ভ্রুণের লিঙ্গ নির্ধারণ, কন্যা ভ্রুণ নষ্ট করার প্রবণতা, শিশু কন্যা পাচার রুখতে স্কুল, কলেজেও সচেতনতা প্রচার চালাবে স্বাস্থ্য দফতর। নজরদারি বাড়ানো হবে আলট্রাসোনোগ্রাফি ক্লিনিকগুলিতে। শুক্রবার রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের অ্যাডিশনাল ডিরেক্টর (প্রশাসনিক) অদিতি কিশোর সরকার সাত জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকদের নিয়ে এ ব্যাপারে বৈঠক করেন। সেখানেই তিনি ওই নির্দেশ দেন। সেই সঙ্গে শিশু মৃত্যুর হার কমাতে মা এবং শিশু স্বাস্থ্য রক্ষার বিষয়েও গুরুত্ব দেওয়ার কথা জানানো হয়েছে।
অ্যাডিশনাল ডিরেক্টর (প্রশাসনিক) বলেন, ‘‘কন্যা সন্তান হার কমছে বলে সতর্ক হতে হবে। স্কুলের দশম একাদশ শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের, কলেজ পড়ুয়াদের মধ্যেও সচেতনতা প্রচার চালানোর পরিকল্পনা হয়েছে। কেননা, তারা ভবিষ্যতে বাবা, মা হবেন। যাঁরা মা, বাবা হতে চলেছেন, ক্লিনিকগুলিতে চিকিৎসা করাতে আসছেন, তাঁদের মধ্যেও সচেতনতা প্রচার চলবে।’’ তবে তাঁর দাবি, হরিয়ানা, পঞ্জাবের মতো দেশের অন্য রাজ্যগুলির একাংশের তুলনায় এ রাজ্যে ছয় বছর বয়স পর্যন্ত পুত্র এবং কন্যা সন্তানের অনুপাত অনেকটাই ভাল। বাইরের ওই সমস্ত রাজ্যে এক হাজার পুত্র সন্তান হলে কন্যা সন্তান ৭৫০টিরও নীচে। তিনি জানান, রাজ্যে কন্যাশ্রী, যুবশ্রীর মতো প্রকল্পের প্রভাবেও কিছুটা পরিস্থিতি উন্নত হচ্ছে বলে তাঁরা মনে করেন।
স্বাস্থ্য কর্তাদের একাংশের সন্দেহ ইউএসজি ক্লিনিকগুলিতে চুপি সারে ভ্রুণের লিঙ্গ নির্ধারণ চলছে। কন্যা ব্রুণ নষ্ট করার চেষ্টা হচ্ছে। কম বয়সী শিশুদের পাচার চলছে অনেক ক্ষেত্রে। এসব বন্ধ করতে সচেতনতা প্রচারের পাশাপাশি শিশু মৃত্যুর হার আরও কমানোর উপরেও গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। স্বাস্থ্য আধিকারিকদের একাংশ জানান, জেলাগুলিতে আলট্রাসোনগ্রাফি ক্লিনিকগুলির উপর নজরদারির কথা সুপ্রিমকোর্টের তরফে অনেক আগেই বলা হয়েছে। সেই মতো নিয়মিত রিপোর্ট পাঠাতে হয় জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিকদের। তবে অনেক ক্ষেত্রেই নজরদারির খামতি থাকার অভিযোগ রয়েইছে। দার্জিলিং জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অসিত বিশ্বাস জানান, সম্প্রতি জেলার বিভিন্ন ইউএসজি ক্লিনিকগুলির মালিক এবং অলট্রাসোনলজিস্টদের ডেকে সচেতন করা হয়েছে। পাশাপাশি কোথায় কী পরীক্ষা হয়েছে সেই রিপোর্ট পাঠাতে বলা হয়েছে। নিয়মিত সেই রিপোর্ট যায় স্বাস্থ্য দফতরে। দার্জিলি জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ৫৪টি ইউএসজি ক্লিনিক রয়েছে। প্রতি সপ্তাহে সেগুলি পরিদর্শন করা হবে।