ব্লু হোয়েল কাণ্ডের তদন্তে নেমে স্কুল ছাত্রের বাড়ির লোকজনের সঙ্গে দীর্ঘ কথাবার্তা বললেও এখনও কোনও মামলা রুজু করছে না পুলিশ।
পুলিশ সূত্রের খবর, যে মোবাইল থেকে খেলা হয়েছিল, তা না পাওয়া গেলে মামলাটি ধোপে টিকবে না। সে জন্য বুধবার সকাল থেকে মোবাইলটি হাতে পাওয়ার চেষ্টা করেছেন তদন্তকারীরা। শিলিগুড়ি সাইবার অপরাধ বিভাগের অফিসাররা জানান, প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, শুধু ওই ছাত্র নয়, আরও কিছু পড়ুয়া ব্লু হোয়েলের মতো মারণ খেলার ব্যাপারে উৎসাহী। ছাত্রের পরিচিত বা বন্ধুদের মধ্যেও কেউ এমন খেলায় মেতেছে কি না, তা জানার চেষ্টা করা হয়েছে। পুলিশ ভেঙে ফেলা ফোনটি জুড়ে কোনও তথ্য সংগ্রহ করা যায় কি না, সেই চেষ্টা করছে। ওই পরিবারের কাছে মারণ নেশার বিষয়টি জানাজানি হতেই ছাত্রটির বাবা তা ভেঙে ফেলেন বলে অভিযোগ। ফোনটি থেকে তথ্য নেওয়ার চেষ্টা শুরু হয়েছে।
শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনার নীরজ কুমার সিংহ বলেন, ‘‘সাইবার থানা তদন্ত শুরু করেছে। ওই ছাত্র তো রক্ষা পেয়েছে, কিন্তু আরও কেউ তো এই ধরনের খেলায় জড়িত থাকতে পারে। তা দেখা দরকার। এর জন্য সচেতনতা বাড়ানোর প্রয়োজন রয়েছে।’’ আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে শহরের বিভিন্ন স্কুল ও কলেজে অনলাইন গেম এবং সাইবার ক্রাইম নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধিতে কর্মশালা করার কথাও ভাবছে পুলিশ।
সম্প্রতি শিলিগুড়ির একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের ছাত্র মারণ খেলায় ঝুঁকে আত্মহত্যা করতে গিয়েছিল বলে পরিবার সূত্রে দাবি। শেষ মুহূর্তে তার বাড়ির লোকজন ঘটনাটি জানতে পেরে যায়। তার পরে তাকে আত্মহত্যা করা থেকে আটকায় সকলে। পরিবারের দাবি, সেই সময়ে রাস্তায় ধারে বসে কাঁপছিল ছেলেটি। পরে সে জানায়, অনলাইন ব্লু হোয়েল খেলার সময় তাকে রাস্তায় ট্রাকের নিচে শুয়ে সেলফি নেওয়ার চ্যালেঞ্জ দেওয়া হয়। বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ করার জন্য পরিবারের লোকজন আইনজীবী রতন বণিকের দ্বারস্থ হন। সেখান থেকে তা স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছায়।
পরে জানা যায়, স্কুলে ঢোকার আগে স্কুলবাস থেকে নেমে দিনভর গেম খেলে, ঘোরাঘুরি করে ওই গাড়িতেই বাড়ি ফিরত ছেলেটি। ওই বাসের চালক ও খালাসিকে স্কুল থেকে সাসপেন্ডও করা হয়। আইনজীবী রতন বণিক বলেন, ‘‘ছাত্রটির ভবিষ্যৎ রয়েছে। পুলিশ তার সঙ্গে কথাও বলেছে। ছেলেটিকে সুস্থ ও স্বাভাবিক পরিবেশে রাখা হচ্ছে যাতে সে দ্রুত এই মানসিক ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে পারে।’’ একই সঙ্গে তাঁর দাবি, ‘‘আরও কেউ এই ধরনের গেম খেলছে কি না, তা পুলিশ খতিয়ে দেখুক।’’