ধর্ষণ মামলা তুলতে থানার ‘সালিশি’

থানায় সালিশি সভা ডেকে ধর্ষণের মামলা ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ উঠল পুলিশ ও শাসক দলের এক পঞ্চায়েত সদস্যের বিরুদ্ধে।

Advertisement

মেহেদি হেদায়েতুল্লা

চাকুলিয়া শেষ আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০১৮ ০৩:৩৩
Share:

প্রতীকী ছবি।

থানায় সালিশি সভা ডেকে ধর্ষণের মামলা ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ উঠল পুলিশ ও শাসক দলের এক পঞ্চায়েত সদস্যের বিরুদ্ধে।

Advertisement

গত ২ সেপ্টেম্বর সন্ধেয় উত্তর দিনাজপুর জেলার চাকুলিয়ায় নবম শ্রেণির এক ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। ছাত্রীটির পরিবারের অভিযোগ, গত ২ সেপ্টেম্বর ওই কিশোরী সন্ধে নাগাদ বাড়ির কিছুটা দূরে শৌচকর্ম সারতে গিয়েছিল। ফেরার পথে দুই যুবক একা পেয়ে তাকে রাস্তার পাশে একটি জমিতে নিয়ে যায়। সেখানে এক যুবক তাকে ধর্ষণ করে। নির্যাতিতা বাড়িতে গিয়ে ঘটনাটি জানায়। এরপর থানায় একাধিকবার অভিযোগ জানাতে গেলে পুলিশ অভিযোগ নেয়নি বলে পরিবারের বক্তব্য। অভিযোগ, অভিযুক্তের বিরুদ্ধে মামলা না করার জন্য বারবার চাপ সৃষ্টি করেন স্থানীয় নেতা ও পঞ্চায়েত সদস্য মুজিবুল হক। পুলিশিও একই ভাবে চাপ দেয় ওই পরিবারের উপর।

পরিবারটি জানিয়েছে, এরপর গত ২০ সেপ্টেম্বর থানায় এক পুলিশ অফিসারের উপস্থিতিতে সালিশি সভা বসে। সেখানে মুজিবুল এবং অভিযুক্তের পরিবারের লোকজন ছিলেন। সেই সভাতেই নিদান দেওয়া হয়, কোনও মামলা হবে না। ধর্ষণের ক্ষতিপূরণ হিসেবে অভিযুক্তের পরিবারকে ৩৫ হাজার টাকা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। ওই নিদান মানতে চাননি নির্যাতিতা পরিবারের লোকজন। গত ২৪ সেপ্টেম্বর ওই কিশোরীর বাবা চাকুলিয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। রবিবার নির্যাতিতার মা জানিয়েছেন, সালিশি সভার সিদ্ধান্ত না মানায় তাঁদের উপর মানসিক ভাবে চাপ সৃষ্টি করছে গ্রামের কিছু লোক। তাঁদের মেয়ের জীবন নষ্ট করে দেওয়া হবে বলে হুমকিও দেওয়া হচ্ছে। মিথ্যা বদনাম রটানো হছে।

Advertisement

থানায় সালিশি সভার কথা পুলিশ অস্বীকার করেছে। চাকুলিয়া থানার ওসি দিলীপ রায় সালিশি সভার কথা অস্বীকার করে বলেন, ‘‘ওই নির্যাতিতার বাবার অভিযোগে ধর্ষণের মামলা রুজু করা হয়েছে। অভিযুক্তরা পলাতক। ঘটনার তদন্ত চলছে।’’ তবে পঞ্চায়েত সদস্য মুজিবুল অবশ্য বিষয়টি স্বীকার করে জানান, অভিযুক্ত ছেলের বাবা এবং মেয়ের বাবা-মাকে সঙ্গে নিয়ে চাকুলিয়া থানার এক পুলিস অফিসারের উপস্থিতিতে সভা হয়েছিল। মেয়ের মা অভিযুক্ত যুবকের সঙ্গে মেয়ের বিয়ে দেওয়ার কথা বলেছিলেন। কিন্ত মেয়ে নাবালিকা বলে তাঁরা এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করেননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন