নিজেদের ডিগ্রি যাচাই করতে গিয়ে গ্রেফতার হলেন দুই ছাত্র। বিহারের তিলকা মাঝি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই দুই ছাত্রের বাড়়ি পশ্চিমবঙ্গে। ভাগলপুর পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম রিজাউনুল হক এবং নুরুজ্জামান। রিজাউনুল মালদহ জেলার দৌলতপুরের বাসিন্দা। নুরুজ্জামানের বাড়়ি বৈষ্ণবনগর থানা এলাকায়। রিজাউনুল ভাগলপুর এমএম কলেজের ছাত্র। নুরুজ্জামান পড়়তেন স্থানীয় মারোয়ারি কলেজে। পুলিশ আজ স্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয় থানায় এফআইআর দায়ের করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। মালদহ জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই দুই যুবকের পরিবারের লোকজনের তরফে দাবি করা হয়েছে, তাঁরা নির্দোষ। একজন দালালের খপ্পরে পড়ে তাঁরা ফেঁসে গিয়েছেন বলে বাড়ির লোকজন ও পড়শিদের কয়েকজনের দাবি। তবে দু’টি পরিবারের কাছে বিহার পুলিশের তরফে কোনও খবর দেওয়া হয়নি বলে দাবি করা হয়েছে।
প্রাথমিক তদন্তে বিহার পুলিশ জানতে পেরেছে, নুরুজ্জামান ২০০৯ সালে মারোয়ারি কলেজে বিএ ইংরেজি অনার্সে ভর্তি হন। একই বিষয় নিয়ে রিজাউনুল এমএম কলেজে ভর্তি হয়েছিলেন ২০১০ সালে। পরপর পরীক্ষা দিলেও দু’জনের কেউই উত্তীর্ণ হতে পারেননি বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। অনুত্তীর্ণ হওয়ার পরেই দুই ছাত্র স্থানীয় এক ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তাঁর নামও এই দু’জন পুলিশকে জানিয়েছেন। সেই ব্যক্তি রিজাউনুলের কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা এবং নুরুজ্জামানের কাছ থেকে আট হাজার টাকা নিয়ে বিএ ইংরেজি অনার্সের ডিগ্রি দিয়ে দেন। পুলিশ ওই ব্যক্তির খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মীরাও এই চক্রে জড়়িত থাকতে পারে বলে পুলিশের অনুমান।
পুলিশের জেরায় ধৃতেরা জানিয়েছেন, জিতেন্দ্র সিংহ তোমরের ডিগ্রি জাল হওয়ার খবর সংবাদ মাধ্যমে দেখে তাঁরা ভাগলপুরে আসেন। কেননা একই বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি রয়েছে তাঁদেরও। শংসাপত্র যাচাই করাতে গিয়েই সমস্যা তৈরি হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা বিভাগের কর্মচারীরা প্রথমে তাঁদের কার্যত তাড়়িয়ে দেন। বারবার অনুরোধ করায় শংসাপত্র নিয়ে টিআর-এর সঙ্গে মিলিয়ে দেখেন। তাতেই জানা যায়, দু’জনেই পরীক্ষায় কৃতকার্য হতে পারেননি। অথচ শংসাপত্রে দেখা যাচ্ছে দু’জনেই প্রথম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হয়েছেন।
এরপরে পরীক্ষা বিভাগের কর্মচারীরা বিষয়টি পরীক্ষা নিয়ামক অরুণকুমার সিংহকে জানান। দুই ছাত্রকে আটকে রেখে অরুণকুমার সিংহ উপাচার্যকে বিষয়টি বলেন। উপাচার্যের তরফে ওই দুই ছাত্রের বিরুদ্ধে প্রোক্টর বিলক্ষণ রবিদাসকে থানায় এফআইআর করার নির্দেশ দেওয়া হয়। এফআইআর করার পরে পুলিশ গিয়ে দু’জনকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়।