প্রতীকী ছবি।
মুরগি খুনের ঘটনা কোনও মতে সামলানো গিয়েছিল৷ তারপরে এ বার ছাগল খুনের অভিযোগ৷ ঘটনাস্থল আবারও সেই জলপাইগুড়ির কোতোয়ালি থানা৷ সোমবার দুপুরে সেখানেই রীতিমত হইচই পড়ে যায়।
২৬ জানুয়ারি সাধারণতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠান শেষ করে দুপুরে থানায় ফিরেছিলেন পুলিশ কর্মীরা৷ এমন সময় দুই মহিলা থানায় ঢুকে রীতিমত চিৎকার জুড়ে দেন তাঁদের এলাকায় একসঙ্গে ২১টি খুন হয়ে গিয়েছে৷ দৌড়ে থানার ঘর থেকে বেরিয়ে এসে থানার পুলিশ কর্তারা বুঝতে পান, একুশটি খুন আসলে মানুষের না, হয়েছে মুরগির! তবে মহিলারা থানায় গিয়েছেন শুনতে পেয়েই অভিযুক্ত ‘খুনি’ মুরগির দাম মিটিয়ে দিতে উদ্যোগী হয়৷ ফলে সমস্যা সেখানেই মিটেও যায়৷ এ বারও প্রায় একই রকম ঘটনা ঘটল। কেবল মুরগির বদলে এ বার ছাগল।
সোমবার দুপুরে আটমকাই থানা চত্বরে হাজির হন মাঝবয়সী এক ব্যক্তি৷ হাতে ধরা মৃত একটি ছাগল৷ সেটির পিছনের পা-দুটি ধরে থানায় সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছেন তিনি৷ আর চিৎকার করে বলে চলছেন, ‘‘ওরা আমার ছাগলটাকে বিষ খাইয়ে মেরে ফেলল৷ আরও তিনটি ছাগল অসুস্থ৷’’ থানা চত্বরে এমন চিৎকার শুনে ফের ঘর থেকে দৌড়ে বেরিয়ে আসেন পুলিশ কর্তারা৷ জানতে পারেন, ওই ব্যক্তির নাম মানিক সরকার৷ রানিনগরের সরকারপাড়াতে তার বাড়ি৷ মানিকবাবুর অভিযোগ, ‘‘তাঁর চারটি ছাগল রবিবার বিকেলে প্রতিবেশীদের খেতে গিয়েছিল৷ সেখানেই তাদের মারতে বিষ মেশানো খাবার রাখা হয়৷ যা খেয়ে রাতেই এই ছাগলটি মারা যায়৷’’ প্রতিবেশীদের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় লিখিত অভিযোগও দায়ের করেন তিনি৷ শুধু তাই নয়, অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে বলেও দাবি তোলেন তিনি৷
পরিস্থিতি সামলাতে শেষ পর্যন্ত ময়নাতদন্ত করাতে ছাগলটিকে পশু হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন পুলিশ কর্তারা৷ কিন্তু পশু হাসপাতালে আদৌ ময়না তদন্ত হবে কি না, বা হলেও কোনও পশু হাসপাতালে তা হবে বুঝতে না পেরে ছাগলটিকে নিজের বাড়িতেই নিয়ে যান তিনি৷ কিন্তু তিনি থানা থেকে বের হওয়ার আগে পর্যন্ত মৃত এই ছাগলটিকে নিয়ে রীতিমত নাজেহাল হতে হয় পুলিশকেও৷
এক পুলিশ কর্তা তো বলেই ফেললেন, ‘‘মানুষ খুনের তদন্তের কিনারা করতে ঘাম ছুটে যাচ্ছে, আর এরা একদিন মুরগি তো একদিন ছাগলের ডেডবডি নিয়ে থানায় চলে আসছেন!’’ তবে জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার আইসি বিশ্বাশ্রয় সরকার বলেন, ‘‘অভিযোগ পেয়েছি৷ নির্দিষ্ট ধারায় মামলা করে ইতিমধ্যেই ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে৷’’