পরীক্ষাকেন্দ্রের মধ্যে মোবাইল নিষিদ্ধ। তা সত্ত্বেও কী করে মোবাইল ঢুকল, সেই উত্তর খুঁজছিলেন সিআইডি অফিসারেরা। এখন জানা গিয়েছে, জুতো-মোজার মধ্যে গুঁজে পরীক্ষাকেন্দ্রে মোবাইল নিয়ে ঢুকেছে ‘খোকাবাবু’ গ্রুপের সদস্যেরা। মালদহে গ্রেফতার হওয়া ওই গ্রুপের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করে এমনই তথ্য হাতে পেয়েছে সিআইডি। এমনকি, পরীক্ষার্থী ও ছাত্রদের পাশাপাশি বেশকিছু শিক্ষকও এর সঙ্গে যুক্ত বলে ধারণা গোয়েন্দাদের। মাধ্যমিকের প্রশ্নফাঁস-কাণ্ডের তদন্তে নেমে ‘খোকাবাবু’ নামে এক হোয়াট্সঅ্যাপ গ্রুপের হদিশ পায় সিআইডি। ওই গ্রুপের একাধিক সদস্য ইতিমধ্যে ধরা পড়েছে সিআইডির জালে।
পরীক্ষা শুরুর ১০ মিনিটের মধ্যে মাধ্যমিকের প্রশ্নপত্র বাইরে চলে আসত বলে অভিযোগ। হোয়াট্সঅ্যাপে ছড়িয়ে পড়ত সর্বত্র। মালদহ, উত্তর দিনাজপুর, জলপাইগুড়ি, বর্ধমান-সহ বিভিন্ন জেলায় পরীক্ষা চলাকালীন বাইরে হোয়াট্সঅ্যাপের মাধ্যমে মোবাইলে মোবাইলে ঘুরতে থাকে প্রশ্ন। তাতে অস্বস্তিতে পড়ে যায় মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। অথচ প্রশ্ন ফাঁস রুখতে পরীক্ষাকেন্দ্রগুলোতে মোতায়েন করা হয়েছিল প্রশাসনের আধিকারিকদেরও। তারপরেও এই ঘটনা নিয়ে বিব্রত প্রশাসন। প্রশ্নফাঁস-কাণ্ডের তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় সিআইডিকে। এরপরেই সামনে আসে ‘খোকাবাবু’ গ্রুপের মতো বিষয়গুলো।
কীভাবে প্রশ্ন ফাঁস করছিল ‘খোকাবাবুর’ গ্রুপের সদস্যরা? সিআইডির এক কর্তা বলেন, “পরীক্ষা শুরুর দশমিনিটের মধ্যেই মোবাইলে ছবি তুলে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা গ্রুপে আপলোড করে দিত। আর উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা উত্তরপত্র তৈরি করে গ্রপে আপলোড করত।” সিআইডি কর্তা জানান, জুতো, মোজার মধ্যে গুঁজে মোবাইল নিয়ে ঢুকে পড়ছে পরীক্ষার্থীদের একাংশ। সুযোগ বুঝে বা শৌচাগারে গিয়ে মোবাইল ফোন বের করে ছবি তুলে হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপে আপলোড করা হত। এক স্কুল শিক্ষক বলেন, “পরীক্ষাকেন্দ্রে প্রবেশের সময় পরীক্ষার্থীদের জামা এবং প্যান্টের পকেট আমরা খতিয়ে দেখি। তবে জুতো-মোজা খতিয়ে দেখা হয় না।” মালদহ জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) তাপসকুমার বিশ্বাস বলেন, “এ বার পরীক্ষাকেন্দ্রে মোবাইল নিয়ে প্রবেশ করার আগে আমরা ৪০টি মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত করেছিলাম। আগামী দিনে আরও সতর্ক থাকতে হবে।”
বর্ধমানের বেসরকারি আবাসিক মিশনের এক ছাত্র ‘খোকাবাবু’ নামে ওই হোয়াট্সঅ্যাপ গ্রুপ তৈরি করে প্রশ্নফাঁস চক্রটি চালাচ্ছিল বলে অভিযোগ।