— প্রতীকী চিত্র।
মাইক বাজানোর প্রতিবাদ করায় কোচবিহারের দিনহাটায় এক মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর উপরে ‘হামলায়’ নাম জড়িয়েছে এক তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যার। অভিযোগ পেয়ে রবিবার রাতে মুর্শিদা খাতুন বিবি নামে ওই পঞ্চায়েত সদস্যাকে থানায় ডেকে পাঠায় পুলিশ। সূত্রের খবর, দফায়-দফায় জিজ্ঞাসাবাদ চলে। সোমবার মাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ হওয়ার পরে, তাঁকে ছাড়া হয়। ছাত্রী-নিগ্রহে অভিযুক্ত শাসক দলের ওই নেত্রীকে কেন গ্রেফতার করল না পুলিশ, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
কোচবিহার জেলা পুলিশ সুপার দ্যুতিমান ভট্টাচার্য বলেন, “ছাত্রীর অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায় বলেছেন, “কোচবিহারের ওই পরীক্ষার্থীর জন্য হাসপাতালে পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। তবে মেয়েটি পরীক্ষাকেন্দ্র থেকেই পরীক্ষা দিয়েছে।”
বিজেপি নেতা তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের মন্তব্য, “এখন নিরীহ পরীক্ষার্থীও তৃণমূলের আক্রমণের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না। পুলিশ দলদাস। রাজ্যের কী অবস্থা, তা এখান থেকেই পরিষ্কার।” যদিও পুলিশের দাবি, কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হলেই গ্রেফতার করা যায় না। তদন্তে প্রয়োজনীয় তথ্যপ্রমাণ মেলার পরে গ্রেফতার করা হয়। এ ক্ষেত্রেও বিষয়টি জানতে আগে ওই পঞ্চায়েত সদস্যাকে ডাকা হয়েছিল। দিনহাটা থানার এক পুলিশ আধিকারিকের বক্তব্য, “অভিযোগের ভিত্তিতে ওই পঞ্চায়েত সদস্যাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় ডাকা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের পরে, তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।”
অভিযোগ, শনিবার রাতে দিনহাটা ১ ব্লকের ওকরাবাড়ি পঞ্চায়েতের কাওরাই গ্রামে তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যা মুর্শিদা খাতুন বিবির বাড়ির অনুষ্ঠানে মাইক বাজছিল। যার প্রতিবাদ করে ওই ছাত্রী। অভিযোগ, সে সময়ে মুর্শিদা, তাঁর স্বামী এবং পরিবারের লোকেরা ওই ছাত্রীকে মারধর করেন। ধারাল অস্ত্র দিয়ে ভয় দেখানো হয়। আহত ছাত্রীকে সে রাতেই দিনহাটা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। রবিবার রাতে হাসপাতাল থেকে ছাড়া হয়।
পরিবার সূত্রে খবর, হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে এক আত্মীয়ের বাড়িতে রয়েছে ওই মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। সোমবার পুলিশ পাহারায় সেখান থেকেই গীতালদহ হাইস্কুলে পরীক্ষাকেন্দ্রে যায়। ওই ছাত্রী বলে, “এখনও শরীর পুরো সুস্থ হয়নি। পরীক্ষা শেষে আত্মীয়ের বাড়িতেই থাকব।” তার আশঙ্কা, “বাড়িতে ফিরলে, আমার উপরে ফের হামলা হতে পারে।”
অভিযুক্ত তৃণমূল সদস্যা মুর্শিদা বলেন, “আমার বাড়িতে মাইক বাজানোর অভিযোগ ঠিক নয়। আমাদের বিরুদ্ধে ওঠা হামলার অভিযোগও মিথ্যা। পুলিশ আমাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। সব জানিয়েছি।” মুর্শিদার স্বামী টিঙ্কু খন্দকার কথা না বলে ফোন কেটে দেন। তবে উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী তথা দিনহাটার তৃণমূল বিধায়ক উদয়ন গুহ বলেন, “পুলিশ তদন্ত করে, অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেবে।”