প্রতীকী ছবি।
ভোটের মুখে নাকা তল্লাশিতে উদ্ধার হল নগদ ২৩ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা। সোমবার দুপুরে দক্ষিণ দিনাজপুরের কুমারগঞ্জ থানার বরাহার মোড়ের ঘটনা। বেআইনি ভাবে ওই টাকা নিয়ে যাওয়ার অভিযোগে দুই যুবককে পুলিশ আটক করেছে। পেশায় লটারি বিক্রেতা ধৃত জীবন সাহা এবং প্রতীক সাহা বাইকে করে কুমারগঞ্জ থেকে বালুরঘাটের দিকে আসছিল। বাজেয়াপ্ত ওই টাকা তাঁরা লটারি থেকে পেয়েছেন বলে ধৃতদের দাবি।
পুলিশ সূত্রের খবর, এ দিন দুপুর ১২টা নাগাদ কুমারগঞ্জ থানার নাকা তল্লাশির সময় পুলিশ লটারির টিকিটের ব্যাগ থেকে ওই টাকা বাজেয়াপ্ত করে। ঘটনাস্থলে এএসটি (ট্যাফিক সার্ভেল্যান্স টিম) গিয়ে তদন্ত শুরু করেছে। বাজেয়াপ্ত ২৩ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা নির্বাচনী ক্যাশ স্ক্রিনিং কমিটির মাধ্যমে জেলা ট্রেজারি দফতরে জমা দেওয়া হবে বলে প্রশাসন জানিয়েছে। ভোটের মুখে এত বড় অঙ্কের নগদ টাকা লেনেদেনের ঘটনায় চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, রবিবার বিকেলে কুমারগঞ্জের গোপালগঞ্জ বালুপাড়ার বাসিন্দা এক লটারি টিকিট বিক্রেতা সুকুমার সরকারের বাড়িতে গিয়ে জীবন ও প্রতীক ৬০০ টাকা দিয়ে অবিক্রিত সমস্ত লটারির টিকিট কিনে নেন। অভিযুক্তদের দাবি, ইন্টারনেট থেকে তারা এর আগেই জানতে পারে ওই সিরিজের টিকিটেই ৩০ লক্ষ টাকা প্রাইজ বাঁধা ছিল। এ দিকে প্রাইজের খবর আগে থেকে জেনে ওই দু’জন কৌশলে তাঁর অবিক্রিত টিকিট কিনে নিয়েছেন জেনে সুকুমার প্রাইজমানির অংশ দাবি করেন। বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হয়ে যায়। এ দিকে বৈধ উপায়ে প্রাইজের টাকা হাতে পেতে বেশ কয়েক দিন সময় লেগে যাবে। তাই দ্রুত নগদ টাকা পেতে অভিযুক্তরা গোপনে স্থানীয় এক চোরাকারবারীর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তার কাছে টিকিট বেচে ৩০ লক্ষ টাকার বদলে ২৩ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা নগদ হাতে পেয়ে যান বলে জানান তাঁরা।
এ দিন ব্যাগের ভিতরে ওই টাকা রেখে তার উপরে লটারির টিকিট সাজিয়ে বাইক নিয়ে তাঁরা বালুরঘাটের দিকে রওনা দেন বলে অভিযোগ। ওই সময় কুমারগঞ্জ-বালুরঘাট রাজ্য সড়কে বরাহার মোড়ের কাছে পুলিশ টাকা উদ্ধার করে। ওই সময় বুথ ভিজিটে বেরিয়ে কুমারগঞ্জের বিডিও দেবদত্ত চক্রবর্তী, যুগ্ম বিডিও খেম সুন্দর মণ্ডল, জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দেবাশিস নন্দী অবৈধ টাকা উদ্ধারের খবর পান।
বিডিও বলেন, ‘‘লটারিতে ওই টাকার পুরস্কার বাধা থাকার পরও কেন সরকারি নিয়ম মেনে বৈধ উপায়ে টিকিট জমা দিয়ে টাকা সংগ্রহের পথে না গিয়ে অবৈধ ভাবে অভিযুক্তরা ওই টাকা পেল, খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ সোমবার কুমারগঞ্জের কোনও শাখা ব্যাঙ্কে ওই টাকা তোলার তথ্য মেলেনি। জেলা পুলিশ সুপার নগেন্দ্রনাথ ত্রিপাঠী বলেন, নির্বাচনী ক্যাশ স্ক্রিনিং কমিটির মাধ্যমে বাজেয়াপ্ত করা টাকা জেলা ট্রেজারি দফতরে জমা দেওয়া হবে। তদন্ত শুরু হয়েছে।