আওয়াজ: শিলিগুড়ি রাস্তা এ ভাবেই ফেটেছে বাজি। নিজস্ব চিত্র
কালীপুজোর রাতে শহরে সেরকম বাজি না ফাটলেও এ বছরের দীপাবলির রাতে শব্দদূষণের সমস্ত রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে শিলিগুড়ি। নির্ধারিত মাত্রার চেয়ে অনেক বেশি শব্দে অনেক রাত পর্যন্ত ফেটেছে বাজি। কেন তা আটকানো গেল না তা নিয়ে নানারকম ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
শুক্রবার শিলিগুড়িতে দার্জিলিংয়ের জেলাশাসক বলেন, ‘‘আদালতের নির্দেশ হাতে পেয়েছি অনেকটা দেরিতে। ততক্ষণে বাজি অনেক জায়গাতেই ঢুকে গিয়েছে। আটকানো যায়নি অতটা। সামনে বছর আমরা আদালতের নির্দেশ আগে থেকেই কার্যকর করব।’’ তবে কত দেরিতে তিনি ওই নির্দেশ পেয়েছেন তা অবশ্য স্পষ্ট করে বলেননি। জেলাশাসক জানান, প্রশাসন ও পুলিশ তৎপর ছিল। বেআইনিভাবে বাজি ফাটানোর খবর আসার সঙ্গে সঙ্গেই সেখানে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেছে বলে তিনি জানান। শিলিগুড়ি শহরে নিষিদ্ধ বাজি আটক হয়েছে এবং আইন ভেঙে বাজি ফাটানোর জন্য প্রচুর মানুষ গ্রেফতারও হয়েছেন বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর।
২৩ অক্টোবর সুপ্রিম কোর্ট বাজি বিষয়ক নির্দেশিকা দেয়। দার্জিলিং জেলা প্রশাসনের দাবি, সেই নির্দেশ সরকারি ভাবে জেলায় পৌঁছতেই দেরি হয়েছে। তবে জেলাশাসকের ব্যাখ্যা নিয়ে পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত বলেন, ‘‘শব্দবাজির সীমা অনেক বছর আগেই ২০০৬ সালে বেঁধে দিয়েছে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ। আর শীর্ষ আদালত আতসবাজি ফাটানোর সময় বেঁধে দিয়েছে। নির্দেশ আগে বা পরে পাওয়ার উপরে শব্দবাজি আটকানো নির্ভর করে এটা কোনও যুক্তি হতে পারে না।’’
শিলিগুড়ি শহরে যথেচ্ছ শব্দবাজি ফাটানোর জন্য মাত্র কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে আদালতের নির্দেশ মেনে পুলিশ কড়া পদক্ষেপ করলে তা আরও বেশি হত বলে মনে করছেন পরিবেশকর্মীদের অনেকেই। বাজির জন্য যে দূষণও এক লাফে অনেকটা বেড়েছে, সে ব্যাপারে একমত পুরসভাও।
পুর কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যেই কয়েকটি অত্যাধুনিক সেন্সর থেকে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখিয়েছে, হিলকার্ট রোড, সেবক রোড এবং চম্পাসারি এলাকায় এলাকায় দূষণের মাত্রা খুব বেশি। দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ এবং পুলিশের কাছে চিঠি দিয়ে এর কারণ জানতে চাইবেন বলে জানিয়েছেন মেয়র অশোক ভট্টাচার্য। শহরে নির্ধারিত মাত্রার চেয়ে বেশি শব্দের বাজি ঢোকা আটকাতে সেরকম পদক্ষেপ পুলিশ করেনি বলে ইতিমধ্যেই অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে। শিলিগুড়ির প্রবীণ চিকিৎসক সমর দেব বলেন, ‘‘বাজি, ডিজে মিলিয়ে কান ঝালাপালা হয়েছে শহরবাসীর। উৎসবে আনন্দ তো হবেই। তা মাত্রাছাড়া হলে ভাল নয়।’’