তিস্তা ছাপানোর আশঙ্কা বাড়াচ্ছে সিকিমে বৃষ্টি

গত সোমবারই উত্তর সিকিমে ঘুরতে গিয়ে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় ৬০টি পর্যটক বোঝাই গাড়ি আটকে পড়ে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৯ জুন ২০১৯ ০৩:২১
Share:

বৃষ্টিভেজা: শিলিগুড়ির সকাল। মঙ্গলবার। —নিজস্ব চিত্র

গত ৪৮ ঘণ্টা ধরে সিকিমের আবহাওয়ার পরিবর্তিত পরিস্থিতির জেরে পাহাড় থেকে সমতল বিভিন্ন এলাকায় চূড়ান্ত সতর্কতা জারি হয়েছে। বিশেষ করে গত সোমবার সিকিমের চুংথাং জলাধার এলাকায় মেঘ ভেঙে বৃষ্টির জেরে উপরের অংশ থেকে নীচ পর্যন্ত তিস্তা নদীতে জল বেড়েছে। তাতে নদী লাগোয়া এলাকায় বন্যার আশঙ্কায় বাসিন্দাদের সতর্ক করে রাখা হয়েছে। ৬০০ কিউসেক জল তিস্তা-৩ জলবিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে ছাড়ায় নদীর নিম্ন অববাহিকায় জল আরও বেড়েছে। মঙ্গলবারও সিকিমের বিভিন্ন প্রান্তে জোর বৃষ্টি হওয়ায় লাচুং, লাচেন-র দিকে পর্যটকদের যাতায়াতে বিধিনিষেধ জারি করেছে সিকিম প্রশাসন। তাতে সিকিমের বিভিন্ন প্রান্তে পাহাড়ে বহু পর্যটক থাকলেও তাঁদের আপ গুরুদোংমার লেক বা ইয়ুমথাং এলাকার যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। আবার কবে পর্যটকদের পারমিট দেওয়া হবে, তা স্থির হয়নি।

Advertisement

গত সোমবারই উত্তর সিকিমে ঘুরতে গিয়ে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় ৬০টি পর্যটক বোঝাই গাড়ি আটকে পড়ে। ধীরে ধীরে তাঁদের লাচেন থেকে উদ্ধার করে গ্যাংটকে আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তবে তিনটি এলাকায় ধস থাকায় পর্যটকদের রাত অবধি গ্যাংটকে আনা যায়নি। আবার তিস্তায় ডিকচু এলাকা থেকে প্রচুর কাদামাটি নীচে নামতে থাকায় সিংটাম, রংপো এলাকায় সতর্কতা জারি রাখা হয়েছে।

কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবারের মেঘ ভাঙা বৃষ্টির সঙ্গে সঙ্গে সিকিম জুড়ে ভারী বৃষ্টি শুরু হয়েছে। আজ, বুধবার পশ্চিম সিকিম ছাড়াও উত্তর, পূর্ব এবং দক্ষিণে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস হয়েছে। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের আধিকারিক গোপীনাথ রাহা জানান, আগামী ২৪ ঘণ্টার পর থেকে পরিস্থিতি বদলাতে পারে। পশ্চিম সিকিম ছাড়া বাকি তিন জেলায় সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

Advertisement

সিকিম পাহাড়ের প্রভাব পড়েছে এ রাজ্যের পাহাড়-সমতলেও। গত কয়েক দিনের ৩৮-৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াম তাপমাত্রা নেমে এসেছে অনেকটাই নীচে। শিলিগুড়ির তাপমাত্রা এ দিন ছিল ৩২ ডিগ্রির মধ্যে, দার্জিলিঙের তাপমাত্রা ২০ ডিগ্রি এবং কালিম্পঙের ২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মতো। দার্জিলিং এবং শিলিগুড়িতে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি হচ্ছে। এর ফলে শুধু ভয়ঙ্কর তিস্তাকে নিয়ে নয়, রাস্তার ধস নামা নিয়ে দুশ্চিন্তায় প্রশাসন।

সিকিম প্রশাসন সূত্রে বক্তব্য, সেখানে বর্ষা ঢুকে গিয়েছে। এখন বৃষ্টিতে পাহাড়ে মাটি, নুড়ি পাথর আলগা হতেই বিভিন্ন এলাকায় ধস নামবে। তাই ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক বিশেষ নজরদারি করা হচ্ছে। বর্ডার রোড অর্গানাইজেশন ছাড়াও পুলিশ, দুর্যোগ মোকাবিলা দফতরের অফিসারদের সর্তক করে রাখা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন