পাঁচ বছর আগে শুরু করেছিলেন তৎকালীন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটের মাঝিয়ান কৃষি গবেষণা কেন্দ্রে কৃষি মহাবিদ্যালয়ের পরিকাঠামো উন্নয়নের সেই কাজ দ্রুত সম্পন্ন করতে উদ্যোগী হলেন বর্তমান মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। আজ, বুধবার বালুরঘাট সফরে এসে রবীন্দ্রনাথবাবু প্রথমে ওই কৃষি কলেজ পরিদর্শন যাবেন।
গত বছর বালুরঘাটের মাঝিয়ানে উত্তরবঙ্গের কোচবিহারের পুন্ডিবাড়ি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন দ্বিতীয় একটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস চালু হয়। প্রথম পাঠ্যবর্ষে সেখানে আপাতত ৩০ জন ছাত্র নিয়ে পঠনপাঠন চালু হয়। ইতিমধ্যে এখানে এগ্রোনমিস্ট, হর্টিকালচার, প্যাথলজি, সয়েল অ্যান্ড ওয়াটার কনজারভেশন. অ্যানিম্যাল সায়েন্স, এগ্রো একনমিক্স এবং ফিসারি সায়েন্সের পিএইচডি শিক্ষকেরা রয়েছেন। ফলে পঠনপাঠন চালুর ক্ষেত্রে সহায়ক হলেও পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ এগোয়নি বলে অভিযোগ।
গত চার বছর ধরে কৃষি কলেজ চালু করা নিয়ে তৃণমূলের অন্দরে বিস্তর জলঘোলা হয় বলে অভিযোগ। প্রথমে বালুরঘাটের মাঝিয়ান কৃষি গবেষণা কেন্দ্রে পরিকাঠামোগত সুবিধা দেখে গত ২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার পর পরই ক্যাম্পাসটি চালু করা হবে বলে গৌতম দেব এবং স্থানীয় বিধায়ক তথা মন্ত্রী শঙ্কর চক্রবর্তী ঘোষণা করে যান। সেসময় সরকার থেকে ৪ কোটি ২৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল। এরপরেই তপন ব্লকের চণ্ডীপুর পঞ্চায়েত অফিসের হলঘরে অস্থায়ীভাবে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই ক্যাম্পাসের উদ্বোধন করে তড়িঘড়ি পঠনপাঠন চালু হয়ে যায়। কিন্তু কৃষি ক্যাম্পাস চালুর কোনও পরিকাঠামোগত বন্দোবস্তই তপনে ছিল না বলে অভিযোগ ওঠে। তড়িঘড়ি করে তপন চণ্ডীপুর পঞ্চায়েত অফিসের হলঘরে শ্রেণিকক্ষ ও অন্য দুটি ঘরে ল্যাবরেটরি খুলে ক্যাম্পাসটি চালু করা নিয়ে তৃণমূলের অন্দরে তুমুল বিতর্ক দেখা দেয়। প্রশাসনের তরফে সমীক্ষা করে পতিরামেই ক্যাম্পাস চালুর আদর্শ জায়গা বলে রাজ্যের কাছে রিপোর্ট পাঠানো হয়েছিল।
বালুরঘাটের পতিরামের ওই আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্রটি তপন বিধানসভা কেন্দ্রের অধীন। সেখানে ওই ক্যাম্পাস চালুর জন্য ১২৯ একর সরকারি জমি থেকে পাকা বাড়ি এবং ১০ জন শিক্ষক থাকা সত্ত্বেও নতুন করে তপনে ওই ক্যাম্পাস গড়তে সরকারের প্রচুর টাকা খরচ হবে বলে সরকারি তরফে মুখ্যমন্ত্রীকে জানানো হয়। অন্য দিকে তপনে ওই ক্যাম্পাস গড়ার প্রয়োজনীয় ১২৩ একর জমির মধ্যে মাত্র ২০ একর জমি জোগাড় করা সম্ভব হয়েছিলে। এরপরই পতিরামের মাঝিয়ানে ক্যাম্পাসটি চালুর প্রক্রিয়া শুরু হয়। তবে পরিকাঠামো তৈরির কাজ শেষ করা যায়নি। নতুন মন্ত্রী রবিবাবু বলেন, ‘‘উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের টাকায় ওই কলেজটি পূর্ণাঙ্গ রূপ পেতে চলেছে।’’
এ দিন রায়গঞ্জে প্রশাসনিক বৈঠকে মন্ত্রী জানান, আনারস ও ভুট্টা এই এলাকাতে অধিক মাত্রায় উৎপাদিত হয়। সেই দিকে লক্ষ্য রেখে যাতে প্রক্রিয়াকরণ শিল্প করা সম্ভব হয় তার দিকেই পদক্ষেপ করা হচ্ছে। তার আগে চোপড়ার বিধায়ক হামিদূল রহমানকে নিয়ে চোপড়ার হাসকারি সেতু ঘুরে দেখেন মন্ত্রী। রায়গঞ্জের কুলিক পক্ষিনিবাসকে ঘিরে পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তোলার কথাও এ দিন জানান তিনি। সেইসঙ্গে, দ্রুত রায়গঞ্জ-বারসই রাস্তার কাজ শুরু করা ও জাতীয় সড়কের বিকল্প বেঙ্গল টু বেঙ্গল রাস্তা সম্প্রসারণ এবং মেরামতের কাজও শুরু করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।