পর্যটন কেন্দ্র ছেয়ে প্লাস্টিকে

পর্যটন মানচিত্রে রাজ্যে উল্লেখযোগ্য ডুয়ার্সের লাটাগুড়ি। গরুমারা জাতীয় উদ্যানের প্রবেশ দ্বার এই লাটাগুড়ি পঞ্চায়েতের অধীনে থাকা বাজার এলাকারও প্রধান উপার্জনের পথ পর্যটন ব্যবসা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মালবাজার শেষ আপডেট: ০৪ অগস্ট ২০১৫ ০২:২৩
Share:

লাটাগুড়িতে প্লাস্টিক দূষণ। —ফাইল চিত্র।

পর্যটন মানচিত্রে রাজ্যে উল্লেখযোগ্য ডুয়ার্সের লাটাগুড়ি। গরুমারা জাতীয় উদ্যানের প্রবেশ দ্বার এই লাটাগুড়ি পঞ্চায়েতের অধীনে থাকা বাজার এলাকারও প্রধান উপার্জনের পথ পর্যটন ব্যবসা। রিসর্ট, গাড়ি, খাবার হোটেল খুলে লাভের মুখ দেখেছেন এলাকার বাসিন্দারা। কিন্তু জঙ্গল লাগোয়া এই লাভদায়ক পর্যটনকেন্দ্রে যেখানে পরিবেশই উপার্যনের মূলধন, সেখানে আজও রমিরমিয়ে চলছে প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ। পর্যটকেরাও বিভিন্ন জিনিস কেনাকাটা করলে প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগেই জিনিস দেওয়া হচ্ছে। জঙ্গলের পথে যত্রতত্র পড়ে থাকা প্লাস্টিকও আসছে লাটাগুড়ি থেকে।

Advertisement

কেন লাটাগুড়ির মতো একটি উল্লেখযোগ্য পর্যটনকেন্দ্রে প্লাস্টিক বন্ধ হবে না তা নিয়ে যেমন প্রশ্ন উঠেছে, তেমনই জঙ্গলের গা ঘেঁসে থাকা এই পর্যটন কেন্দ্রে বেড়াতে এসে অবাধে প্লাস্টিক ব্যবহার দেখে পর্যটকদের মধ্যেও বিরূপ প্রতিক্রিয়া হচ্ছে। অন্য দিকে, সর্ব স্তরেই প্লাস্টিক বর্জন হওয়া উচিত বলে মনে করলেও, পরস্পরের উপর দোষারপের শুরু হয়েছে।

লাটাগুড়ি পঞ্চায়েত বামফ্রন্ট পরিচালিত। পঞ্চায়েতের ঔদাসীন্যের জেরেই আজও প্লাস্টিক রয়ে গেছে বলেই মনে করে তৃণমূল। লাটাগুড়ি অঞ্চল তৃণমূলের নেত্রী তথা মালবাজার পঞ্চায়েত সমিতির লাটাগুড়ি এলাকার সদস্য মহুয়া গোপের কথায়, ‘‘বাম পঞ্চায়েত বোর্ড প্লাস্টিক ঠেকাতে কার্যত কোনও ভূমিকা নেয়নি। সে কারণেই প্লাস্টিক ঠেকানো সম্ভব হয়নি।’’ তিনি বলেন, ‘‘ডুয়ার্সের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র লাটাগুড়ি। এখানে প্লাস্টিক ঠেকানো যাবে না, এটা ভাবা যায় না। আমরা ভূমিকা নেব। কিন্তু প্রথমে পঞ্চায়েত বোর্ডকে উদ্যোগী হতে হবে।’’

Advertisement

অন্য দিকে, লাটাগুড়ি অঞ্চল সিপিএমের বর্ষীয়াণ নেতা আশিস সরকার এবং সিপিএমের লাটাগুড়ি পঞ্চায়েত প্রধান মণি রায়ের কথায়, ‘‘পঞ্চায়েতের ক্ষমতা সীমিত। বর্জ্য নিষ্কাশনের জন্য পঞ্চায়েতের কাছে আধুনিক সামগ্রীও নেই। রিসর্টগুলি থেকে প্রতিদিন যে বিপুল পরিমাণে বর্জ্য নির্গত হয় সেখানেই প্লাস্টিকের আধিক্য থাকে। রিসর্ট মালিকেরা প্লাস্টিক রোধে উদ্যোগ নিলে সমস্যা অনেকটাই কমবে।’’

লাটাগুড়ি পর্যটন ব্যবসার অন্যতম সংগঠন লাটাগুড়ি রিসর্ট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের তরফেও অবশ্য প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ বন্ধে জোরালো দাবি তোলা হয়েছে। শহর পরিচ্ছন্ন রাখতে দাবি তুলেছেন শহরের পরিবেশপ্রেমী স্বেচ্ছাসেবীরাও। লাটাগুড়ি রিসর্ট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক দিব্যেন্দু দেবের কথায়, ‘‘প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ বন্ধের প্রশ্নে রিসর্ট সংগঠন সকলের থেকে এগিয়ে রয়েছে। তবে প্রশাসনিক তৎপরতা না থাকলে নজরদারিতে কড়া অবস্থান আনা সম্ভব নয় বলেই দিবেন্দ্যুবাবুর মত।’’ লাটাগুড়ির বিশিষ্ট সমাজসেবী প্রবীর চক্রবর্তীর কথায়, ‘‘প্লাস্টিক দূষণ ছড়ায়, সে কথা তো সকলের জানা। তা হলে পরস্পরের দিকে বিষয়টি না ঠেলে এক সঙ্গে সকলে এগিয়ে আসুক। তা হলেই সমস্যার সমাধান সম্ভব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন