প্রতীকী ছবি।
উত্তরবঙ্গের তিনটি জেলা জুড়ে ছ’টি পেট্রল পাম্পে ডাকাতির মামলায় ধৃতদের জেরা করে আরও একটি আগ্নেয়াস্ত্র ও টাকা উদ্ধার করলেন এনজেপি থানার তদন্তকারী অফিসারেরা। বৃহস্পতিবার রাতভর উত্তর দিনাজপুর সীমানা লাগায়ো ফাঁসিদেওয়া এবং এনজেপি এলাকায় তল্লাশি চালানো হয়। দলের চাঁই মহম্মদ খইরুলের গোপন ডেরা থেকে পিস্তল এবং মহম্মদ রাজু ওরফে শিশুপালের আস্তানা থেকে ১৪ হাজার টাকা উদ্ধার হয়েছে। গত রবিবার ধৃতদের গ্রেফতারের সময় একাধিক মোবাইল ফোন, টাকা, একটি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়েছিল। পুলিশ জানিয়েছে, ওই চক্রের আর এক সদস্য পলাতক। তার কাছেও আগ্নেয়াস্ত্র থাকার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছে পুলিশ।
এনজেপি থানার অফিসারেরা ছাড়াও ধৃতদের জেরা করেছেন সিআইডি অফিসারেরা। শুক্রবার আরেক দফায় অভিযুক্তদের জেরা করেছেন কমিশনারেটের গোয়েন্দা শাখার অফিসারেরাও। শিলিগুড়ির পুলিশের ডিসি (পূর্ব) গৌরব লাল বলেন, ‘‘জেরা করা নানা তথ্য মিলছে। সেগুলো খতিয়ে দেখার পরে আরও আগ্নেয়াস্ত্র, টাকা উদ্ধার হয়েছে।’’
পুলিশ জানিয়েছে, ১৪ ডিসেম্বর উত্তর দিনাজপুরের শ্রীকৃষ্ণপুরের একটি পেট্রল পাম্পে দুষ্কৃতীরা প্রথম হানা দেয়। এরপরে ১৮ ডিসেম্বর গভীর রাতে শিলিগুড়ি মহকুমার বিধাননগরে আর একটি পেট্রল পাম্পে একই কায়দায় ডাকাতি হয়। তার দিন চারেক পরে একই রাতে পরপর ফাঁসিদেওয়া, ময়নাগুড়ি, বন্ধুনগর, ফুলবাড়ির জিয়াগঞ্জে অ্যাম্বুল্যান্স নিয়ে অভিযুক্তরা হানা দেয়। সব মিলিয়ে লক্ষাধিক টাকা লুঠের পরে ওই অ্যাম্বুল্যান্সের চেহারা পাল্টানোর সিদ্ধান্ত নেয় খইরুল। চোপড়া এবং শিলিগুড়ির দু’টি গ্যারাজে অ্যাম্বুল্যান্সের স্টিকার খোলা হয়। পিছনে রোগীকে শোওয়ানোর আসন বাদ গিয়ে সাধারণ গাড়ির বসার সিট জুড়ে দেওয়া হয়।
পুলিশের দাবি এরপরে লুঠের টাকা, আগ্নেয়াস্ত্র ভাগ করে উত্তর দিনাজপুর, ফাঁসিদেওয়া, এনজেপি সীমানা এলাকায় বিভিন্ন বাড়িতে লুকিয়ে রাখা হয়। ফের শিলিগুড়িতে জড়ো হয়ে গাড়ি নিয়ে মালদহের ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে হানা দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল ধৃতদের, এমনই দাবি পুলিশের। যে বাড়িগুলো থেকে টাকা, অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে সেগুলো ধৃতদের আত্মীয়দের বলে পুলিশ জেনেছে। তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, ইসলামপুরের জেলে বসে নিখুঁত পরিকল্পনা তৈরি করেছিল অভিযুক্তরা। শেষে মালদহ হয়ে বিহারে পালানোর পরিকল্পনা ছিল। এ দিনও পলাতক অভিযুক্তের খোঁজে তল্লাশি চালায় অফিসারেরা।