রাজনীতি নয়, ইনসাফ চান বাবা

ক্ষোভের আঁচ ছড়িয়েছে এলাকাতেও। ‘ইনসাফ’ চাইছে গোটা এলাকা। সেই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ হতে পারে যে কোনও সময়, এমন আশঙ্কায় জনতানগরে ময়লা সাফাইয়ে পর্যন্ত যাচ্ছেন না পুরকর্মীরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০১:৪৬
Share:

ক্ষোভে জনতানগরে যাচ্ছেন না সাফাইকর্মীরা। জমছে জঞ্জাল। ছবি: স্বরূপ সরকার

গত এক সপ্তাহে কখনও এসেছেন পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব, তো কখনও শহরের মেয়র অশোক ভট্টাচার্য। এছাড়াও বড় মেজো ছোট নেতানেত্রীদের ভিড়তো লেগেই আছে। নিয়ম করে তাঁদের একই প্রশ্নের উত্তর দিতে হচ্ছে নানাভাবে। কিন্তু তাঁদের আট বছরের ছোট্ট শিশুটিকে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনার তদন্তে এখনও আলো দেখতে পাননি কোনও। তাই ধৈর্য্যের বাঁধ ভাঙছে বাবা-মায়ের। শুক্রবার হাত জোড় করে ‘ইনসাফ’ চাইলেন তাঁরা। বললেন, ‘‘মেয়েকে হারিয়েছি। এ দিকে কাজ বন্ধ করে ঘরে থাকায় টাকা পয়সা প্রায় শেষ। রোজ পুলিশ আসছে, নয়ত নেতানেত্রী। এক কথা জানতে চাইছেন। বাধ্য হয়ে বলতে হচ্ছে। পুলিশ মালিকের ছেলেকে ধরেছে। কিন্তু সব কিছু এখনও স্পষ্ট নয়। আমি ইনসাফ চাই।’’

Advertisement

ক্ষোভের আঁচ ছড়িয়েছে এলাকাতেও। ‘ইনসাফ’ চাইছে গোটা এলাকা। সেই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ হতে পারে যে কোনও সময়, এমন আশঙ্কায় জনতানগরে ময়লা সাফাইয়ে পর্যন্ত যাচ্ছেন না পুরকর্মীরা। এলাকায় জমছে ময়লার পাহাড়। জনতা নগর, বিদ্যাচক্র কলোনি থেকে সূর্যসেন পার্কের বাসিন্দা রীতা সাহা, তপতি সাহা’রা বলেন, ‘‘আমরা মুখ্যমন্ত্রীর কাছেও বিষয়টি জানাতে চাই। উনি তো শিলিগুড়ি আসছেন। আগামী সোমবার দলবেঁধে স্টেডিয়ামে দিকে যাওয়া যায় কি না তা ভাবা হচ্ছে।’’

গত ২৫ জানুয়ারি গভীর রাতে জনতানগরে যে বাড়িতে ওই শিশুর পরিবার ভাড়া থাকত তার ছাদে মোবাইল টাওয়ারের নিচ থেকে আট বছরের শিশুটির দেহ উদ্ধার হয়। শুক্রবার দুপুরে পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দলের দুই সদস্য ফের জনতানগরের বাড়িতে গিয়ে শিশুর বাবা ও মা’র সঙ্গে কথা বলেন। রোজই বিভিন্ন সংগঠনের তরফে মিছিল, মিটিং, স্মারকলিপি প্রদান চলছে। এ দিন শিশুটির বাড়িতে গিয়ে মা বাবার সঙ্গে দেখা করেন বিজেপি নেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়। তিনি পরিবারটির সঙ্গে কথা বলার পর কেন্দ্রীয় সরকারকে রিপোর্ট পাঠান। ঘটনার সিবিআই তদন্তের দাবি করেন।

Advertisement

শিশুটির কাকা ও দাদু বলেন, ‘‘মোমবাতি জ্বলছে। পোস্টার পড়ছে। প্রতিবাদ মিছিল হচ্ছে। কিন্তু ন্যায় বিচার হবে কী? আমাদের খালি ওটাই চাই। রাজনীতি চাই না।’’ শিশুটির বাবা বলেন, ‘‘রোজ পরিবারে ৩০০/৪০০ টাকা খরচ। ভ্যান চালিয়েই খেতে হবে। আর ভাল লাগছে না। পুলিশ অফিসারদের রোজ ঘুরিয়ে ফিরিয়ে একই কথা জানতে চাইছেন। ইনসাফ কবে করবেন বলছেন না।’’

শিশুকে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনায় ওই বাড়ির মালিকের ছোট ছেলে সুরজিৎ সরকারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রের খবর, অভিযুক্ত পরিবারের চার সদস্যকে এ দিনও সকাল থেকে দফায় দফায় জেরা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে তদন্তকারী সমস্ত অফিসারদের নিয়ে বৈঠক করে দ্রুত তদন্ত শেষ করার নির্দেশ দেন ডিসি (পূর্ব) গৌরব লাল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন