Death

TMC-Congress-BJP: দেহ উদ্ধার, টানাপড়েন

দেহ উদ্ধারের পরে যেমন মৃত্যু ঘিরে প্রশ্ন সামনে এসেছে, তেমনই দেবেশ কোন দলের কর্মী ছিলেন, তাই নিয়েও দিনভর চর্চা ছিল তুঙ্গে।

Advertisement

গৌর আচার্য 

রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ২১ জুলাই ২০২১ ০৫:৫৮
Share:

প্রতীকী চিত্র।

আমগাছের ডালে ডালে পেঁচানো নাইলনের দড়ি। সেটি গলায় বেঁধে ঝুলছে দেহটি। মঙ্গলবার সকালে রায়গঞ্জের গৌরী গ্রাম পঞ্চায়েতের দক্ষিণ বিষ্টুপুরে এ ভাবেই উদ্ধার হয় কংগ্রেসের বুথ সভাপতি দেবেশ বর্মণের (৫৬) দেহ। তাঁর বাড়ি থেকে পাঁচশো মিটার দূরে এই আমগাছ। দেহ উদ্ধারের পরে যেমন মৃত্যু ঘিরে প্রশ্ন সামনে এসেছে, তেমনই দেবেশ কোন দলের কর্মী ছিলেন, তাই নিয়েও দিনভর চর্চা ছিল তুঙ্গে।

Advertisement

স্থানীয় ও পুলিশের দাবি, দেবেশের মুখ মোড়া তৃণমূলের পতাকায়। এটিই চর্চায় ইন্ধন দেয়। পরে অবশ্য ময়নাতদন্তের সময়ে তৃণমূলের পতাকার নীচে একটি কংগ্রেসের পতাকাও মেলে। বিজেপি সকালেই দাবি করে, দেবেশ তাঁদের কর্মী এবং তাঁকে মেরে ঝুলিয়ে দিয়েছে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা। রায়গঞ্জের দেবেশের ক্ষেত্রে কলকাতায় সাংবাদিক বৈঠক করে বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য দাবি করেন, তিনি বিজেপির সক্রিয় কর্মী। বিজেপি আইটি সেলের প্রধান অমিত মালবীয় ছবি দিয়ে টুইট করে দাবি জানান, তৃণমূলের দুষ্কৃতীদের হাতে আর এক বিজেপি কর্মী খুন হয়েছেন।

কিছু ক্ষণের মধ্যেই অবশ্য কংগ্রেস জানায়, দেবেশ তাঁদের বুথ সভাপতি ছিলেন। কংগ্রেসকে সমর্থন জানান দেবেশের পরিবারের লোকজনেরা। স্থানীয় ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, দেবেশ ২০১৩ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনে দক্ষিণ বিষ্টুপুর সংসদ থেকে সিপিএমের টিকিটে জিতেছিলেন। ২০১৮ সালে পঞ্চায়েত ভোটের আগে তিনি কংগ্রেসে যোগ দেন। বিজেপির জেলা সভাপতি বাসুদেব সরকার অবশ্য সকালে ঘটনার কথা শোনার পরেই স্থানীয় বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণীকে নিয়ে দেবেশের বাড়িতে যান। কিন্তু পরিবার বিজেপির দাবি না মানলে পরে বাসুদেব বলেন, ‘‘দেবেশ মনেপ্রাণে বিজেপি সমর্থক ছিলেন, পরিবারের লোকেরাই জানিয়েছেন।’’ পরে মৃতের ভাগ্নে ছবিলাল বর্মণ বলেন, “মামা কোনও দিনও বিজেপি করেননি। তিনি আমৃত্যু কংগ্রেসে ছিলেন।” জেলা কংগ্রেস সভাপতি মোহিত সেনগুপ্ত বলেন, “গত বিধানসভা ভোটেও উনি কংগ্রেসের পোলিং এজেন্ট ছিলেন।” সোমেন মিত্রের ছেলে রোহনও বিজেপির দাবি খণ্ডন করে টুইট করেন।

Advertisement

জেলা তৃণমূল সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়ালের বক্তব্য, “দেবেশকে খুন করা হলে, পুলিশকে কোনও রঙ না দেখে তদন্ত করে দুষ্কৃতীদের গ্রেফতার করুক।”

প্রশ্ন উঠেছে, দেবেশকে খুনই বা করল কে? মৃতের ছেলে বিদ্রোহী বর্মণ বলেন, “বাবাকে দুষ্কৃতীরা পিটিয়ে ও শ্বাসরোধ করে খুন করে ঝুলিয়ে দিয়েছে।” কিন্তু কেন? পুলিশের দাবি, পারিবারিক, ব্যক্তিগত, আর্থিক লেনদেন কিংবা জমি নিয়ে বিবাদের জেরে ওই ব্যক্তিকে খুন করা হয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। রায়গঞ্জের ডিএসপি রিপন বল বলেন, “সব দিক বিচার করে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন