পুলিশের সঙ্গে তর্কে বিজেপির জেলা সম্পাদক অর্জুন দেবনাথ। নিজস্ব চিত্র
আলিপুরদুয়ার শহরে মঙ্গলবার যে ভাবে লকডাউন ভাঙা হয়েছিল, তার পুনরাবৃত্তি যেন বুধবার না হয়। পুলিশের কাছে নির্দেশ ছিল এমনই। এ দিন সকাল থেকে পুলিশ শক্ত হাতে মাঠে নামায় জেলা জুড়ে লকডাউন সফলই বলা যায়। শহর এবং শামুকতলা, বারবিশা, কামাখ্যাগুড়ি ,ফালাকাটা, কালচিনি যেখানেই লকডাউন ভাঙার চেষ্টা হয়েছে সেখানেই পুলিশ রুখে দাঁড়িয়েছে।
এ দিন অযোধ্যায় রামমন্দিরের ভূমিপুজো উপলক্ষে জেলার বিভিন্ন জায়গায় পুজো ও যজ্ঞের আয়োজন হয়েছিল। লকডাউনের স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করায় বিজেপির জেলা সম্পাদক অর্জুন দেবনাথ-সহ তিনজন গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শামুকতলা থানার খাপসাডাঙ্গা বাজারে রামপুজো ও যজ্ঞের আয়োজন করা হয়। সেখানে লকডাউন ভঙ্গ করে জমায়েত করার অভিযোগে পুলিশ ওই তিনজনকে গ্রেফতার করে। অন্যদিকে, আলিপুরদুয়ার থানার পলাশতলি গ্রামে পুজো এবং যজ্ঞের প্রস্তুতি চলছিল। সেখানে পুলিশ গিয়ে অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেয় এ দিন। পুলিশ জানিয়েছে, লকডাউনে স্বাস্থ্য বিধি ভঙ্গ করার অভিযোগে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বিজেপির আলিপুরদুয়ার জেলা সাধারণ সম্পাদক সুমন কাঞ্জিলাল বলেন, “পলাশতলি এবং চাপানি গ্রামে আমাদের দলীয় কোনও কর্মসূচি ছিল না। দলীয় নির্দেশ রয়েছে বাড়িতে বাড়িতে শঙ্খধ্বনি এবং প্রদীপ জ্বালানো। এই দিনটিকে আমরা যাতে উদযাপন না করতে পারি সেজন্য রাজ্য সরকার আজ লকডাউন করেছে। পুলিশ দিয়ে পুজো বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। মানুষের ধর্মীয় ভাবাবেগকে আঘাত করা হচ্ছে।” যদিও করোনা আবহে গেরুয়া শিবিরের এই কর্মসূচি নিয়ে কটাক্ষ বিরোধীদের। তৃণমুলের আলিপুরদুয়ার জেলা সভাপতি মৃদুল গোস্বামী বলেন, “যে সময় করোনা দেশ জুড়ে ভয়াবহ আকার নিয়েছে, মৃত্যুর মিছিল চলছ, সেই সময় ধর্মীয় সুড়সুড়ি দিয়ে রাজনীতি করা হচ্ছে।”
এ দিন আলিপুরদুয়ার শহরে এবং দুই-একটি জায়গায় টটো, মোটরবাইক রাস্তায় দেখা গেলেও পুলিশ দেখে অলিগলি দিয়ে পালিয়ে যান সেই আরোহীরা। আলিপুরদুয়ার ডিআরএম চৌপথিতে পুলিশের অভিযান চালিয়ে বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করে। এ দিন শুধু আলিপুরদুয়ার শহরে লকডাউন ভঙ্গ করার অভিযোগে ১৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এছাড়া, শামুকতলায় ১৫, কুমারগ্রামে ২০, ফালাকাটায় ১২, কালচিনিতে ৮ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
এ দিন লকডাউন উপেক্ষা করে কালচিনির সাঁতালিতে বাইক র্যালি বের করেন কিছু যুবক। তাঁদের আটকে দেয় পুলিশ। তিনজনকে পরে গ্রেফতার করা হয়। ধৃতেরা বিজেপির কর্মী বলে জানা গিয়েছে।