এ বার পুরবোর্ড গড়তে কংগ্রেসকে অনুরোধ রঞ্জনের

কংগ্রেসের পরিষদীয় দলনেতা, বোরো চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করতে চাওয়ায় সংখ্যালঘু শিলিগুড়ি বাম পুরবোর্ডের অস্বস্তি আরও বাড়ল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০১৭ ০২:৩৭
Share:

রঞ্জন সরকার

কংগ্রেসের পরিষদীয় দলনেতা, বোরো চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করতে চাওয়ায় সংখ্যালঘু শিলিগুড়ি বাম পুরবোর্ডের অস্বস্তি আরও বাড়ল। কারণ এর চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যেই শিলিগুড়িতে পুরবোর্ড গড়তে চেয়ে প্রকাশ্যে কংগ্রেস কাউন্সিলরদের অনুরোধ করলেন তৃণমূলের বিরোধী দলনেতা রঞ্জন সরকার।

Advertisement

মেয়র অশোক ভট্টাচার্যের ইস্তফা চেয়ে গত সপ্তাহ থেকে বিভিন্ন বোরোর সামনে বিক্ষোভ অবস্থান চালাচ্ছে তৃণমূল। মঙ্গলবার তিন নম্বর বোরোর সামনে আন্দোলন কর্মসূচি ছিল তাদের। সোমবার এই তিন নম্বর বোরোর চেয়ারম্যান তথা কংগ্রেসের পরিষদীয় দলনেতা সুজয় ঘটক মেয়রের অফিসে পদত্যাগ পত্র জমা দেন। সেই পদত্যাগ পত্র গৃহীত হয়নি বলে মেয়র অশোক ভট্টাচার্য জানিয়েছেন।

মঙ্গলবারই তৃণমূলের বিরোধী দলনেতা রঞ্জন সরকার সুজয়বাবুদের অতীতের ভুল সংশোধন করে তৃণমূলকে সমর্থনের অনুরোধ করেছেন। যা নিয়ে নতুন করে জল্পনা শুরু হয়েছে শহরের রাজনৈতিক মহলে। এ দিকে এ দিন রাতেই পদাতিক এক্সপ্রেসে কলকাতায় রওনা দিয়েছেন সুজয়বাবু। তিনি প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির সদস্য না হলেও আজ বুধবার প্রদেশ কংগ্রেসের বৈঠকে ডেকে পাঠানো হয়েছে সুজয়বাবুকে। দল সূত্রের খবর, শিলিগুড়ির পরিস্থিতির জেরেই সুজয়বাবুকে ডেকে পাঠানো হয়েছে।

Advertisement

গত বছরের ২৫ অগস্ট ফরওয়ার্ড ব্লকের কাউন্সিলর দূর্গা সিংহ তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পরেই পুরসভায় বোর্ড গঠনের ম্যাজিক সংখ্যা ২৪ থেকে বামেদের আসন কমে হয় ২৩। এরপর সেপ্টেম্বর মাসে ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের নির্দল কাউন্সিলর অরবিন্দ ঘোষের মৃত্যুতে ম্যাজিক সংখ্যা থেকে বামেরা আরও দূরে সরে।

পুরসভায় সংখ্যালঘু হয়ে পড়ার পর থেকেই তৃণমূলের তরফে বোর্ড গঠনের জন্য দাবি উঠতে থাকে। দলের জেলা সভাপতি তথা পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব একাধিক সভা সমাবেশে পুরবোর্ড দখলের হুমকি দেন। কখনও দাবি করেন, ‘‘দ্রুত শিলিগুড়িবাসীর মুক্তি হবে’ কখনও বা ঘোষণা করেন, ‘পুজোর পরেই বাম বোর্ডের বিসর্জন হবে।’ কিন্তু এক বাম সদস্যের দলবদল ছাড়া আর কোনও উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন দেখেনি শিলিগুড়ি। পরে ‘হুমকি’ ছেড়ে ইস্তফার দাবিতে আন্দোলন শুরু করে তৃণমূল। এবার বোর্ড গঠন করতে চেয়ে অনুরোধও করল তৃণমূল নেতারা।

এ দিন অবশ্য তৃণমূল রাজনৈতিক আক্রমণও করেছে সুজয়বাবুকে। বিরোধী দলনেতা রঞ্জনবাবু বলেন, ‘‘এক সময়ে বামেদের সমর্থন নিয়ে সুজয়বাবু বোরো চেয়ারম্যান হয়েছিলেন। এর আগেও পুরসভায় বাম এবং কংগ্রেসের নাটক শহরবাসী দেখেছে। এতে শহরের উন্নয়নই ব্যাহত হয়।’’ তারপরেই রঞ্জনবাবুর মন্তব্য ‘‘আমাদের অনুরোধ সুজয়বাবুরা অতীতের ভুল সংশোধন করে উন্নয়নের স্বার্থে তৃণমূলকে সমর্থন করুন।’’ সুজয়বাবুর পাল্টা দাবি, ‘‘বামেরা সংখ্যালঘু বোর্ড চালানোর জন্য তৃণমূলের ওয়ার্ডে ঢালাও বরাদ্দ করছে। সবই প্রকাশ্যে চলে এসেছে।’’

রঞ্জনবাবুর অনুরোধ প্রসঙ্গে সুজয়বাবু বলেন, ‘‘সমর্থন চেয়ে অনুরোধ করার অধিকার বিরোধী দলনেতার আছে বলে মনে করি না। সেই অনুরোধে সাড়া দেওয়ারও আমি কেউ নই। এ সব দলের সভাপতি ঠিক করেন।’’ কলকাতায় আজকের বৈঠকে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির সঙ্গে সুজয়বাবুর বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন