পুলিশকে মার পুলিশেরই

বৃহস্পতিবার রাতে হাসপাতালে শুয়ে হরিগোপাল অভিযোগ করেন, তিনি একটি বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে তাঁর বছর তিরিশের ছেলে অঙ্কুশকে মোটরবাইকের বসিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০১৮ ০৪:৪৯
Share:

পুলিশকর্মীকে রাস্তায় ফেলে বেধড়ক মারধর করার অভিযোগ উঠেছে কর্তব্যরত পুলিশকর্মীদেরই বিরুদ্ধে। প্রতীকী ছবি।

নাকাতল্লাশির সময় সাধারণ পোশাকে থাকা এক পুলিশকর্মীকে রাস্তায় ফেলে বেধড়ক মারধর করার অভিযোগ উঠেছে কর্তব্যরত পুলিশকর্মীদেরই বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার রাত ১১টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে রায়গঞ্জ শহরের বিবেকানন্দ মোড় এলাকায়। প্রহৃত পুলিশকর্মীর নাম হরিগোপাল সাহা। বীরনগরের বাসিন্দা হরিগোপাল রায়গঞ্জের কসবায় রাজ্য চতুর্থ সশস্ত্র আরক্ষাবাহিনীর গাড়িচালকের পদে কর্মরত। মারধরে জখম তাঁকে রাতেই রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।

Advertisement

বৃহস্পতিবার রাতে হাসপাতালে শুয়ে হরিগোপাল অভিযোগ করেন, তিনি একটি বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে তাঁর বছর তিরিশের ছেলে অঙ্কুশকে মোটরবাইকের বসিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। তাঁর মাথায় হেলমেটও ছিল। বিবেকানন্দ মোড়ে নাকা তল্লাশির জন্য কর্তব্যরত পুলিশকর্মীরা তাঁকে দাঁড় করান। বাইক থামিয়ে তিনি জানান, তিনিও পুলিশে কর্মরত। কিন্তু পরিচয় দিলেও ওই পুলিশকর্মীরা তা শুনতে চাননি। হরিগোপাল পুলিশকর্মীদের জিজ্ঞাসা করেন, তাঁরা কনস্টেবল না সিভিক ভলান্টিয়ার। এরপরেই পুলিশকর্মীরা তাঁর দেহ তল্লাশির নামে মারধর শুরু করেন। তাঁর মাথার পিছনে আঘাত করলে তিনি রাস্তায় পড়ে যান। পুলিশকর্মীরা তাঁকে লাথি ও ঘুষি মারেন বলে অভিযোগ। কিছুক্ষণ পর টহলদারিতে থাকা পুলিশকর্মীদের সাহায্যে বাবাকে রক্তাক্ত অবস্থায় রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করান অঙ্কুশ। হরিগোপালের থুঁতনি ফেটে গিয়েছে। তাঁর মাথা, দুই পা, কোমর, পিঠ-সহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত লেগেছে। শুক্রবার সকালে হাসপাতাল থেকে তাঁকে ছাড়া হয়।

অভিযুক্ত পুলিশকর্মীদের বিরুদ্ধে রায়গঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করবেন বলে রাতে হাসপাতালে জানিয়েছেন হরিগোপাল। পুলিশকর্মীদের বিরুদ্ধে পুলিশকে মারধরের অভিযোগের কথা জানাজানি হতেই শহর জুড়ে চাঞ্চল্য ছড়ায়। মৌখিক ভাবে অভিযোগও পৌঁছয় জেলার পুলিশ আধিকারিকদের কাছে। এর পরেই এদিন সকালে রায়গঞ্জ থানায় হরিগোপালের ছেলে এবং আত্মীয়দের ডেকে দীর্ঘক্ষণ বৈঠক করেন রায়গঞ্জের ডিএসপি প্রসাদ প্রধান ও রায়গঞ্জ থানার আইসি সুরজ থাপা। বিজেপি ও কংগ্রেসের অভিযোগ, পুলিশ হরিগোপাল ও তাঁদের আত্মীয়দের উপর চাপ সৃষ্টি করে বিষয়টি মিটমাট করে নিতে বাধ্য হয়েছে। এদিন হরিগোপাল ও তাঁর ছেলে অঙ্কুশ সহ তাঁদের আত্মীয়রা এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

Advertisement

উত্তর দিনাজপুরের পুলিশ সুপার সুমিত কুমারের দাবি, ‘‘আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করতে এবং বেআইনি গাড়ি ও বাইক চালকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে রাতে বিবেকানন্দ মোড়ে নাকাতল্লাশি চলছিল। সেইসময় হরিগোপালের সঙ্গে কর্তব্যরত পুলিশকর্মীদের কথা কাটাকাটি ও গোলমাল হয়। হরিগোপালবাবু নিজেও একজন পুলিশকর্মী। তাঁকে মারধর বা তাঁর উপর চাপ সৃষ্টির অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে।’’

পুলিশের এক কর্তার পাল্টা দাবি, কর্তব্যরত পুলিশকর্মীরা মেজাজ হারিয়ে ফেললে গোলমাল বাঁধে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন