মনোনয়নপত্র তোলাকে কেন্দ্র করে শিলিগুড়ির বাগডোগরা কলেজে সংঘর্ষে জড়ালেন ছাত্রীরাও।ছবি: বিশ্বরূপ বসাক
ছাত্র সংসদের নির্বাচনের জন্য মনোনয়ন পত্র তোলাকে কেন্দ্র করে শনিবার সকাল থেকে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বাগডোগরা কলেজ চত্বর। অভিযোগ, এসএফআই সমর্থক কয়েকজন পড়ুয়া মনোনয়ন তুলতে গেলে টিএমসিপির সদস্যরা তাদের উপর হামলা চালিয়ে মনোনয়নপত্র ছিড়ে দেয়। ছাত্র পরিষদের এক ছাত্রীও মনোনয়ন তুলতে গিয়ে টিএমসিপি’র ছাত্রীদের বাধার মুখে পড়ে। তাকে মারধর করা হয়।
বিরোধী এসএফআই, ছাত্র পরিষদ ও অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের ছাত্র সংগঠনের অভিযোগ, পুলিশ থাকলেও কলেজে ঢোকার মুখে জড়ো হয়েছিল টিএমসিপি’র সদস্য সমর্থক এবং বহিরাগতরা। পুলিশ টিএমসিপি কর্মী সমর্থক এবং তাদের মদতপুষ্ট বহিরাগতদের না সরিয়ে উল্টে বিরোধীদের হঠিয়ে দিচ্ছিল বলে অভিযোগ। বেলা ১২ থেকে দু’ঘন্টা ছিল মনোনয়ন পত্র তোলার জন্য নির্ধারিত সময়। পৌনে দুটো নাগাদ অধিকাংশ মনোনয়ন তোলা হয়নি দেখে ছাত্র পরিষদ জাতীয় সড়ক অবরোধ শুরু করে। পুলিশ গিয়ে তাদের তুলে দেয়।
ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি রোনাল্ড দে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘‘মার খেয়েও আমরা ১২টি মনোনয়ন পত্র তুলেছি। তা সুষ্ঠুভাবে জমা করার দাবিতে পুলিশ কমিশনারের কাছে যাব।’’ এসএফআই জেলা সম্পাদক সৌরভ দাস বলেন,‘‘আমাদের পড়ুয়ারাও মারধর খেয়ে ২২টির মতো মনোনয়ন তুলতে পেরেছে। পুলিশের সামনেই তাঁরা হামলার শিকার হয়েছেন।’’
তৃণমূল ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি নির্ণয় রায়ের দাবি, কলেজের ৪৮টি আসনের মধ্যে তারা ২৭টিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতছেন।
বাগডোগরা কলেজ নির্বাচনে পুলিশি নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এসিপি (পশ্চিম) প্রণব সিকদার অবশ্য বলেন, ‘‘সব পক্ষই মনোনয়ন পত্র তুলেছে। সমস্ত রিপোর্ট ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।’’
মালদহের ৯টি কলেজের মধ্যে ৬টি কলেজে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ তাদের মনোনয়ন তুলতে দেয়নি বলে বিরোধী ছাত্র সংগঠনগুলির অভিযোগ। তাই, ওই কলেজগুলিতে আগেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছে টিএমসিপি। বিরোধীরা শক্তিশালী থাকায় তিনটি কলেজে তাঁরা প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে পড়ে। চাঁচল, সামসি ও সাউথ মালদহ কলেজে এ দিন ছাত্র সংসদের নির্বাচন হয়।
ছাত্র পরিষদ ও এসএফআই আসন সমঝোতা করে চাঁচল ও সাউথ মালদহ কলেজে তৃণমূল ছাত্র পরিষদকে রুখে দিলেও সামসি কলেজে জয়ী হয় তারা। ১৯ টি আসনের মধ্যে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ পেয়েছে ১১টি আসন।
এ দিন শিলিগুড়ি কমার্স কলেজে ছাত্র সংসদের ২৫ টি আসনে মনোনয়ন পত্র তোলার প্রথম দিন ছিল। টিএমসিপি এবং ছাত্র পরিষদ মনোনয়ন পত্র তোলে। এবিভিপি’র অভিযোগ, তাদের প্রার্থীদের ফোন করে হুমকি দেওয়া হয়। তাতে অনেকেই ভয় পেয়ে যান। কয়েকজন গেলেও ভয়ে তারা মনোনয়ন পত্র তোলেননি।
ইসলামপুর কলেজে এ দিন মনোনয়ন পত্র তুলল টিএমসিপি। বিরোধীদের দেখা মেলেনি। শনিবার শেষ দিনে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে ইসলামপুর কলেজে মোতায়েন করা হয়েছিল বিশাল পুলিশবাহিনী।