পুরোহিতকে ফোন করে দেবোত্তর ট্রাস্ট বোর্ডের জন্য পর্যটন দফতরের ৬৭ লক্ষ টাকা আর্থিক বরাদ্দের খবর দিলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। বৃহস্পতিবার সকালে কলকাতা থেকে কোচবিহার মদনমোহন মন্দিরের পুরোহিত তথা দেবোত্তর কর্মচারি সমিতির সভাপতি হীরেন্দ্র নাথ ভট্টাচার্যের মোবাইলে ফোন করেন তিনি। মন্দিরে পুজোর প্রস্তুতি শুরুর মুখে আচমকা মন্ত্রীর ফোন পেয়ে প্রাথমিকভাবে কিছুটা ঘাবড়ে যান হীরেন্দ্রনাথবাবু। পরে অবশ্য কথা বলার পর খুশিতে আপ্লুত হয়ে পড়েন তিনি। সহকর্মীদেরও সুখবর জানিয়ে দেন। মূহূর্তের মধ্যে গোটা মন্দির চত্বর তো বটেই অন্যত্র ছড়িয়ে থাকা দেবোত্তর কর্মীদের কাছেও ওই খবর পৌঁছায়। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “পর্যটন দফতর দেবোত্তর ট্রাস্ট বোর্ডের জন্য ৬৭ লক্ষ টাকা বরাদ্দ অনুমোদন করেছে। কর্মীদের বেতন, নিত্যপুজোর জন্য ওই বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সকালে মন্দিরের পুরোহিতকে ফোন করে ওই খবর জানিয়েছি। এজন্য মুখ্যমন্ত্রীকে কৃতজ্ঞতা ও পর্যটন মন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।” পর্যটন দফতর মদনমোহন বাড়ি লাগোয়া বৈরাগী দিঘি সৌন্দর্যায়নের ব্যাপারেও উদ্যোগ নিচ্ছে বলে তিনি জানান।
দেবোত্তর কর্মচারী সমিতির সভাপতি তথা মদনমোহন মন্দিরের পুরোহিত হীরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য বলেন, “ এভাবে আগে কখনও আমাকে সরাসরি কোনও মন্ত্রী ফোন করেননি। তাই প্রথমে কিছুটা সংশয়ে ছিলাম। তবে কথা বলার পরে তা কেটে যায়। উনি আর্থিক বরাদ্দের কথা জানানোয় স্বস্তি মিলেছে।” প্রশাসনের এক কর্তা জানান, জুন মাসের বকেয়া মেটানোর ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
দেবোত্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, ট্রাস্ট বোর্ডের আওতায় কোচবিহারের মদনমোহন মন্দির সহ ২২টি মন্দির ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তালিকায় ভিন রাজ্যের একাধিক মন্দির রয়েছে। স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলিয়ে কর্মী সংখ্যা দেড় শতাধিক। ফি মাসে তাঁদের বেতন বাবদ ১৭ লক্ষ টাকা দরকার হয়। দীর্ঘদিন ধরে ওই বরাদ্দের পাশাপাশি নিত্যপুজোর জন্যও বছরে তিন কিস্তিতে বরাদ্দ দিত পর্যটন দফতর। ডিসেম্বর মাস থেকে ওই বরাদ্দ অনিয়মিত হয়ে পড়ায় সমস্যা হচ্ছে। বেশ কয়েক মাস নির্দিষ্ট সময়ে বেতন আটকে যায়। জুনের বেতনও এখনও মেলেনি। এই পরিস্থিতিতে উদ্বেগ বাড়ছিল কর্মীদের মধ্যে।
বিষয়টি জেনে সমস্যা মেটাতে উদ্যোগী হন রবীন্দ্রনাথবাবু। কোচবিহার দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক মিহির গোস্বামীও দেবোত্তরের আর্থিক সমস্যা মেটানোর ব্যাপারে পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেবের সঙ্গে দেখা করেন। গত ২৫ জুন তিনি ওই ব্যাপারে একটি স্মারকলিপি দেন। এনবিএসটিসির চেয়ারম্যান বিধায়ক মিহিরবাবু বলেন, “ওই ব্যাপারে আবেদনের যথার্থতা বুঝে দ্রুত রাজ্য সরকার আর্থিক বরাদ্দ দিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে, পর্যটন মন্ত্রীর চেষ্টায় কম সময়ে সমস্যার সমাধান হল।”