মাধ্যমিকের মতো এ বার রাজ্য সরকারের চাকরির পরীক্ষাতেও হোয়াট্সঅ্যাপে প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ উঠল। রবিবার উত্তর দিনাজপুরের ৯৮টি পঞ্চায়েতের বিভিন্ন কর্মী নিয়োগের পরীক্ষা ছিল। অভিযোগ, ইসলামপুর ও চোপড়ায় ওই পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হোয়াট্সঅ্যাপে ফাঁস হয়ে যায়। অভিযোগ পেয়ে এক শিক্ষক-সহ চার জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
এ দিন পরীক্ষা শুরু হয় দুপুর ১২টায়। শুরুর পরেই মিলনপল্লি হাইস্কুলে এক পরীক্ষার্থী প্রশ্নপত্রের ছবি তুলে তা হোয়াট্সঅ্যাপে বাইরে পাঠিয়ে দেন বলে অভিযোগ। বিষয়টি নজরে আসতেই পরীক্ষার্থীকে ধরে ফেলেন কর্তব্যরত পরিদর্শক। পরে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। তদন্তে নেমে চোপড়া থেকে গ্রেফতার করা হয় দাসপাড়া স্কুলের এক শিক্ষককে। মহকুমাশাসক মণীশ মিশ্র বলেন, ‘‘মিলনপল্লি স্কুলে এক পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে মোবাইল উদ্ধার করা হয়। তিনি হোয়াট্সঅ্যাপে প্রশ্ন চোপড়ার ওই স্কুলশিক্ষককে পাঠিয়েছিলেন। ওই শিক্ষককেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অপরদিকে ডালখোলা থেকেও একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’’
৯৮টি পঞ্চায়েতে সহায়ক, কর্মী, ইঞ্জিনিয়ার, এগজিকিউটিভ অ্যাসিস্ট্যান্ট-সহ সাতটি পদে নিয়োগের পরীক্ষা ছিল। পরীক্ষার্থীদের একাংশের আসন পড়েছিল মিলনপল্লি হাইস্কুলে। অভিযোগ, পরীক্ষাকেন্দ্রে মোবাইল-সহ কোনওরকম বৈদ্যুতিন সামগ্রী নিষিদ্ধ ছিল। পরীক্ষা শুরুর দশ মিনিটের মধ্যেই মাসুদ করিম নামে এক পরীক্ষার্থীকে মোবাইল-সহ ধরা হয়। মোবাইলটি খতিয়ে দেখা যায়, সেটি থেকে প্রশ্নপত্রের ছবি দাসপাড়া স্কুলের বিজ্ঞানের শিক্ষক মেহবুব আলমকে পাঠানো হয়েছে। পরে মেহবুবকেও গ্রেফতার করা হয়। যদিও মেহবুব বলেন, ‘‘পাড়ার ছেলে বলেই হোয়াট্সঅ্যাপে পাঠিয়েছিল। আমি কোনও উত্তর জানাইনি।’’
অপরদিকে, ইসলামপুর থানার ভুজাগাঁও থেকে সাদিকুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তিকে প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগে গ্রেফতার করে পুলিশ। পুলিশের ধারণা, এর পিছনে বড় চক্র কাজ করছে। পুরো বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ওই সমস্ত পদে আবেদনের প্রায় আড়াই বছর পর পরীক্ষা হল। ইসলামপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কার্তিক মণ্ডল বলেন, ‘‘প্রশ্নপত্রের ছবি মোবাইলে তুলে তা পাঠাচ্ছিল। বিষয়টি জানতে পেরেই ইসলামপুর থেকে দুই পরীক্ষার্থীকে গ্রেফতার করা হয়। এক শিক্ষককে ধরা হয়েছে। ডালখোলা থেকেও একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’’ অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ডালখোলা কলেজে মোবাইল ফোন দেখে উত্তর দিচ্ছিলেন ইন্দ্রজিৎ মণ্ডল নামে এক পরীক্ষার্থী। নজরদারির দায়িত্বে থাকা এক ব্যক্তির নজরে পড়ে বিষয়টি। হাতেনাতে ধরে তাঁকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। পুলিশ সুত্রের খবর, ধৃত পরীক্ষার্থীর হাতে পরীক্ষা শুরুর কিছুক্ষণের মধ্যে মোবাইলে উত্তর এসে পৌঁছয়।