খুচরো নিয়ে রোজ ঝগড়া রায়গঞ্জে

প্রতিদিনই খুচরোর লেনদেন নিয়ে বাসিন্দাদের সঙ্গে ব্যবসায়ী, টোটো ও রিকশা চালকদের প্রকাশ্যেই বচসা বেধে যাচ্ছে। শহরের নিউ মার্কেট এলাকার পান ও সিগারেট ব্যবসায়ী শুভঙ্কর কুন্ডার প্রশ্ন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকার বা রিজার্ভ ব্যাঙ্ক খুচরো বাতিল করেনি। তাহলে বিভিন্ন ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ গ্রাহকদের খুচরো নিতে বাধ্য করলেও কেনও তাঁরা খুচরো নেবেন না?’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০১৭ ০৩:০০
Share:

রায়গঞ্জ স্টেশনের প্লাটফর্মে তিরিশ বছর ধরে ঝালমুড়ি বিক্রি করেন সুধীর দাস। রায়গঞ্জ শহরের উকিলপাড়ার বাসিন্দা সুধীরবাবুর দাবি, গত একমাস ধরে তাঁর কাছে তিন হাজার টাকার খুচরো পয়সা জমে গিয়েছে। দু’হাজার টাকাই এক টাকার কয়েন। সুধীরবাবুর কথায়, ‘‘খুচরোর বাড়বাড়ন্তে ব্যবসা লাটে উঠেছে। মহাজন ও ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ খুচরো নিতে চাইছেন না। দুটাকা, পাঁচ টাকা ও দশটাকার কয়েন বাজারে অনেক কষ্টে চালাতে পারলেও এক টাকার কয়েন কেউই নিতে চাইছেন না। এরকম চলতে থাকলে ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাবে।’’

Advertisement

একই অভিজ্ঞতা রবীন্দ্রপল্লির বাসিন্দা অপূর্ব সাহার। স্টেশনের প্লাটফর্মে খবরের কাগজ ও ম্যাগাজিন বিক্রি করেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, ‘‘খুচরো নেওয়ার জন্য প্রতিদিন ক্রেতারা চাপ দিচ্ছেন। ব্যবসা চালু রাখতে খুচরো নিতে বাধ্য হচ্ছি। অথচ কোনও ক্রেতা ১০ বা ২০ টাকার নোট দিয়ে পেপার ও ম্যাগাজিন কেনার পর খুচরো এক ও দুই টাকার কয়েন ফেরত নিতে চাইছেন না। ব্যাঙ্ক, মহাজন, হাটে-বাজারেও কেউ খুচরো নিতে চাইছেন না।’’ তিনি জানান, ব্যবসায়ী ও বাসিন্দাদের সকলের স্বার্থে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের খুচরো নেওয়া উচিত।

সুধীরবাবু ও অপূর্ববাবুর মতো খুচরোর বাড়ন্তে সমস্যায় পড়েছেন শহরের সমস্ত বাজার ও দোকানের ব্যবসায়ীরাও। প্রতিদিনই খুচরোর লেনদেন নিয়ে বাসিন্দাদের সঙ্গে ব্যবসায়ী, টোটো ও রিকশা চালকদের প্রকাশ্যেই বচসা বেধে যাচ্ছে। শহরের নিউ মার্কেট এলাকার পান ও সিগারেট ব্যবসায়ী শুভঙ্কর কুন্ডার প্রশ্ন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকার বা রিজার্ভ ব্যাঙ্ক খুচরো বাতিল করেনি। তাহলে বিভিন্ন ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ গ্রাহকদের খুচরো নিতে বাধ্য করলেও কেনও তাঁরা খুচরো নেবেন না?’’ তাঁর দাবি, বাসিন্দা, মহাজন, আনাজ ও মাছ ব্যবসায়ীরা খুচরো নিতে চাইছেন না। অথচ ব্যবসা চালু রাখতে ব্যবসায়ীদের একাংশ খুচরো নিতে বাধ্য হচ্ছেন। ছোট ব্যবসায়ীরা ক্ষতির মুখে পড়েছেন।

Advertisement

কিছুদিন আগে ব্যবসায়ীদের দুটি সংগঠন রায়গঞ্জ মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশন ও চেম্বার অব কমার্স স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার রায়গঞ্জ শাখার ম্যানেজারের কাছে আবেদনও জানান। তাঁরা জানান, গ্রাহকদের কাছ থেকে খুচরো নেওয়া শুরু না করা পর্যন্ত গ্রাহকদের খুচরো দেওয়া বন্ধ রাখা হোক।

কিন্তু তা সত্ত্বেও পরিস্থিতি বদলায়নি বলে অভিযোগ। ওই শাখার ম্যানেজার সঞ্জীব রায় কোনও মন্তব্য করতে চাননি। জেলাশাসক আয়েশা রানির দাবি, ‘‘অভিযোগ পেয়েছি। প্রশাসন বিভিন্ন ব্যাঙ্ক ও রিজার্ভ ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন