TMC Councilor Dulal Sarkar Murder Case

দুলালের বাড়ির সামনেই ঘাঁটি তৈরি করেন খুনিরা? প্রতিবেশীর ঘরে বসেই ছক হত্যার, সন্দেহ পুলিশের

বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ ইংরেজবাজার শহরের ঝলঝলিয়ার কাছে নিজের প্লাইউড কারখানার সামনে খুন হন দুলাল। ঘটনার নেপথ্যে মূলচক্রী কে বা কারা, খুনের কারণ কী, তা এখনও স্পষ্ট নয়।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০২৫ ১৪:৪৭
Share:

মৃত তৃণমূল নেতা দুলাল সরকার। —ফাইল চিত্র।

মালদহের তৃণমূল কাউন্সিলর দুলাল সরকার ওরফে বাবলাকে খুনের পরিকল্পনা হয়েছিল তাঁর প্রতিবেশীর বাড়িতে বসেই? অমিত রজক নামে এক যুবকের গ্রেফতারির পরেই উঠছে এই প্রশ্ন। দুলালের বাড়ি থেকে মাত্র ২০০ মিটার দূরে থাকেন অমিত। খুনের দিন কয়েক আগে থেকেই সেই বাড়িতে কিছু অপরিচিত যুবকের আনাগোনা বেড়েছিল বলে জানান প্রতিবেশীরা। দুলালের খুনের নেপথ্যে ওই যুবকদের যোগ ছিল কি না, সেটাই ভাবাচ্ছে পুলিশকে। তদন্তকারীদের একাংশের অনুমান, অমিতের বাড়িতে বসেই দুষ্কৃতীরা খুনের পরিকল্পনা করে থাকতে পারে!

Advertisement

বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ ইংরেজবাজার শহরের ঝলঝলিয়ার কাছে নিজের প্লাইউড কারখানার সামনে খুন হন দুলাল। বাইকে চেপে এসে তিন জন দুষ্কৃতী দুলালকে লক্ষ্য করে পর পর গুলি করে। মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে মৃত্যু হয় তাঁর। ঘটনার পর থেকেই খুনিদের খোঁজে বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি অভিযান শুরু করে পুলিশ। ঘটনার নেপথ্যে মূলচক্রী কে বা কারা, খুনের কারণ কী, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে পুলিশ ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় আট জনকে গ্রেফতার করেছে। তাঁদের মধ্যেই রয়েছেন অমিত।

অমিতের বাড়ি ঝলঝলিয়াতে। এই ঝলঝলিয়া এলাকাতেই দুলালেরও বাড়ি এবং অফিস। তবে ওই বাড়িটি অমিতের নিজের নয়। দিদার বাড়ি। দিদা মারা যাওয়ার পর মাঝেমধ্যেই অমিত এসে থাকেন সেখানে। ঘটনার দিন কয়েক আগে থেকেই বেশ কয়েক জন ওই বাড়িতে আসা-যাওয়া করতেন বলে দাবি প্রতিবেশীদের। কেউই তাঁদের চিনতেন না। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, রাতে অমিতের বাড়িতে অপরিচিত যুবকেরা রান্নাবান্না করতেন, খাওয়াদাওয়া হত। কেউই চেনা মুখ নয়। বাইকে চেপে আসতেন ওই যুবকেরা।

Advertisement

কেন অপরিচিত যুবকদের থাকতে দেওয়া হয়েছিল, তা নিয়ে সন্দেহ দানা বেঁধেছে। প্রশ্ন, তবে কি অমিতের বাড়ি থেকেই দুলালের গতিবিধির উপর নজর রেখেছিল দুষ্কৃতীরা? স্থানীয়দের দাবি, খুনের ঘটনার পর থেকেই ওই বাড়িতে আর কোনও অপরিচিত যুবককে দেখা যায়নি। তাঁরা কারা, কোথা থেকে এসেছিলেন, তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।

দুলাল-খুনের ঘটনায় বিহার-যোগ মিলেছে আগেই। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বিহার থেকে ‘শুটার’ ভাড়া করা হয়েছিল খুনের জন্য। তবে কে বা কারা ভাড়া করেছিল, কোথা থেকে অস্ত্র পাওয়া গেল— এই সব প্রশ্নের উত্তর এখনও অজানা। পুলিশ এখনও পর্যন্ত যাঁদের গ্রেফতার করেছে তাঁদের মধ্যে দু’জন বিহারের বাসিন্দা।

অমিত ছাড়াও খুনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ অভিজিৎ ঘোষ নামে আরও এক যুবককে গ্রেফতার করেছে। তাঁর বাড়ি ঘোড়াপীর ঘোষপাড়া এলাকায়। খুনের আগের রাতে নিজের বাড়ি ফেরেননি তিনি, এমনই দাবি অভিজিতের বাবা-মায়ের। কোথায় ছিল, তা জানেন না তাঁরা। তাঁদের কথায়, ‘‘খুনের ঘটনার দিন দুপুরবেলা বাড়ি আসে অভিজিৎ। খাওয়াদাওয়া করার পর বিকেলের দিকে আবার বাইরে যায়। রাতে বাড়ি থেকেই পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।’’ অভিজিতের স্বভাবে কোনও পরিবর্তন লক্ষ্য করেননি বলেই দাবি তাঁর মা সুমিতা ঘোষের। কাউন্সিলরকে খুনের ঘটনায় তাঁদের ছেলে জড়িত, তা মানতে পারছেন না অভিজিতের বাবা-মা। প্রসঙ্গত, অভিজিৎ এবং অমিতকে শনিবার আদালতে হাজির করানো হয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement