শিশু-মৃত্যুতে জেরা মাকে

দ্বিতীয় শ্রেণির পড়ুয়া দেবু শুক্রবার রাত ৮টায় বাড়ি থেকে বেরিয়ে আর ফেরেনি। পুলিশের সন্দেহ, রাতেই তাকে খুন করা হয়েছে। মনসাপুজোর রাতে কেউ দেবুকে টোপ দিয়ে বাগানে নিয়ে গিয়েছিল কি না, তা নিয়েও তদন্তের দাবি তুলেছেন বাসিন্দারা। পাশাপাশি, অসামাজিক কিছু দেখে ফেলার জেরেই এই ঘটনা কি না তারও তদন্ত হচ্ছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ১৯ অগস্ট ২০১৮ ০৬:১৫
Share:

শোকার্ত: শিশু খুনের ঘটনায় থমথমে এলাকা। নিজস্ব চিত্র

সাত বছরের শিশুকে উলঙ্গ করে গাছের সামনে বসিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে খুনের অভিযোগ উঠেছে। শনিবার সকালে রায়গঞ্জ থানার পশ্চিম বোগ্রাম এলাকার একটি কদম বাগান থেকে ওই দেহটি উদ্ধার হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত দেবু রায়ের বাড়ি ঘটনাস্থল থেকে ৫০০ মিটার দূরে রায়পাড়ায়। মৃত শিশুটির পাশে একটি আধখাওয়া আপেল, ১০ টাকার নোট ও কিছু কাচের চুড়ির টুকরো মিলেছে।

Advertisement

দ্বিতীয় শ্রেণির পড়ুয়া দেবু শুক্রবার রাত ৮টায় বাড়ি থেকে বেরিয়ে আর ফেরেনি। পুলিশের সন্দেহ, রাতেই তাকে খুন করা হয়েছে। মনসাপুজোর রাতে কেউ দেবুকে টোপ দিয়ে বাগানে নিয়ে গিয়েছিল কি না, তা নিয়েও তদন্তের দাবি তুলেছেন বাসিন্দারা। পাশাপাশি, অসামাজিক কিছু দেখে ফেলার জেরেই এই ঘটনা কি না তারও তদন্ত হচ্ছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

দেবুর বাবা বাদল দিনমজুর। মা বিমলা গৃহবধূ। তাঁদের এক ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে দেবু বড়। উত্তর দিনাজপুরের পুলিশ সুপার অনুপ জায়সবাল বলেন, ‘‘মৃতের কাকা অজ্ঞাতপরিচয় এক বা একাধিক দুষ্কৃতীর বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ করেছেন। আমরা নিহতের মা-কে জেরা করছি। বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তরে তিনি অসংলগ্ন কথা বলছেন। তাই ঘটনা পরম্পরা স্পষ্ট করতেই তাঁকে জেরা চলছে।’’ পুলিশ জানায়, ওইদিন সন্ধ্যার পরে তিনি অনেকটা সময় কোথায় ছিলেন তা নিয়ে সদুত্তর দিতে পারেননি বলে পুলিশের দাবি। রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালে ময়নাতদন্তে ফাঁস দিয়ে খুনের ব্যাপারে স্পষ্ট প্রমাণ মিলেছে বলে প্রাথমিক ভাবে চিকিৎসকদের সন্দেহ। তবে শিশুটির গলায় তারই জামা পেঁচিয়ে খুন করা হয়েছিল বলেও সন্দেহ। কিন্তু, দেবুর প্যান্টের হদিস মেলেনি।

Advertisement

গত শুক্রবার দুপুরে বাড়িতে মনসাপুজো করেছিলেন বিমলা। দেবুর জ্যাঠা কার্তিকের দাবি, ‘‘ওইদিন বিকেলে বাড়িতে পুজো চলাকালীন দেবু নিখোঁজ হয়ে যায়। রাতভর খোঁজাখুজি করেও ভাইপোকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। ভাইপোকে কদমবাগানে নিয়ে গিয়ে খুন করা হতে পারে, তা আমরা ভাবতে পারিনি। তাই তাকে খুঁজতে ওই বাগানে যাইনি। ভাইপোর মৃত্যুর সঙ্গে মনসাপুজো বা তুকতাকের কোনও সম্পর্ক নেই বলে আমাদের মনে হয়।’’

এ দিন সকালে ওই বাগানের কাছে ঘাস কাটতে গিয়ে গাছের সঙ্গে নগ্ন শিশুর মৃতদেহ দেখে এক মহিলা আর্তনাদ করে অজ্ঞান হয়ে যান। এর পরেই ভিড় উপচে পড়লে বাড়ির লোকজন গিয়ে শনাক্ত করেন দেহটি। পুলিশের দাবি, জেরায় বিমলার বক্তব্যে অসঙ্গতি পাওয়া গিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন