প্রতীকী ছবি।
তিনি এখন জেলায় নেই। তাতে কী? তাঁর নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগের শেষ নেই। একটু পরপরই তাঁর নিরাপত্তারক্ষীদের সেলফোন বেজে উঠছে। তিনি কেমন আছেন? কোথায় আছেন? কী করছেন? পইপই করে সব জানা যাচ্ছে। উত্তর শুনে খানিক যেন নিশ্চিন্ত।
তিনি উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী তথা কোচবিহারের নাটাবাড়ি বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। তাঁর খোঁজ রাখছে স্থানীয় পুলিশ। কড়া নজর রয়েছে পুলিশ সুপার অভিষেক গুপ্তর। কৃষ্ণগঞ্জে তৃণমূল বিধায়ককে খুনের পরে শাসক দলের নেতাদের উপরে নজরদারি বাড়িয়েছে পুলিশ। বিশেষ করে বেড়েছে যে ক’জন সম্পর্কে, তাঁদের অন্যতম রবিবাবু।
তাঁর অবশ্য সে সব নিয়ে ‘কুছ পরোয়া নেহি’ মনোভাব। স্পষ্টতই বলেন, “বিজেপি খুনের রাজনীতি শুরু করেছে। একজন নিরীহ মানুষ আমাদের বিধায়ক। তাঁকে গুলি করে মেরেছে বিজেপির দুষ্কৃতীরা। এর জবাব মানুষই দেবেন।” আর কোচবিহার জেলা পুলিশের এক কর্তার কথায়, “নিরাপত্তার বিষয় নিয়ে কারও যাতে কোনওরকম সমস্যা না হয় সে দায়িত্ব আমাদের। তাই আমাদের প্রতি মুহূর্তের খোঁজ রাখতে হচ্ছে।”
নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জের বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাস খুনের ঘটনার পরে ঘুম উবে গিয়েছে পুলিশ-প্রশাসনের। কোচবিহারে আগ্নেয়াস্ত্রের রমরমার কারবারের অভিযোগ দীর্ঘ দিনের। সে সব কথা মাথায় রেখেই ইতিমধ্যেই বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মণ, সাংসদ পার্থপ্রতিম রায় এবং সিতাইয়ের বিধায়ক জগদীশ বসুনিয়ার দেহরক্ষীর সংখ্যা বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
ইতিমধ্যেই নতুন দেহরক্ষীরা তিন জায়গায় কাজ বুঝে নিয়েছেন। রবিবাবু ওয়াই ক্যাটাগরির নিরাপত্তা পান। পাইলট ভ্যানের পুলিশ ছাড়াও তাঁর সঙ্গে একটি গাড়িতে এক অফিসার সহ বন্দুকধারী পাঁচ জন পুলিশ কর্মী থাকেন। এ ছাড়াও তাঁর দু’জন দেহরক্ষী রয়েছেন। অনেকটা একইরকম নিরাপত্তা পান বনমন্ত্রীও। তার পরেও মন্ত্রী ও বিধায়কদের নিরাপত্তায় আরও জোর দিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ কর্তারা প্রত্যেকটি থানাকে সতর্ক করে দিয়েছে মন্ত্রী ও বিধায়কের অনুষ্ঠান থাকলেই সেখানে পুলিশি টহল আলাদা ভাবে রাখতে হবে। দিন কয়েক ধরেই উত্তরবঙ্গ সফরে রয়েছেন রবিবাবু। গত ৯ ফেব্রুয়ারি তিনি সফর শুরু করেছেন। ধূপগুড়ি, শিলিগুড়ি, উত্তর দিনাজপুর হয়ে তিনি বর্তমানে মালদহে। সব জায়গাতেই নানা প্রকল্পের উদ্বোধন করছেন। সেখানে থেকে তিনি কলকাতায় যাবেন। তাঁকে ঘিরে কয়েক হাজার মানুষ জড়ো হয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন জায়গায়। এই অবস্থায় কোনও ভাবেই নিরাপত্তায় ফাঁক রাখতে চাইছেন না পুলিশ কর্তারা।