গে। দুই ছবিতেই ভিড় হচ্ছে প্রায় একই।’’