অমিতাভর ছবি মণ্ডপে

গত বৃহস্পতিবার গভীর রাতে টাকভর, বার্নেস বার্গ চা বাগান পেরিয়ে ঘন জঙ্গলের উতরাই পথ ধরে গুরুঙ্গবাহিনীকে তাড়া করেছিলেন অমিতাভরা।

Advertisement

কিশোর সাহা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০১৭ ০৩:১০
Share:

সম্মান: আমতলা যুবক সঙ্ঘের মণ্ডপে। নিজস্ব চিত্র

পুলিশ মাত্রেই বিস্তর অভিযোগের কাঠগড়ায়। বিশেষত, পুজোর মরসুমে। ভিড় সামাল দিতে হিমশিম খাওয়া, যানজট, শব্দবাজি রুখতে নাস্তানাবুদ হওয়া নিয়ে পুলিশের একাংশের সমালোচনায় মুখর হয় শিলিগুড়ি। অথচ এ বার শিলিগুড়ির কালীপুজোর অনেক মণ্ডপে শ্রদ্ধা জানানো হবে সেই পুলিশ বাহিনীরই একজনকে।

Advertisement

প্রাণবন্ত ওই তরুণ অফিসার অমিতাভ মালিকের অকালমৃত্যুর ঘটনায় শোকাহত পুজোর উদ্যোক্তাদের অনেকেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

গত বৃহস্পতিবার গভীর রাতে টাকভর, বার্নেস বার্গ চা বাগান পেরিয়ে ঘন জঙ্গলের উতরাই পথ ধরে গুরুঙ্গবাহিনীকে তাড়া করেছিলেন অমিতাভরা। ছোট রঙ্গিত নদীর ধারে ছিল শিবির। পুলিশের দলটি ধারেকাছে পৌঁছে টের পায়, শুধু জিএলপি নয়, প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত জঙ্গিরা ঘিরে রেখেছে গুরুঙ্গকে। তাতেও পিছু হঠেনি বাহিনী। উল্টে পুলিশের দলের তাড়ায় পালাতে শুরু করে দলটি। পালানোর সময় গুলিও ছোড়ে গুরুঙ্গের সঙ্গীরা। পুলিশের দাবি সেই গুলি লাগে সাব ইন্সপেক্টর অমিতাভের মাথায়। মাটিতে লুটিয়ে পড়েন অমিতাভ। অভিযানের সঙ্গীদের কয়েকজন জানিয়েছেন, পাল্টা গুলি ছুটে আসছে জেনেও বন্দুক হাতে অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছিলেন পুলিশমহলে ডাকাবুকো বলে পরিচিত সাব ইন্সপেক্টর অমিতাভ মালিক।

Advertisement

সে কথা মাথায় রেখেই কালীপুজোর উদ্যোক্তাদের অনেকেই শ্রদ্ধা জানাতে প্রস্তুতি নিয়েছেন। যেমন আশ্রমপাড়ার আমতলা যুব সমিতির কথাই ধরা যাক। সেখানে মণ্ডপে মূর্তি পৌঁছনোর আগেই অমিতাভ মালিকের ফ্লেক্স বসেছে। মণ্ডপের সামনেই সেখানে ফুল-মালা-মোমবাতি জ্বালিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হবে রোজই। আমতলা ক্লাবের কালীপুজো কমিটির সাধারণ সম্পাদক রাকা দে ধারা বলেন, ‘‘নিহত পুলিশ অফিসারের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোটা আমাদের কর্তব্য। দর্শনার্থীরাও শ্রদ্ধা জানাতে পারবেন।’’

শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের উল্টো দিকে হাকিমপাড়ার গ্লোব ট্রটার্স স্পোর্টিং ক্লাবে (জিটিএস) ঘটনার পরেই অমিতাভের ছবি টাঙিয়ে ফুল-মোমবাতি দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন সদস্য-সদস্যারা। ক্লাবের সকলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, মণ্ডপের পাশেই থাকবে অমিতাভের ছবি। জিটিএসের সম্পাদক কুমারকান্তি ঘোষ বলেন, ‘‘সাধারণত, পুলিশ শুধু সমালোচিতই হয়। কিন্তু, পুলিশ যে শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করে সেটাও যেন আমরা মাথায় রাখি। অমিতাভ মালিকের অকালে মৃত্যুর ঘটনায় আমরা শোকাহত। সে জন্যই কালীপুজোর দিনগুলিতে উৎসবে মাতলেও যেন ওঁকে শ্রদ্ধা জানাতে ভুলতে চাই না।’’ শহরের মহাবীরস্থান থেকে চম্পাসারি, মিলনপল্লি থেকে ভক্তিনগর, নকশালবাড়ি,খড়িবাড়ির অনেক কালীপুজোর মণ্ডপেই দেখা যাবে নিহত অমিতাভের ছবি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন