শূন্য: ব্লাডব্যাঙ্ক। নিজস্ব চিত্র
নার্সিংহোমে ভর্তি প্রসূতি সুমিত্রা বর্মণের জন্য চিকিৎসক জরুরি পরিস্থিতিতে সোমবার রক্ত আনতে বলেছেন। অথচ ব্লাড ব্যাঙ্কে গিয়ে শুনতে হয় রক্ত নেই। যেই বিভাগের রক্ত দরকার সেই বিভাগের রক্তদাতা দিতে পারলে তবেই মিলবে। তাঁর আত্মীয় মাথুর বর্মণ বলেন, ‘‘রক্ত দানের কার্ড নিয়ে ঘুরছি। তাও সারা দিন বসে থেকে ও-পজিটিভ রক্ত পাইনি। আমাদের কাছে যে রক্তদাতা আছেন তাঁর এবি পজিটিভ রক্ত।’’ অার এক রোগীর পরিবারের সদস্য সুভাষচন্দ্র সরকার দুই ইউনিট এবি পজিটিভ রক্তের জন্য ঘুরছিলেন। তাঁদের রক্তদাতার ও পজিটিভি রক্ত। শেষে মঙ্গলবার দুই রোগীর পরিবার রক্ত বিনিময় করে সমস্যা মেটান।
অভিযোগ, রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজের ব্লাড ব্যাঙ্কের এই পরিস্থিতি নিয়ে কর্তৃপক্ষের হেলদোল নেই। বুধবার দুপুরে দেখা যায় ব্লাড ব্যাঙ্কের ‘ডিসপ্লে বোর্ড’ বন্ধ করা। হইচই করা হলে তা চালু করা হয়। তখন দেখা যায় সেখানে এ, বি, এবি, ও পজিটিভ বিভাগের কোনও রক্তই নেই। বি এবং ও নেগেটিভ বিভাগের রক্ত মাত্র এক এবং ৪ ইউনিট রয়েছে। নেগেটিভ বিভাগের আর রক্ত নেই। জানা যায়, রক্তদান শিবিরের জন্য স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোকে সে ভাবে অনুরোধ করা হয়নি। মঙ্গলবার রায়গঞ্জের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সদস্য রূপনারায়ণ বৈদ্যের আত্মীয় পম্পা বৈদ্য হাসপাতালে ভর্তি হন। ব্লাড ব্যাঙ্কে গিয়ে রূপনরায়ণ পরিস্থিতি জানতে পারেন। এর পরেই এ দিন দু’টি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সদস্যরা উদ্যোগী হয়ে বিভিন্ন জায়গা থেকে রক্তদাতাদের এনে ২৫ ইউনিট রক্ত দেওয়ার ব্যবস্থা করেন।
হাসপাতাল সুপার সুরজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এ দিন ২৫ ইউনিটের মতো রক্তের ব্যাবস্থা হয় বলে জেনেছি।’’ হাসপাতাল সূত্রেই জানা গিয়েছে, প্রতিদিন অন্তত ৭০ ইউনিট রক্ত লাগে ব্লাড ব্যাঙ্ক থেকে সরবরাহ করতে। তাই ২৫-৩০ ইউনিট রক্ত দিয়ে পরিস্থিতি সামলানো শক্ত বলেই কর্তৃপক্ষের একাংশ জানান। জেলায় বেসরকারি ব্লাড ব্যাঙ্ক নেই। ইসলামপুর মহকুমা ব্লাড ব্যাঙ্ক থাকলেও রায়গঞ্জ মেডিক্যালের ব্লাড ব্যাঙ্কের উপরেই মূলত ভরসা করতে হয়। রক্তদাতা জোগার করতে কালো বাজারিও চলছে বলে অভিযোগ।
রায়গঞ্জ মেডিক্যালের ব্লাড ব্যাঙ্কের দায়িত্বে থাকা আধিকারিক অতনুকুমার মান্না জানান, বড় রক্তদান শিবির না হওয়ায় সমস্যা লেগেই থাকে। তিনি বলেন, ‘‘আগামী দু’দিন রক্তদান শিবির আছে। তাতে সঙ্কট কিছুটা কমবে বলে আশাবাদী।’’