সঙ্কটে: শিলিগুড়িতে চিকিৎসাধীন রায়গঞ্জের আহত তৃণমূল নেতা সুব্রত ঘোষ। তাঁর সঙ্কট কাটেনি বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক
রায়গঞ্জের সুভাষগঞ্জে তৃণমূল নেতা সুব্রত ঘোষের উপর হামলার ঘটনার পর দু’দিন পেরিয়ে গেলেও এখনও অভিযুক্তদের গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। ওই ঘটনার জেরে মঙ্গলবারও এলাকার পরিবেশ থমথমে ছিল।
সুব্রতবাবু শিলিগুড়ির স্টেশন ফিডার রোডে একটি নার্সিংহোমে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ভর্তি রয়েছেন। তাঁকে আইসিইউতে রাখা হয়েছে। সোমবার সকালে তাঁর অস্ত্রোপচার হয়। রবিবার রাত সাড়ে এগারোটা নাগাদ বাড়ি ফেরার পথে দুষ্কৃতীদের দ্বারা আক্রান্ত হন মারাইকুড়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার কার্যকরী সভাপতি সুব্রত ঘোষ। দুষ্কৃতীরা সুব্রতবাবুর মাথার পিছনে ইট দিয়ে মেরেছে।
সুব্রতবাবুর ভাই সঞ্জীব ঘোষ বলেন, ‘‘চিকিৎসকরা জানিয়েছেন যে ভাবে মারা হয়েছে তাতে জীবন সংশয় হয়েছে। সিসিটিভি ফুটেজে দুষ্কৃতীদের দেখা গিয়েছে। সেখানে কয়েকজনকে দাঁড়িয়ে থাকতেও দেখা গিয়েছে।’’ সুব্রতবাবুর স্ত্রী সীমা ঘোষ বলেন, ‘‘দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।’’ নার্সিংহোমের চিকিৎসক টি এন শর্মা বলেন, ‘‘অপারেশনের পরেও সুব্রতবাবুর শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়নি। ভারী বস্তুর আঘাতে তার মস্তিষ্কে মারাত্মক চোট লেগেছে। সব স্নায়ুর ক্ষতি হয়েছে। আমরা চেষ্টা চালাচ্ছি।’’
এ দিন রায়গঞ্জের সুভাষগঞ্জে দোকানপাট খুললেও পুলিশকর্মীদের টহল দিতে দেখা গিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের আন্দোলন ও পুলিশি অভিযানের জেরে সোমবার থেকে এলাকার বিভিন্ন বেআইনি মদের দোকান বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ঘটনার রাতেই সুব্রতর পরিবারের তরফে এলাকার তিন ব্যক্তির বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। উত্তর দিনাজপুরের পুলিশ সুপার সুমিত কুমারের দাবি, অভিযুক্তেরা পালিয়ে গিয়েছে। তাদের খোঁজে তল্লাশি চলছে, বেআইনি মদের দোকানের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে।
সুব্রতবাবু সুস্থ হলে পুলিশ তাঁর জবানবন্দি নথিভুক্ত করবে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের দাবি, সুব্রতর উপর হামলার ঘটনায় অভিযুক্তেরাও তৃণমূল সমর্থক বলে পরিচিত। তবে হামলার পিছনে এখনও পর্যন্ত দলের কোনও গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের প্রমাণ মেলেনি। ঠিকাদারি সংক্রান্ত আর্থিক লেনদেন নিয়ে গোলমালের জেরেই অভিযুক্তেরা মদ্যপ অবস্থায় তাঁর উপর হামলা চালিয়েছে বলে দাবি পুলিশের।
এ দিন মাড়াইকুড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ও উপপ্রধান নির্বাচন হয়। পঞ্চায়েত কার্যালয়ের সামনে বিরাট পুলিশবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল।