টিভি দেখেই কি আত্মহত্যা শিশুর

জলপাইগুড়ির অসম মোড়ের কাছে মুন্ডা বস্তির ওই শিশুর বাড়ির লোকেদের দাবি, খেলার ছলে টিভি সিরিয়ালের কিছু নকল করতে গিয়ে এই কাণ্ড ঘটিয়েছে শিশুটি৷

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০১৭ ০১:০৩
Share:

প্রতীকী ছবি।

সিরিয়াল থেকে শুরু করে সিনেমা, টিভিতে যা দেখানো হত, সবই দেখত দশ বছরের শিশুকন্যাটি৷ রবিবার নিজের ঘর থেকে তার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছে। জলপাইগুড়ির অসম মোড়ের কাছে মুন্ডা বস্তির ওই শিশুর বাড়ির লোকেদের দাবি, খেলার ছলে টিভি সিরিয়ালের কিছু নকল করতে গিয়ে এই কাণ্ড ঘটিয়েছে শিশুটি৷ তবে এই মৃত্যুর পিছনে অন্য কারণ রয়েছে কি না, তার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ৷ পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শিশুটির নাম সাগরিকা দাস (১০)৷ বাড়ি গৌরীহাটের ডাঙাপাড়া এলাকায়৷ কিন্তু বছর ছয়-সাত থেকে মুন্ডা বস্তিতে শ্বশুরবাড়িতে পরিবার সহ থাকতেন সাগরিকার বাবা বিশ্বজিৎ দাস৷ যিনি শান্তিপাড়ার কাছে একটি দোকানে লরিতে সিমেন্ট ও লোহার রড তোলার কাজ করেন৷ বিশ্বজিৎবাবুর স্ত্রী, অর্থাৎ ওই শিশু কন্যার মা সান্ত্বনা দাস দিন তিনেক হল রাজমিস্ত্রির কাজে যোগ দিয়েছেন৷

Advertisement

সাগরিকার পরিবারের এক জন জানিয়েছেন, এ দিন সকালে সে টিভিতে একটি হিন্দি সিনেমা দেখছিল। সেখানে একটি বাচ্চা মেয়ের বিস্ফোরণে মৃত্যু হয়। সেই দৃশ্য দেখার পরে সাগরিকা বিভিন্ন জনকে বারবার তা নিয়ে প্রশ্ন করতে থাকেন। তারপরেই তার দেহ মেলে।

ওই শিশুকন্যার বাড়ির লোকেরা জানিয়েছেন, রবিবার সকাল সাতটা নাগাদ কাজে বেরিয়ে যান বিশ্বজিৎ৷ সকাল নয়টা নাগাদ কাজে বের হন সান্ত্বনাদেবীও৷ তার সঙ্গে সঙ্গে দিন মজুরির কাজে বেরিয়ে যান বিশ্বজিতের শ্বশুরমশায়৷ ফলে বাড়িতে তখন ছিল সাগরিকা, তার পাঁচ বছরের ছোট বোন ও দিদিমা৷ বিশ্বজিৎবাবুর দাবি, বেলা এগারোটা নাগাদ বাড়িতে ফিরি৷ তখন আমার ছোট মেয়ে বাড়ির কাছেই একটি মাঠে খেলছিল৷ আমার শাশুড়ি গরু চড়াতে মাঠে গিয়েছিলেন৷ দরজা খোলা থাকা ঘরে ঢুকে দেখি সিলিং-এ ওড়না দিয়ে ফাস লাগিয়ে ঝুলছে সাগরিকা৷ স্থানীয়রা জানিয়েছে, সঙ্গে সঙ্গে চিৎকার শুরু করেন দেন বিশ্বজিৎবাবু৷ ছুটে আসেন আশপাশের লোকেরা৷ তারাই সাগরিকাকে নামিয়ে জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যান৷ চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন৷

Advertisement

এখনও স্কুল ভর্তি হয়নি সাগরিকা৷ বিশ্বজিৎবাবু বলেন, ‘‘খুব টিভি দেখতো এবং টিভিতে যা দেখতো তাই নকল করে দেখাতো৷ মনে হচ্ছে টিভিতে দেখা কোন কিছু নকল করতে গিয়েই এই কাজ করে ফেলেছে৷’’ বিশ্বজিৎবাবুর আত্মীয় জ্যোতিষ বর্মনও বলেন, ‘‘অনেক সময়ই টিভির অনেক কিছু নকল করে ও আমাদের দেখাত৷ আমাদেরও মনে হচ্ছে সেই কারণেই এই ঘটনা৷’’ জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার অমিতাব মাইতি বলেন, ‘‘কী করে শিশুটির মৃত্যু হল তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে৷’’ পুলিশ জানিয়েছে, সোমবার দেহের ময়নাতদন্ত হবে৷ সেই রিপোর্ট হাতে আসার পর মৃত্যুর কারণ অনেকটাই পরিস্কার হয়ে যাবে৷

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন