পুলিশের মারে আতঙ্কিত বাসিন্দারা। বালুরঘাটে। নিজস্ব চিত্র।
আবগারি দফতর থেকে লাইসেন্স পেলেও পাড়ার মধ্যে মদের দোকান চালু করতে পুরসভা থেকে নো অবজেকশন শংসাপত্র পাননি পুলিশ কর্মী শ্যামল সরকার। ফলে পুরসভা থেকে রেস্তরাঁ খোলার লাইসেন্স নিয়েই মদ বিক্রি শুরু করেছিলেন বলে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। বালুরঘাট পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান বেবি বর্মন জানান, শ্যামলবাবুকে ওই এলাকায় মদের দোকান খোলার অনুমতি দেওয়া হয়নি। দু’বছর আগে পুরসভা থেকে তিনি রেস্তরাঁর লাইসেন্স পেয়েছিলেন।
মঙ্গলবার বালুরঘাট শহরের একে গোপালন কলোনিতে ওই মদের দোকান চালুর বিরুদ্ধে বাসিন্দারা তুমুল বিক্ষোভ দেখান। সাংসদের দেহরক্ষী পদের ক্ষমতা দেখিয়ে তিনি বাসিন্দাদের হুমকি দিয়ে মদের দোকান চালু করেন বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। ঘটনার পরেই দেহরক্ষী পদ থেকে তাঁকে অপসারিত করা হয়।
এ দিকে পুলিশকে আক্রমণ ও গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগে ধৃত চার জনকে এ দিন পুলিশ বালুরঘাট আদালতে পাঠালে তাদের ১৪ দিনের জেল হেফাজত হয়েছে। পুলিশ ও সিভিকের পাল্টা মারে গুরুতর জখম দুই মহিলা সহ ৫ জন বালুরঘাট হাসপাতালে ভর্তি। তাঁদের মধ্যে ছোট ব্যবসায়ী হারান সরকার ও তাঁর প্রথম বর্ষের পড়ুয়া ছেলে সুরজিৎ এবং এক আত্মীয়া সুচিত্রা বিশ্বাসের আঘাত গুরুতর। তৃণমূলের ওয়ার্ড কাউন্সিলর এ দিন তাঁদের হাসপাতালে দেখতে যান। জেলা পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘তদন্ত শুরু হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।’’
বালুরঘাট শহরের ১০ নম্বর ওয়ার্ডের একে গোপালন কলোনিতে বছর তিনেক আগে তিনতলা বাড়ি তৈরি করে নীচ তলায় বিদেশি মদের শোরুম চালু করলেও অভিযুক্ত শ্যামলবাবু ওই ওয়ার্ডের বাসিন্দাই নন বলে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড কাউন্সিলর বর্ণিলা সরকার জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘ওয়ার্ডের ভোটার তালিকায় শ্যামল সরকারের নাম নেই। মঙ্গলবার বাসিন্দাদের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে পুলিশকে অবৈধ ভাবে চালু ওই মদের দোকান বন্ধের জন্য মাস-পিটিশন দেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছিল।’’ তার আগেই তুলকালাম ঘটে যায় বলে তিনি জানান।
এ দিন ধরপাকড়ের ভয়ে অধিকাংশ বাড়ি পুরুষ শূন্য ছিল। শ্যামলবাবুর বক্তব্য, ‘‘অনলাইনে আবেদন করে বিদেশি মদের অফশপের লাইসেন্স পাই।’’ জেলা আবগারি সুপার শুভেন্দু সেন বলেন, ‘‘মদের দোকান চালুর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ না হলে লাইসেন্স দিতে অন্য নিয়ম নেই। তবে তুলকালামের পর ২৪ ঘণ্টা কেটে গেলেও এখনও মদের দোকানের বিরুদ্ধে আপত্তি জানিয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ জমা পড়েনি, আবগারি দফতরেও কেউ নালিশ করেননি।’’