TMC

Bimal Gurung and Binay Tamang : তৃণমূলের চাপেই কি বিনয়-বিমল সাক্ষাৎ

মোর্চার দু’তরফেই ইঙ্গিত, বিষয়টি নিয়ে তৃণমূলের শীর্ষস্তর থেকে চাপ আসছিল বিনয় ও বিমলের উপরে।

Advertisement

দেবাশিস চৌধুরী এবং কৌশিক চৌধুরী

শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০২১ ০৬:৩০
Share:

ফিরবে অতীত?: ২০১৭ সালের জুন মাসে একসঙ্গে বিমল, বিনয়। ফাইল চিত্র

দার্জিলিঙে মেঘ গাভীর মতো চরে। তাই এপ্রিলেও আচমকা এক পশলা বৃষ্টি হলে জাঁকিয়ে আসে শীত। তেমনই এক বিকেলে দার্জিলিঙে নিজের দলীয় দফতরে বসে বিনয় তামাং বলেছিলেন, ‘‘বিমল গুরুংয়ের সঙ্গে আমাকে বসতে বলেছিলেন তৃণমূল নেতৃত্ব। ভোটকুশলী পিকে বলেছিলেন, তিনি যুযুধান নরেন্দ্র মোদী ও নীতীশ কুমারকে একসঙ্গে বসিয়েছিলেন। তা হলে বিমল গুরুংয়ের সঙ্গে বিনয় তামাং বসবে না কেন?’’ প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে কয়েক মুহূর্ত সময় নিলেন বিনয়। তার পর বলেছিলেন, ‘‘মোদী আর নীতীশ দু’জনই উন্নয়ন চান। কিন্তু গুরুং তো সেটা চান না। তাই জানিয়ে দিয়েছিলাম, ওটা ক্লোজ়ড চ্যাপ্টার।’’ কাচের শার্সির পিছনে তখন সন্ধ্যা।

Advertisement

চার মাসের মধ্যে কিন্তু হাওয়া বদলে গেল ‘পাহাড় কি রানি’র রাজনীতিতে। বিনয় যখন মোর্চা সভাপতির পদ ছাড়লেন, তখনই বিমল বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন। সেটা ধরতে মাস খানেক লেগে গেলেও শেষ পর্যন্ত ক্লোজ়ড চ্যাপ্টারকে ‘ওপেন’ করে নিজেই বিমলের কাছে গেলেন বিনয়। কেন?

মোর্চার দু’তরফেই ইঙ্গিত, বিষয়টি নিয়ে তৃণমূলের শীর্ষস্তর থেকে চাপ আসছিল বিনয় ও বিমলের উপরে। বিধানসভায় যে ভাবে ভোট ভাগাভাগিতে দার্জিলিং এবং কার্শিয়াং আসন খুইয়েছে মোর্চা, তা পছন্দ হয়নি শাসকদলের। ফলে ভোটের আগে যা শুধু ‘পরামর্শ’ ছিল, সেটা সম্প্রতি চাপ হিসেবে দেখা দেয়, বলছেন মোর্চারই লোকজন। কিন্তু সরাসরি বিনয় গিয়ে বিমলের সঙ্গে হাত মেলালে তাঁর দলে ভাঙন ধরতে পারে, এই আশঙ্কা ছিল। তাই প্রথমে তাঁর দলত্যাগ, তার পরে কিছু দিন সময় নিয়ে পরিস্থিতি সইয়ে বিমলের সঙ্গে সাক্ষাৎ, বলছে পাহাড়ের রাজনৈতিক শিবির।

Advertisement

পাহাড়ের লোকেরা আরও বলছে, পাহাড়ে সাধারণত শ্রাবণ মাসে শুভ কাজে হাত দেওয়া হয় না। বর্ষা, ধসের মাস শ্রাবণ। তাই কি বিনয়-বিমলের জোট সপ্তাহখানেক পর সামনে আসবে— এই প্রশ্নই বুধবার রাত থেকে পাহাড়ের আনাচে কানাচে। বিনয় বলেন, ‘‘বিমল মোর্চার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। রাজনৈতিক আলোচনা করতে গিয়েছিলাম। গোর্খা জাতির জন্য কী কাজ আগামীতে আমরা করব, তা ক’দিন পরে জানাব।’’

তবে প্রশ্ন থাকছে অনীত থাপাকে নিয়ে। এ দিন অনীত ভারতীয় গোর্খা গণতান্ত্রিক পার্টি নামে নতুন দল খুলবেন বলে চাউর হয়। তা পুরোপুরি ভিত্তিহীন বলে জানিয়ে অনীতের দাবি, মোর্চার পতাকা তাঁরও। দুই পুরনো নেতার বৈঠক নিয়ে অনীত প্রকাশ্যে মুখ খোলেননি। ঘনিষ্ঠমহলে শুধু বলেছেন, ‘‘শান্তির পাহাড়ে মানুষ যাঁদের পছন্দ করবে, তাঁরাই পাহাড়ের নেতা থাকবেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন