অবহেলা: নিজের মাথায় হেলমেট তো নেই-ই, ভরা রাস্তায় খালি খুদের মাথাও। মোটরবাইক যাত্রায় হেলমেট নিয়ে উদাসীনতা শহরের পথেঘাটে চলছেই। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক
পুলিশের কড়াকড়ি আছে। রোজ বিনা হেলমেটে বাইকের জন্য শতাধিক জনের জরিমানাও হচ্ছে। তা সত্ত্বেও শিলিগুড়ি শহরে বিনা হেলমেটে বাইক চালানোর প্রবণতা পুরোপুরি কমেনি। বিনা হেলমেটে পেট্রোল পাম্পে গিয়ে তেল ভরার ঘটনাও রোজই কমবেশি ঘটছে। তার উপরে দেখা যাচ্ছে, একই বাইকে চালক হেলমেট পরে আছেন, আরোহী শিশু কিংবা তার মা অরক্ষিত মাথায়। শিলিগুড়ি শহরের মূল রাস্তাগুলিতে যে কোনও ব্যস্ত সময়ে এমন ছবি দেখা যায়।
ট্রাফিক পুলিশ সূত্রের খবর, একশ্রেণির যুবক, কয়েকজন রাজনৈতিক নেতা, জনপ্রতিনিধি হেলমেট বিধির তোয়াক্কা করছেন না। ছাত্রীদের একাংশ ও কর্মরতা মহিলাদের অনেকেই হেলমেট বিধি ভেঙে বহাল তবিয়তে হিলকার্ট রোড, সেবক রোড, বিধান রোডে ঘোরাফেরা করছেন। শিলিগুড়ি পুরসভার একাধিক কাউন্সিলরকে দেখা যায় বিনা হেলমেটে শহরের মূল রাস্তায় ঘোরাফেরা করছেন। একজন শিক্ষক নেতা তো বিনা হেলমেটে বাইক নিয়ে নিয়ে স্কুলে যান।
যে খবর শুনে ট্রাফিক পুলিশের অফিসারদের বাড়তি নজরদারি নির্দেশ দিয়েছেন পুলিশ কমিশনার নীরজকুমার সিংহ। পুলিশ কমিশনার বলেছেন, ‘‘পেট্রোল পাম্পের সিসি ক্যামেরার ছবি দেখে বিনা হেলমেটের বাইক আরোহীদের নোটিস পাঠানোর জন্য বলা হয়েছে।’’ সেই সঙ্গে শহরে হেলমেট ব্যবহারের বিষয়ে বাইক-স্কুটি চালকদের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতেও পদক্ষেপ করা হচ্ছে। তবে শিলিগুড়িতে বাইক চালকের সঙ্গে আরোহীদের হেলমেট নিয়ে এখনও কড়াকড়ি শুরু হয়নি বলে পুলিশ জানিয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, তা নিয়ে সচেতনতা তৈরির পরে দ্বিতীয় পর্যায়ে চালকের সঙ্গে আরোহীদেরও হেলমেট না পরা থাকলে জরিমানা চালু হবে।
শিলিগুড়ি ট্রাফিক পুলিশের এক কর্তা জানান, মূলত মূল শহরের প্রধান রাস্তায় ট্রাফিককর্মীদের নজরদারি করার কথা। সাধারণত পাড়ার মধ্যে হেলমেট বিধি নিয়ে কড়াকড়ির মতো পরিকাঠামো ট্রাফিক পুলিশের নেই। তাই পাড়ার মধ্যে থাকা স্কুল-কলেজের সামনে হেলমেট বিধি মানার ব্যাপারে কড়াকড়ি করা পুলিশের পক্ষে এখনই সম্ভব নয় বলে ট্রাফিক পুলিশের কর্তারাও একান্তে মানছেন।
শিলিগুড়ি পুরসভার বিরোধী দলনেতা রঞ্জন সরকার বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর সেভ ড্রাইভ, সেভ লাইফ স্লোগানে সাড়া দিয়ে অধিকাংশই হেলমেট ব্যবহার করছেন। কিন্তু, কিছু আরোহী আছেন, যাঁরা পেট্রোল পাম্পে গিয়ে এর-ওর থেকে হেলমেট নিয়ে তেল ভরছেন। সেটা বন্ধ করতে হবে পাম্প মালিকদের। চালকদের মনে রাখতে হবে, তাঁর পেছনে বসে থাকা সঙ্গী বা সঙ্গিনীর মাথাতেও হেলমেট থাকা দরকার।’’