রেলের মদতে রেলেরই জমিতে দখলের অভিযোগ ছিল। শুক্রবার সকালে সেই দখল সরিয়ে দিল রেল।
এ দিন কার্শিয়াঙের রেল কলোনি থেকে অবৈধ দখল উচ্ছেদ করেছে উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেল। লাইনের একেবারে পাশে চলে যাওয়া বেশ কিছু কাঠের বাড়ি-টিনের ঘর ভেঙে সরানো হয়েছে। রেলেরই আধিকারিক এবং কর্মীদের প্রভাবশালী অংশের মদতে কলোনিতে দখলদার এতদিন প্রশ্রয় পেয়েছে বলে স্বীকার করে নিয়েছেন রেলকর্তারা। অবৈধ দখলদারির চাপে পড়ে টয়ট্রেন চলাচল ক্রমশ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে চলেছে বলে সম্প্রতি রেলকে রিপোর্ট দিয়েছে ইউনেস্কোর সমীক্ষাকারী একটি দল। তার ভিত্তিতেই প্রশাসনকে দ্রুত দখল উচ্ছেদের আর্জি জানানো হয়। তবে রেলের নিজের কলোনিতেই কর্মীদের এবং তাঁদের পরিবারের একাংশের বিরুদ্ধে দখলের অভিযোগ ওঠে। সেই অস্বস্তি কাটাতেই এ দিন অভিযান বলে মনে করা হচ্ছে।
উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলের সিনিয়র এরিয়া ম্যানেজার তথা নিউ জলপাইগুড়ির স্টেশন ডিরেক্টর পার্থসারথি শীল বলেন, ‘‘আজ না হোক কাল দখল তুলতেই হতো। তবে রেলের পক্ষে অবমাননাকর এমন কিছু বরদাস্ত করা হবে না। টয় ট্রেন চলাচল রেলের কাছেও অত্যন্ত স্পর্শকাতর, তাই এর সুষ্ঠু চলাচলে যত কড়া পদক্ষেপ সম্ভব তাই হবে।’’
হেরিটেজ টয় ট্রেনের পরিকাঠামো নিয়ে সমীক্ষা চালাচ্ছে ইউনেস্কো। দু’বছর ধরে চলা সমীক্ষার বিভিন্ন ধাপে-ধাপে রেলকে নানা সুপারিশও করছে তারা। সেগুলির মধ্যে অন্যতম লাইনের দু’পাশে দখলদারির সমস্যা। দখলদারির সমস্যায় ভুগছে ব্রডগেজ লাইনের ট্রেন চলাচলও। সেই একই সমস্যায় জর্জরিত ছোট লাইনের ট্রেনও। শুধু পাহাড়ে নয় সমতলেও দখলদারির সমস্যা রয়েছে টয় ট্রেন চলাচলে। শিলিগুড়ির বাগরাকোট থেকে সুকনা-রংটন সর্বত্র ক্রমেই দখলদারির সমস্যা বাড়ছে। রেলের তরফে দাবি করা হয়েছে, সমতলের থেকেও সমস্যা বেশি পাহাড়ে। কার্শিয়াঙের পাঙ্খাবাড়ি রোড থেকে শুরু করে দার্জিলিং পর্যন্ত ট্রেন লাইনের দু’পাশে গর্ত খুঁড়ে একের পর এক নির্মাণ হয়েছে। তার জেরে মাটি অনেকটাই ঝুরঝুরে হয়ে পড়েছে। লাইনে ট্রেনের ওজনের ভারসাম্য বজায় রাখতেও সমস্যা হচ্ছে বলে দাবি। সম্প্রতি বেশ কয়েকবার টয় ট্রেনের কামরা অথবা ইঞ্জিন লাইনচ্যুত হয়েছে। লাইনের নীচে মাটি সরে যাওয়ার কারণে নাকি রেকের যান্ত্রিক ক্রুটিতে সে গুলি ঘটেছে, তা খতিয়ে দেখছে রেল।