উপাচার্যের বিরুদ্ধে পোস্টার

এদিকে, গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ ওঠায় জেলা প্রশাসনকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন রাষ্ট্রীয় উচ্চতর শিক্ষা অভিযান কর্তৃপক্ষ। জেলাশাসক কৌশিক ভট্টাচার্য বলেন, “তদন্তের চিঠি এখনও আমি পাইনি। তবে বিষয়টি শুনেছি।”

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০১৭ ০৩:৪১
Share:

বিতর্ক: বিশ্ববিদ্যালয়ে এই পোস্টারে হইচই। নিজস্ব চিত্র

উপাচার্যের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে পোষ্টার পড়ল গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে। রাজ্য সরকারের হস্তক্ষেপও দাবি করা হয়েছে। বুধবার সকালে ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসতেই হইচই পড়ে গিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্দরে। পোষ্টার টাঙানোর ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের একাংশ যুক্ত বলে দাবি কর্তৃপক্ষের। ফের পোষ্টারে রাজ্য সরকারের হস্তক্ষেপের দাবি ওঠায় বিতর্ক তৈরি হয়েছে। সম্প্রতি, মুখ্যমন্ত্রীর ছবি নিয়ে পড়ুয়াদের একাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্নীতি নিয়ে রাস্তায় নেমে আন্দোলন করেছিল। সেই ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়েছিল রাজ্যের শিক্ষা দফতর। তারপরেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গনে রাজ্য সরকারের হস্তক্ষেপ চেয়ে উপাচার্য গোপাল চন্দ্র মিশ্রের বিরুদ্ধে পোষ্টার দেওয়ায় জোর চর্চা শুরু হয়েছে। তবে এ বারের ঘটনায় ছাত্র-ছাত্রীরা প্রকাশ্যে আসতে নারাজ হলেও নাম জড়িয়েছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের কর্মী সমর্থকদের। এদিকে, গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ ওঠায় জেলা প্রশাসনকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন রাষ্ট্রীয় উচ্চতর শিক্ষা অভিযান কর্তৃপক্ষ। জেলাশাসক কৌশিক ভট্টাচার্য বলেন, “তদন্তের চিঠি এখনও আমি পাইনি। তবে বিষয়টি শুনেছি।”

Advertisement

একের পর এক ঘটনা ঘটেই চলেছে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে। কখনও বিশ্ববিদ্যালয়ের আধিকারিকদের ইস্তফা নিয়ে, আবার কখনও নম্বর বৃদ্ধির দাবিতে ছাত্র-ছাত্রীদের আন্দোলন। সপ্তাহ খানেক আগে ভর্তিতে অনিয়মের অভিযোগে জেলা কংগ্রেস নেতৃত্ব প্রায় সাত ঘণ্টা ধরে উপাচার্য গোপালবাবুকে ঘেরাও করে রাখেন। লাগাতার ঘেরাওয়ের জেরে মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছেন গোপালবাবু। তারপর থেকেই তিনি কলকাতায় রয়েছেন। এরই মাঝে তাঁর বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস জুড়ে পোষ্টার টাঙানো হয়েছে। ছাত্র-ছাত্রীদের দাবি, এমএ, এম-ফিল, সহ বিভিন্ন পরীক্ষা হলেও এখনও ফলাফল প্রকাশিত হয়নি। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটও বন্ধ রয়েছে। যার জন্য অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন বন্ধ রয়েছে।

নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক পড়ুয়াদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। অথচ এমন পরিস্থিতিতে উপাচার্য নেই। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য রাজ্য সরকারের হস্তক্ষেপ চাওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এক কর্তা বলেন, “তৃণমূল সরকার বারবার বলছে শিক্ষাক্ষেত্রে রাজনীতি বরদাস্ত করা হবে না। তবুও রাজ্য সরকারকে জড়িয়ে আন্দোলন চলছেই।” তৃণমূল ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি প্রসূন রায় বলেন, “আমাদের দলকে বদনাম করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের একাংশ পড়ুয়াদের উসকে পোষ্টার লাগাচ্ছে।”

Advertisement

এদিকে, রাষ্ট্রীয় উচ্চতর শিক্ষা অভিযান কর্তৃপক্ষের টাকা খরচ নিয়ে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। জানা গিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন সময়ে ১৫ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। সেই টাকা নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। শিক্ষা অভিযান কর্তৃপক্ষের তরফে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে জেলাশাসক পুরো ঘটনার তদন্ত করবে। এমনকী, আগামীতেও তাদের টাকা জেলা প্রশাসন খরচ করবে বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে। উপাচার্য গোপালবাবু বলেন, “শুনেছি কিছু পোষ্টার পড়েছে। স্বচ্ছ ভাবেই বিশ্ববিদ্যালয় চলছে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement