বছর পর বছর বাড়ছে উচ্চ মাধ্যমিকে পাশের হার। তবে কলেজের সংখ্যা তেমন ভাবে বাড়েনি গৌড়বঙ্গে। পর্যাপ্ত কলেজের অভাবে উচ্চ শিক্ষার জন্য ভর্তি হতে বিপাকে পড়তে হচ্ছে গৌড়বঙ্গের তিন জেলার ছাত্র-ছাত্রীদের। তাই ভর্তির মরসুম শুরু হতেই কলেজের দাবিতে সরব হয়েছেন ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবক ও শিক্ষক মহলের একাংশ। এমনকী, কলেজের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে বলে জানিয়েছেন গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য গোপালচন্দ্র মিশ্র। তিনি বলেন, ‘‘কমপক্ষে আরও মহিলা সাতটি ডিগ্রি কলেজের প্রয়োজন রয়েছে। কলেজের সংখ্যা না বাড়লে চলতি শিক্ষাবর্ষে গৌড়বঙ্গের সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীদের ভর্তি নেওয়া সম্ভব হবে না। বিষয়টি উচ্চ শিক্ষা দফতরে জানানো হয়েছে। পাশাপাশি কলেজের জন্য সাধারণ মানুষদেরও এগিয়ে আসতে হবে।’’
জেলা শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বারে উচ্চ মাধ্যমিকে মালদহে ৭৯.২৩ এবং দক্ষিণ দিনাজপুরে ৭৮.১৩ ও উত্তর দিনাজপুরে ৭৮.৫২ শতাংশ পাশের হার। গত বছর মালদহে পাশের হার ছিল ৭৯.৭৬ শতাংশ। ২০১৫ সালে ৭৭ শতাংশ ছিল পাশের হার। এই জেলায় মোট ১৯৮টি উচ্চ মাধ্যমিক এবং ৮১টি হাই মাদ্রাসা রয়েছে। ফলে কলেজগুলিতে ভর্তির ক্ষেত্রে চাপ বাড়ছে। গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে মালদহ সহ দুই দিনাজপুর মিলিয়ে মোট ২৪টি কলেজ রয়েছে। তার মধ্যে মালদহ জেলায় ১১টি ও বাকি ১৩টি রয়েছে দুই দিনাজপুরে। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তিন জেলার সমস্ত কলেজে এখন ১ লক্ষ ৫৫ হাজার ছাত্রছাত্রী রয়েছে। তার মধ্যে মালদহ জেলাতেই রয়েছে ৭০ শতাংশ। বিগত বছর প্রতিটি কলেজে ভর্তির ক্ষেত্রে পড়ুয়াদের আবেদন জমা পড়েছিল প্রায় ছয় হাজার। গৌড়বঙ্গের তিন জেলার অধিকাংশ কলেজে পরিকাঠামো অনুযায়ী দু’হাজারের মতো ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। এমন হলে স্নাতক স্তরে ভর্তি হওয়ার ক্ষেত্রে বিপাকে পড়তে হবে ছাত্র-ছাত্রীদের।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গৌড়বঙ্গের তিন জেলা সহ মালদহের কালিয়াচক, মোথাবাড়ি, চাঁচল, হরিশ্চন্দ্রপুর ও হবিবপুর ব্লকে একটি করে কলেজের প্রয়োজন রয়েছে। মালদহ ও দক্ষিণ দিনাজপুরে আরও দু’টি মহিলা কলেজের প্রয়োজন।
জেলাতে কলেজের দাবিতে জনপ্রতিনিধিরা সরব হলেও আজও তা বাস্তবায়িত হয়নি। মোথাবাড়ির বিধায়ক কংগ্রেসের সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, ‘‘মোথাবাড়িতে কলেজের দাবিতে আমি একাধিকবার বিধানসভায় সরব হয়েছি। তবে কোনও কাজ হয়নি।’’ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্তা বলেন, কলেজ তৈরির জন্য বিতর্কহীন পাঁচ একর জমি সংগ্রহ করতে হয়। তারপরে ২৫ লক্ষ টাকার ফান্ড তৈরি করে স্থানীয় একটি কমিটি তৈরি করে বিশ্ববিদ্যালয় জমা দিতে হয়। তারপরই সেই প্রস্তাব উচ্চ শিক্ষা দফতরে পাঠানো যায়। গৌড়বঙ্গ অধ্যক্ষ অ্যাসোসিয়শনের সম্পাদক মহম্মদ সামসুল হক বলেন, সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। তা না হলে আমাদের ছেলে-মেয়েরা স্নাতকস্তরে ভর্তির সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবে।