পুরসভায় গেট নিয়ে তোলপাড়

মেয়রের দফতরে ঢোকার আগে কোলাপসিবল গেট লাগানো নিয়ে সরগরম হয়ে উঠেছে শিলিগুড়ি পুরসভা। ইতিমধ্যেই ওই গেট লাগানোর প্রক্রিয়া শুরু হওয়ায় মেয়র ঘর লাগোয়া অফিস ছেড়ে অন্যত্র বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পুর সচিব।

Advertisement

সৌমিত্র কুণ্ডু

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০১৬ ০১:৩৮
Share:

মেয়রের দফতরে ঢোকার আগে কোলাপসিবল গেট লাগানো নিয়ে সরগরম হয়ে উঠেছে শিলিগুড়ি পুরসভা।

Advertisement

ইতিমধ্যেই ওই গেট লাগানোর প্রক্রিয়া শুরু হওয়ায় মেয়র ঘর লাগোয়া অফিস ছেড়ে অন্যত্র বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পুর সচিব। সোমবার ওই ঘটনায় পুরকর্মী, আধিকারিকদের একাংশের মধ্যে গুঞ্জন ছড়িয়েছে। কেন না নিরাপত্তার স্বার্থে ভিআইপি জোন করে যেখানে কোলাপসিবল গেট বসানো হয়েছে, তার মধ্যে মেয়রের দফতর ছাড়াও পুর কমিশনার, ফিনান্স অফিসার, ডেপুটি মেয়র এবং চেয়ারম্যানের চেম্বার রয়েছে। অথচ গেটের বাইরে থাকছে পুরসভার আধিকারিকদের মধ্যে অন্যতম পুর সচিবের চেম্বারটি। তাতেই তিনি ক্ষুণ্ণ বলে পুরসভার কর্মী, আধিকারিকদের একাংশ জানিয়েছেন।

যদিও পুরসচিব সপ্তর্ষি নাগ তা নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। এদিনই তিনি পুরসভার প্রধান ভবনের পিছনের অংশে ইউপিই সেলের যে বিল্ডিং রয়েছে সেখানে একটি ঘরে বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সেটি ইউপিই সেলের দায়িত্বে যিনি রয়েছেন তিনি বসতেন। তাঁর বসার জন্য পাশের একটি ঘরে জায়গা করা হচ্ছে। পুর সচিব এতদিন যেখানে বসতেন সেই অফিস থেকে কম্পিউটার এবং অন্যান্য সামগ্রী ওই ঘরে স্থানান্তরও করে নিয়েছেন।

Advertisement

কেন এই গেট লাগানো হল? মেয়র অশোক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘অনেক আগে এক সময় গেটটি ছিল। ফের তা লাগানো হল। কেন না বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি দাবিদাওয়া জানাতে এসে দফতরের বাইরে করিডরের ওই অংশে অবস্থান বিক্ষোভ দেখান। হট্টগোল হয়। তাতে সমস্যা সৃষ্টি হয়।’’ তাঁর প্রশ্ন, নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর দফতরের বাইরে কী কেউ এ ভাবে অবস্থান বিক্ষোভ দেখাতে পারেন? তা ছাড়া সমস্যা নিয়ে পুরসভার তরফে পুলিশকে জানানো হয়েছিল। পুলিশ ব্যবস্থা না নেওয়াতেই গেট বসাতে হল। ভিআইপি জোন করে কোলাপসিবল গেট দিয়ে করিডরের ওই অংশে নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হলেও পুর সচিবের দফতর তার বাইরে রাখা হল কেন? মেয়র বলেন, ‘‘তেমন কোনও বিষয় নয়। তবু সমস্যা হলে পুর কমিশনারকে দেখতে বলব।’’

পুর সচিবের ঘনিষ্ঠরাই জানিয়েছেন, তাঁর দফতর গেটের বাইরে থাকলে অভাব অভিযোগ সংক্রান্ত বিভিন্ন ঝামেলা হলে লোকে তাঁর দফতরেই যাবে। তাঁকে বেশি করে ঝক্কি পোহাতে হবে। পুরকর্মী, আধিকারিকদের একাংশের মধ্যেও সেই প্রশ্নে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। করিডরে কোলাপসিবল গেট বসিয়ে তার ভিতরে মেয়র, ডেপুটি মেয়র, চেয়ারম্যান, পুর কমিশনার, ফিনান্স অফিসারদের রাখা হলে পুর সচিবের দফতরটিও রাখা উচিত ছিল বলেই তাঁরা মনে করছেন। তা ছাড়া তিনি পাশের বিল্ডিংয়ে বসলে ফাইল আনা নেওয়া করতে বারবার তাঁর কাছে যেতে কর্মীদের বিস্তর দুর্ভোগে পড়তে হবে বলেই তাঁরা মনে করছেন।

পুরসভায় বিরোধী তৃণমূলের প্রশ্ন, পুরসভায় কী তা হলে নিরাপত্তার অভাব রয়েছে?

বিরোধী দলনেতা রঞ্জন সরকার বলেন, ‘‘মেয়রের মাথা ঠিক নেই। ওঁরা বন্‌ধ ডাকছেন। গণতান্ত্রিক আন্দোলনের কথা বলছেন। আবার তিনি আন্দোলন, গণতান্ত্রিক অধিকার খর্ব করতে চাইছেন।’’

তা ছাড়া এ ভাবে কোলাপসিবল গেট দিয়ে নিজেকে আলাদা করে মেয়র ‘আমরা-ওরা’ বিভেদ তৈরি করতে চাইছেন বলেও বিরোধী দলনেতার অভিযোগ।

পুর কমিশনার সোনম ওয়াংদি ভুটিয়া বলেন, ‘‘মেয়রের দফতর থাকায় নিরাপত্তা সংক্রান্ত কারণে গেট বসানো হয়েছে।’’ পুরসভার একটি সূত্রই জানিয়েছে, প্রাক্তন মেয়র প্রয়াত বিকাশ ঘোষের সময় করিডরে কোলাপসিবল গেট বসানো হয়েছিল। গেটে নিরাপত্তা বসালে বারবার যাতায়াতের ক্ষেত্রে সমস্যা হয় বলে পরে তা তুলে দেওয়া হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন