জমি এই আছে, এই নেই

জমির মাপ এত বড় না হলেও রেহাই নেই। ২০০৪ সালে চম্পাসারিরই পোকাইজোতে চার কাঠা জমি কিনে পাঁচিল দিয়ে ঘিরে রেখেছিলেন পটনার আল্পনা দেবী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০১৮ ০২:৪৫
Share:

সরকারি জমি বেদখল হওয়া আটকাতে মুখ্যমন্ত্রী কড়া বার্তা দিয়েছেন। বাস্তব ছবিটা কেমন, দেখল আনন্দবাজার।

মুখ্যমন্ত্রী সদ্য বার্তা দিয়েছেন, জমি মাফিয়াদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করতে হবে। সাধারণ মানুষের প্রশ্ন, এ বারে কি তা হলে সমস্যা কমবে? প্রশাসনের একটি অংশের দাবি, শিলিগুড়ি ও সংলগ্ন এলাকায় জমি কিনে ফেলে রাখলে এখনও প্রতি পদে বেহাত হওয়ার আশঙ্কা।

Advertisement

যেমন, চম্পসারির দেবীডাঙা এলাকার প্রায় ৫২ কাঠা জমি। এই জমি দখলকে ঘিরে নানা অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, জমির কাগজপত্রে জালিয়াতি করে কলকাতার বাসিন্দা এক মহিলার জমি হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। এতে শাসক দলের এক প্রাক্তন কাউন্সিলর, পুরভোটের প্রার্থী-সহ চার জনের নাম জড়িয়েছে।

জমির মাপ এত বড় না হলেও রেহাই নেই। ২০০৪ সালে চম্পাসারিরই পোকাইজোতে চার কাঠা জমি কিনে পাঁচিল দিয়ে ঘিরে রেখেছিলেন পটনার আল্পনা দেবী। ২০১৭ সালে এসে দেখেন, দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকে পড়েছে লোকজন। আল্পনা দেবী প্রধাননগর থানায় অভিযোগ করলে পুলিশ ভূমি দফতরের কাছে জানতে চায়, মালিকানা কার। ভূমি দফতর জানিয়ে দেয়, আল্পনা দেবীর নথি ঠিক আছে। কিন্তু, এখনও জমি উদ্ধার হয়নি।

Advertisement

অভিযোগ, এলাকার শাসক দলের এক নেতার জন্যই পুলিশ কিছু করতে পারছে না। এখন মুখ্যমন্ত্রী জমি মাফিয়াদের বিরুদ্ধে অভিযান করতে বলায় আশার আলো দেখছেন তাঁরা। এ ভাবেই শিলিগুড়ির ভক্তিনগর, প্রধাননগর, মাটিগাড়া, এনজেপি থানায় জমির মালিকানা নিয়ে গোলমালে অভিযোগের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এক সময়ে এনজেপি এলাকায় রাজত্ব ছিল জন নন্দীর। তাঁর হঠাৎ মৃত্যুর পরে এলাকায় দু’টি দল তৈরি হয়। এলাকার দখল নিয়ে নিত্য সংঘর্ষ চলত। এখন সেই সব অঞ্চল তুলনায় অনেক শান্ত।

কিন্তু শিলিগুড়ি সংলগ্ন জায়গাগুলিতে জমি দখল নিয়ে অভিযোগ কমেছে কি? পুলিশ সূত্রের খবর, শুধু এনজেপি-ই নয়, কমিশনারেটের নানা থানায় জমি দখল সংক্রান্ত অভিযোগ গড়ে প্রতি মাসে অন্তত ২০টি।

ভূমি দফতর সূত্রে খবর, রোজই মালিকানা নিয়ে বিতর্কের চিঠি আসে। জমি মাফিয়ারা প্রথমে ফাঁকা জমিতে কাউকে বসিয়ে দেন। সে জন্য মোটা টাকা আদায় করেন। ভুয়ো নথি বানিয়ে নেন। পরে তা দেখিয়ে পাল্টা অভিযোগে মামলা করেন। এরই মধ্যে চলে লেনদেন।

খাস শিলিগুড়িতে অবশ্য ফাঁকা জমি বিশেষ নেই। সেখানে বড় ইমারতে আবার অন্য সমস্যা। সেখানে ইমারতি কারবার ঘিরে পাড়ায়-পাড়ায় গড়ে উঠছে সিন্ডিকেট।

(কিশোর সাহা, কৌশিক চৌধুরী ও শুভঙ্কর চক্রবর্তীর প্রতিবেদন)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন